পাওনা টাকা আদায় করাই দুষ্কর-টাকা নিয়ে দেনাদার লাপাত্তা! « বিডিনিউজ৯৯৯ডটকম

পাওনা টাকা আদায় করাই দুষ্কর-টাকা নিয়ে দেনাদার লাপাত্তা!

মোঃ হাসানুজ্জামান বিশেষ প্রতিনিধি।
আপডেটঃ ৫ জুন, ২০২৩ | ১২:০৬
মোঃ হাসানুজ্জামান বিশেষ প্রতিনিধি।
আপডেটঃ ৫ জুন, ২০২৩ | ১২:০৬
Link Copied!
পাওনা টাকা আদায় করাই দুষ্কর-টাকা নিয়ে দেনাদার লাপাত্তা! -- বিডিনিউজ৯৯৯ডটকম

ঢাকা শহরে প্রায়শই দেখা যাচ্ছে দেনাদার পক্ষ কিছুদিন পর লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে। একেকটি ঘটনা একেক রকম। তবে ঘটনার পরিসমাপ্তির চিত্র সবগুলোই একই রকম। এটা যেন টাকা ধার দেয়া, ব্যবসায়ে দেয়া বা বাড়ি ভাড়া বাকি রেখে কাউকে সাহায্য করা মানেই খাল কেটে কুমির ডেকে আনার মতো।

বিশেষত রাজধানীর মিরপুর ১১, ব্লক বি, রোড ১, ২৩ নম্বর বাসায় এমনই ঘটনা ঘটেছে। উক্ত বাড়িটির মালিক মিসেস ফাতেমা হাশেম স্বপ্না।

তিনি ঢাকা উত্তর সিটির ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক এর স্ত্রী। স্বামী – সংসার নিয়ে তিনি মিরপুর ১০ এ থাকেন।

বিজ্ঞাপন

ফাতেমা হাশেম মিরপুর ১১ এর উক্ত বাড়িটির ৪র্থ তলায় মমতাজ আক্তার (৪৫) ও মাকসুদুর রহমান তালুকদার দম্পতিকে ফ্ল্যাট ভাড়া দেন।

তারা সেখানে দীর্ঘদিন ভাড়া থাকে। কিন্তু একপর্যায়ে উক্ত দম্পতির নিকট বাড়ি ভাড়া বাবদ ১,৫০,০০০ টাকা বকেয়া হয়ে যায়।

মিস ফাতেমা হাশেম, মমতাজ বেগমের নিকট বাড়ি ভাড়া চাইতে গেলে তারা অশালীন আচরণ শুরু করে।

বিজ্ঞাপন

ফাতেমা হাশেমের স্বামী যেহেতু একজন স্থানীয় জন প্রতিনিধি।

তাই মানুষ যেনো বিষয়টাকে খারাপভাবে না নেয়, সেজন্য ফাতেমা হাশেম উক্ত বাড়িটির অন্যান্য ভাড়াটিয়াদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করেন।

তখন মমতাজ বেগমের কাছে সবাই গিয়ে বিষয়টি সুন্দরভাবে সমাধানের জন্য পরামর্শ দেয়।

কিন্তু মমতাজ বেগম ও তার স্বামী বকেয়া বাড়ি ভাড়ার কোনো অর্থ প্রদান করেনি।

এর কিছুদিন পর ০৫/০৫/২০২৩ ইং তারিখে ফ্ল্যাট বাসায় তালা মেরে মমতাজ বেগম ও তার স্বামী মাকসুদুর পুরো পরিবারসহ তাদের গ্রামের বাড়ি বরগুনা চলে যায়। তাদের সাথে কোনোভাবেই যোগাযোগ করা আর সম্ভব হয়নি।

এদিকে ফাতেমা হাশেম বকেয়া বাড়ি ভাড়া পাননি এবং নতুন ভাড়াটিয়া উঠাবেন সেটাও পারছেন না।

মমতাজ বেগম ফিরে না আসলে ফাতেমা হাশেম আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ভেবে স্থানীয় পল্লবী থানায় যোগাযোগ করেন।

পাশাপাশি মমতাজ বেগমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। অবশেষে ফাতেমা হাশেম ৩০/০৫/২০২৩ ইং তারিখে পল্লবী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি ( জিডি) করেন। জিডি নং ২৬৪৮।

এর পরে মমতাজ বেগমের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হলে তাকে তার ফ্ল্যাট বাসার মালামাল সরিয়ে নিতে বলা হলে তারা খারাপ ব্যবহার ও হুমকি দিতে থাকে।

পরবর্তীতে স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণের পরামর্শে গত ০২/০৬/২০২৩ ইং তারিখে বেলা ১১.৩০ এর সময় ফাতেমা হাশেম বিডিনিউজ ৯৯৯ কে ফোন করে।

গণমাধ্যম ও স্থানীয় জনগণের উপস্থিতিতে উক্ত ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে বাসার সকল মালামাল বের করে বাসার নিচে রাখা হয়। এরপর উক্ত ফ্ল্যাটে নতুন ভাড়াটিয়া উঠানো হয়।

এমন ঘটনা ঢাকা শহরে নতুন নয়। বিশেষত মিরপুর অঞ্চলে হরহামেশাই এমন ঘটনা ঘটেই চলেছে।

কিছুদিন আগেও মিরপুর ১১, সি ব্লক, ১১ নং রোডের একজন ব্যবসায়ী হঠাৎ করে গা ঢাকা দিয়েছেন।

অনেকেই বলছেন ওই ব্যবসায়ী প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন।

তারও কিছুদিন আগে সেখানে চাঁদপুর টেলিকম নামের এক মোবাইল ব্যাংকিক এজেন্ট ১ কোটি টাকার বেশি পুঁজি নিয়ে দেশের বাইরে চলে গিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন যায়গায় ঘটছে এমন ঘটনা।

সমাজে এমন ঘটনা প্রায়শই ঘটার কারণ জানতে চাইলে কিছু সমাজবিজ্ঞানী ও গবেষক বলেন, ” সমাজে বর্তমানে কিছু মানুষের আয় নিম্নসীমায় নেমে এসেছে।

তারা ব্যবসায় লোকসান ঠেকাতে অনেক সম এমন অনৈতিক ও প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে।

তাছাড়া অনেকে দেশের টালমাটাল অবস্থারও সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে। এগুলো বন্ধে সার্বিক পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয় পড়েছে। “

বিষয়ঃ: