
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আজ বুধবার বৈঠকে বসবেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে জানা গেছে, তার চলমান যুক্তরাষ্ট্র সফরের অংশ হিসেবেই এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বুধবার (১৮ জুন) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জিও নিউজ।
প্রতিবেদন মতে, পাকিস্তান সময় রাত ১০টায় হোয়াইট হাউসের কেবিনেট রুমে দুই নেতার মধ্যাহ্নভোজ-ভিত্তিক এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে ট্রাম্পের দৈনিক কর্মসূচিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থানকালে প্রবাসী পাকিস্তানিদের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন ফিল্ড মার্শাল মুনির। সে সময় তিনি দেশের অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবাসীদের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
পাকিস্তানের আইএসপিআর-এর ভাষ্য অনুযায়ী, রেমিট্যান্স, বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের মাধ্যমে প্রবাসীরা পাকিস্তানের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন।
পাকিস্তান সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল মুনিরের এই সফর এমন এক সময় ঘটছে, যখন ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় সংঘটিত হামলার জেরে শুরু হওয়া ভারত-পাকিস্তান সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার জন্য প্রমাণ ছাড়াই ইসলামাবাদকে দায়ী করে নয়াদিল্লি। এরপর দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে টানা ৮৭ ঘণ্টার সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে, যাতে উভয় পক্ষ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে একাধিক হামলা চালায়। এ ঘটনায় পাকিস্তানে ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক ও ১১৩ জন সেনাসদস্য শহিদ হন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী ‘অপারেশন বুনয়ানুম-মারসুস’ চালিয়ে ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান— যার মধ্যে তিনটি রাফায়েল— ভূপাতিত করে। এই পাল্টা প্রতিক্রিয়ার পর ১০ মে মার্কিন মধ্যস্থতায় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে।
শুধু যুদ্ধবিরতি নয়, দীর্ঘদিনের কাশ্মীর সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্যও ট্রাম্প মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন।
যুদ্ধবিরতির পর ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লি দুপক্ষই আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু করেছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারির নেতৃত্বে ৯ সদস্যের সংসদীয় প্রতিনিধি দল একাধিক দেশে সফর করছেন। তাদের লক্ষ্য, সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘাত বিষয়ে পাকিস্তানের অবস্থান তুলে ধরা এবং নয়াদিল্লির প্রচার-প্রচারণার জবাব দেওয়া।
এদিকে, এই সফর এমন এক সময় হচ্ছে যখন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ চলছে। ইসরাইলের তেহরানে বিস্ময়কর হামলার পর ইরান পাল্টা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে।