নেপালে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ১৭০ জনে পৌঁছেছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন আরও বহু মানুষ।
এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের কারণে দেশটির স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট।
গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ১৭০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে এবং আরও ৪২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে শঙ্কা। চলমান বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা এবং ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
নেপাল পুলিশ জানিয়েছে, দুর্যোগে আরও ১০১ জন আহত হয়েছেন এবং আরও ৩ হাজার ৬৬১ জনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে।
কাঠমান্ডু পোস্ট বলছে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস বিভাগ আবহাওয়া ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং দুর্যোগের ঝুঁকির বিষয়ে নেপালের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আগে থেকেই সতর্ক করেছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে এরপরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঠেকানো যায়নি।
আবহাওয়া বিভাগের তথ্য কর্মকর্তা বিভূতি পোখারেল কাঠমান্ডু পোস্টকে বলেছেন, আমরা জনসাধারণ এবং এজেন্সিগুলোকে উদ্বেগজনক ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছি এবং পরিবর্তনশীল আবহাওয়া ব্যবস্থার বিষয়ে সময়মত আপডেট দিয়েছি। তবে মনে হচ্ছে, আমাদের বার্তা সেসব সঠিক জায়গায় পৌঁছায়নি।
চলমান বন্যায় কাঠমান্ডু উপত্যকা এবং অন্যান্য বিভিন্ন জেলার অনেক অংশ তলিয়ে গেছে। এছাড়া ভূমিধস এবং বন্যায় বাড়িঘর, যানবাহন এবং সেতুর পাশাপাশি মহাসড়কও ধ্বংস হয়ে গেছে।
রবিবার কাঠমান্ডু শহরের বাইরে তিনটি মহাসড়ক ভূমিধসের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। ভূমিধসে চাপা পড়া কাঠমান্ডুগামী দুটি বাসের ১৪ যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেন উদ্ধারকারীরা। রাজধানী থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে ওই স্থানে অন্যান্য যানের আরও ২৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে শনিবার কাঠমান্ডুর দক্ষিণ অংশ প্লাবিত হয়।
তবে তিন দিনের মৌসুমি বৃষ্টি শেষে গতাকাল (রবিবার) থেকে আবহাওয়া পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।