২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্তমান বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনি তার নিজ এলাকা পাথরঘাটায় প্রবেশের সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলার শিকার হন। এতে তিনিসহ বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।
সে সময় অন্তত ১০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নিয়ে যায় অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল।
এ ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শান্তনু কুমার মণ্ডলের আদালতে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন নুরুল ইসলাম মনির বড় ভাইয়ের ছেলে সোলায়মান।
এতে বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন, সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন এবং বর্তমান ও সাবেক নয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০৫ জনে নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়াও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. মুবিন।
এর আগে একই ঘটনার জেরে পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৯৯ জনকে আসামি করে মামলা মিথ্যা মামলা করেছিলেন কাকচিড়ার ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দীন পল্টু। এতে ২৫০-৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছিল।
মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফরাত আহসান ইপু জানান, বাদী সোলায়মানের আপন চাচা নুরুল ইসলাম মনি বরগুনা-২ আসনের তিনবারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য। বর্তমানে তিনি বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি ঢাকায় অবস্থান করে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করেন এবং রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময় পাথরঘাটাসহ বরগুনার সব মানুষের জনপ্রিয় প্রতিনিধি হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন পূর্ব থেকেই খুন করে দুনিয়া থেকে শেষ করার পরিকল্পনা করছিল।
২০২২ সালের ০৪ সেপ্টেম্বর বাদীর চাচা তার বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করার জন্য ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। সে সময় বাদীসহ কয়েকশ মানুষ তাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য পাথরঘাটার মঠবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় এলে তৎকালীন এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বাদীর চাচা নুরুল ইসলাম মনিসহ শতাধিক বিএনপির নেতা-কর্মীরা আহত হন।
ঘটনার সময় গুরুতর আহত পাথরঘাটা পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল-মামুন কাজী জানান, রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে আওয়ামী লীগ এলাকায় সমাজবিরোধী, রাষ্ট্রদ্রোহী, নারী-নির্যাতন ও অবৈধভাবে ভূমি দখল করে নিরীহ মানুষকে নিঃস্ব করেছে। উপজেলায় তারা সব সময় ত্রাস সৃষ্টি করে রাখতো। আমার ওপর অন্তত পাঁচবার হামলা করে রক্তাক্ত করেছে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোহার পাত বসানো রয়েছে। তারাই আমাদের ওপর হামলা করে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর জেল খাটিয়েছে। এখন বিলম্বে হলেও স্বৈরাচারী সরকারের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ হয়েছে।
পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. মুবিন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে ১০৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০০-৩০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মামলার এফআইআর নেওয়ার জন্য পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদালত থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।