১৯৮৪ সালে আমি জীবনের প্রথম এই স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসি। বংকিরা ফুটবল একাদশ বনাম কামারকুন্ডু ফুটবল একাদশের মধ্যে সেই খেলা খুবই মনোমগ্ধকর ছিল। খেলায় আমরা জিতে বাড়ি ফিরি।
স্টেডিয়ামের সামনে তখন ছিল নিক্সন কাপড়ের দোকান। আমার ছোট চাচা মরহুম আফসার উদ্দীন আহম্মেদ আমাদের সবার জন্য এই নিক্সন মার্কেট থেকেই যাবতীয় মানান মানান কাপড় কিনে নিয়ে যেতেন। বলা যায় আমি সেই কাপড় পরেই বড় হয়েছি। এখনও সেই ঘ্রান নাকে আসে।
১৯৮৫ ঝিনাইদহে এসে কাঞ্চননগর মডেল হাই স্কুলে ভর্তি হই। এই স্টেডিয়ামে কতশত খেলা দেখেছি ও নিজে করেছি। ফুটবল ছাড়াও বংকিরা ভলিবল টিম তখন জেলার মধ্যে বেশ নামকরা। তখন এতো গ্যালারি না থাকলেও সাদামাটা মাঠটি প্রানবন্ত ছিল। মাঠে আসা খেলার মানুষগুলো অনেক অনেক ভালো ছিল।
তাদের মন ছিল মাটির মতো। আর এখন ? শুনছি ৭ বছর মাঠে বল গড়ায় না। নেই খেলার কোন প্রতিযোগিতা। ফুটবল, ভলিবল এমনকি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট দীর্ঘদিন বন্ধ। আ’লীগ নেতাদের পদ দখলের কামড়াকামড়িতে ঝিনাইদহ ক্রিড়া সংস্থার নির্বাচন ঝুলে আছে।
মামলা জটিলতায় এখন এডহক কমিটি দিয়ে চলছে। পেশাদার খেলোয়াড়দের যাতায়াত না থাকায় জেলার একমাত্র বৃহৎ খেলার মাঠ ঝিনাইদহ বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামটি খাঁ খাঁ করছে। স্টেডিয়াম বা মাঠের সংস্কার নেই। মাঠের গ্যালারি, ড্রেসিং রুম আর ক্রিড়া সংস্থার অবকাঠামোগুলো রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে চাকচিক্য হারাচ্ছে।
স্টেডিয়ামের প্রবেশ পথে এখন হাটু পানি। সেখানে জলকেলি করে হাঁসের দল। এ অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হোক। প্রানবন্ত ফিরে পাক ঝিনাইদহ বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়াম।