চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬.৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেপ্টেম্বরে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩.৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২০ মিলিয়ন ডলার বেশি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় ছিল ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার।
বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন তার কার্যালয়ে মাসিক রপ্তানি আয় পর্যালোচনা সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। এনবিআর রিয়েল টাইম শিপমেন্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইপিবি এ তথ্য প্রস্তুত করেছে।
ইপিবির প্রকাশিত রপ্তানির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যদিও এই সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য, হোমটেক্সটাইল ও হিমায়িত খাদ্যের রপ্তানি কমেছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মোট পণ্য রপ্তানির প্রায় ৮২ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। এই সময়ে ৯২৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮৮২ কোটি ডলার। অর্থাৎ এবার তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২৭৮ কোটি ডলারের। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি বেড়েছে ৬ শতাংশ।
আলোচ্য তিন মাসে ২৮ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। শুধু সেপ্টেম্বরে ৮ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানি আবার ঘুরে একটু দাঁড়িয়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বরে ২৬ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি।
আলোচ্য সময়ে হোমটেক্সটাইল পণ্যের রপ্তানি কমেছে। গত তিন মাসে ১৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের হোমটেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে। এই খাতের রপ্তানি কমেছে ১ দশমিক ২১ শতাংশ। এ ছাড়া পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি কমেছে ১৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ১৮ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে রপ্তানির তথ্য সংগ্রহ করে ইপিবি। তবে কিছু কারণে সেখানে একই রপ্তানির তথ্য একাধিকবার হিসাব করা হয়েছিল। ইপিবি, এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের আলোকে অসংগতিগুলো ঠিক করা হয়েছে। তারপর এনবিআর থেকে নেওয়া সঠিক তথ্যের আলোকে ইপিবি সংশোধিত রপ্তানি তথ্য প্রকাশ করেছে।
তিনি আরও বলেন, এখন থেকে তথ্যের সঠিকতা যাচাই করে প্রতি মাসে নিয়মিতভাবে রপ্তানি তথ্য প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে রপ্তানি তথ্য প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে।