বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অপর নাম ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান। সেই আন্দোলনে শত শত নিরীহ মানুষ শহীদ হন, যাদের মধ্যে রমজান মিয়া ওরফে জীবন অন্যতম। নিহত ছাত্রদলকর্মী শহীদ জীবনের আত্নার মাগফেরাত কামনায় বাঙলা কলেজ ছাত্রদল নেতা ইব্রাহিম খলিলের নেতৃত্বে একটি মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা যায়, শহীদ জীবন বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের সাথে একনিষ্ঠভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতেন। একটা প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন চাকরি করেও ছাত্রদলের কোনো কর্মসূচি বাদ দিতেন না তিনি। বাঙলা কলেজ ছাত্রদল নেতা ইব্রাহিম খলিল ও রবিউলের সাথে বেশি দেখা যেতো তাকে।
তাই কাছের কর্মী পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়ায় শহীদ জীবনের আত্নার শান্তি কামনায় আজ শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) মিরপুরের বাউনিয়াবাধে বাঙলা কলেজ ছাত্রদল নেতা ইব্রাহিমের উদ্যোগে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
জীবনের রাজনৈতিক সহকর্মী, বন্ধুরা জানান, ‘জীবন আমাদেরকে বলতো- আমি যেহেতু মিরপুরে থাকি, কাউছার ভাই, ইব্রাহিম ভায়ের সাথে আত্নার সম্পর্ক। তাই ভাইদের মাধ্যমে ছাত্রদলের সাথে আমার আন্তরিক সখ্যতা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বাঙলা কলেজ ছাত্রদল যেহেতু নিয়মিত প্রোগ্রাম করে। তাই বাঙলা কলেজের সাথে কর্মসূচি পালন করতে আমি স্বাচ্ছন্দবোধ করি। কারণ দেশ ও দলের জন্য কর্মসূচি, আন্দোলনে অংশগ্রহণই মুখ্য। কোন ইউনিট থেকে যাচ্ছি, সেটা বড় বিষয় না।’
সরকারি বাঙলা কলেজের প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম হল সভাপতি কে এম ইব্রাহিম খলিল বলেন, “জীবন এদেশের যুব সমাজের জন্য একটি আদর্শ। সে দেশ ও দলের ভালোবাসার টানে নিয়মিত আমাদের সাথে প্রোগ্রাম করতো। বিশেষ করে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগ মূহুর্তে এবং অন্যান্য কঠিন সময়েও জীবন তার জীবনের ঝুঁকি নিয়েই দায়িত্ব পালন করতো। যার অসংখ্য ছবি ও ভিডিও আমাদেরকে এখনো কাঁদায়। তার অবদান আমরা কখনোই ভুলতে পারবো না। একটা আদর্শ দলের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কিভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়, জীবন তার জলন্ত প্রমাণ। আমরা মহান আল্লাহর কাছে শহীদ জীবনের আত্নার মাগফেরাত কামনা করছি।”
উক্ত দোয়া মাহফিলে ছাত্রদল নেতা ইব্রাহিম খলিল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মোঃ কাউছার, মোঃ রবিউল ইসলাম, মাসুম বিল্লাহ, মোঃ হাসানুজ্জামান, যুগ্ম সম্পাদক জোবায়ের আল মাহমুদ সহ অসংখ্য নেতাকর্মী।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৫ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্থানে আওয়ামী লীগ পার্টি অফিসের সামনে আওয়ামী দোসরদের লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত হয় রমজান মিয়া ওরফে জীবন। ও-ই দিনই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবশেষে বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আর এভাবেই একটি জলন্ত জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।