সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে তেয়াশিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল করিম রেজা বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে ভূমি কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে অভিযোগের বিষয়টি প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতিক মন্ডল।
আল জাদিদ হোসেন বাধঁন নামের ওই ভুক্তভোগীর অভিযোগ সুত্র থেকে জানাযায়, পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া এনায়েতপুর গোপালপুর মৌজার একটি জায়গার নামজারি করার জন্য ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার কাছে যাই।
তিনি আমার কাছে ওই জায়গার নামজারির জন্য ১৬ হাজার টাকা দাবী করেন। যেখানে সরকারী ভাবে নামজারি ফি নির্ধারন করা হয়েছে এগারোশত টাকা। অতিরিক্ত টাকা দেব কেন এমন প্রশ্ন করলে রেজাউল করিম আমাকে বলেন এই টাকা না দিলে আমার জায়গার নামজারি হবে না। পরে আমি বাধ্য হয়েই তার কথায় রাজি হয়ে ভেঙে ভেঙে ১৬ হাজার টাকা দেই।
ঘুষের টাকা নেওয়ার দেড়বছর পেরিয়ে গেলেও তিনি আমার জায়গার নামজারি করে দেননি। এনিয়ে কথা বলতে গেলে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে আমাকে মারধর করার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। পরে আমি বাধ্য হয়ে বেলকুচি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) প্রতীক মন্ডল বরাবর ঘুষ নিয়ে নামজারি না করে দেওয়ায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।
অভিযোগ দায়েরের প্রায় এক মাস হলেও উপ-সহকারী রেজাউলের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি।
দৌলতপুর ইউনিয়নের তেয়াশিয়া গ্রামের আরেক ভুক্তভোগী আল আমিন এই প্রতিবেদককে জানান ‘জমির নামজারিসহ ভূমি সংক্রান্ত কোনো কাজ করতে গেলেই রেজাউল করিম রেজাকে ঘুস দিতে হয়। ২০২২ সালে পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া ২৪ শতক জায়গার বাবত (৩৭৫০০) সাইত্রিশ হাজার পাচ শত টাকা নিয়ে ১০ টাকার রশিদ কেটে দিলো, বাকি টাকার রশিদ চাইলে তিনি বলেন ওটা দেওয়া হয় না। এখন ২০২৪ সালে ঔ জায়গার খাজনা দিতে গেলে ভুমি উপ-সহকারী রেজাউল বলেন ওই জায়গা আপনার নেই।
পরে জানতে পারি ২৪শতক জায়গা আমার চাচাতো ভাইদের নামে নায়েব রেজাউল নামজারী করে দিয়েছে। এমন কি দেখা যায় আট বছর আগে মৃত ব্যক্তি নামেও নামজারি করে দিয়ছেন।
এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) প্রতীক মন্ডল বরাবর লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে আমার অভিযোগ পত্রটি তিনি গ্রহন না করে আমাকে বলেন আপনি নামজারির উপর মিস কেস করেন। তিনি তখন রেজাউলকে বলে ঠিক করে দেওয়ার আশ্বাসও দেন।
এসময় আল-আমীন আরও বলেন এই ভাবে ঘুষ নিয়ে কত জনের সর্বনাশ করেছে রেজাউল তার কোন হিসেব নেই। আমি সরকারের কাছে নায়েব রেজাউল এর সুষ্ঠ বিচার দাবী জানাচ্ছি।
তেয়াশিয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল করিম রেজার কাছে ঘুষ দূর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথা বলে দাবী করেন।
বেলকুচি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) প্রতিক মন্ডলের জানান, আমরা তেয়াশিয়া ইউনিয়ন সহকারী ভূমি রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।