আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশে সংঘটিত গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড, গুমসহ সব অপরাধের বিচার হবে।
তিনি বলেন, ‘এসব গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো বিচারের এখতিয়ার শুধু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এবং এ সংক্রান্ত অভিযোগগুলো তদন্তের দায়িত্ব ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার’। জুলাই–আগস্ট হত্যাকাণ্ড ঘিরে দেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলোর নথি ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কাছে পাঠাতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা ও শারমিন সুমির সঙ্গে বৈঠক শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন চিফ প্রসিকিউটর।
তিনি বলেন, ‘স্বল্পতম সময়ের মাধ্যমে আমরা আদালতের আদেশ চাইবো, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টগুলো থেকে জুডিসিয়াল নথি এবং থানাগুলোতে সংরক্ষিত নথিগুলোর ট্রাইব্যুনালের তদন্ত-সংস্থার কাছে পাঠাতে। এসব নথি পর্যালোচনার মাধ্যমে কোনো মামলায় যদি ভুল লোককে আসামি করা হয়, তাকে আমরা বাদ দেবো এবং প্রকৃত অর্থে যারা দোষী তাদের পক্ষভুক্ত করে যথাযথ মামলা দায়ের করা হবে।’
যারা এখনো মামলা করেননি তারা অবশ্যই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত-সংস্থার ধানমন্ডি ১১/এ অফিস অথবা চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এসে সরাসরি কিংবা ডাকযোগে অভিযোগ করতে পারবেন বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, ‘মামলা সংক্রান্ত সব তথ্য-প্রমাণ, অডিও-ভিডিও, পত্রিকা, মেডিকেল রিপোর্ট, নথি সবকিছুসহ মামলা দায়ের করতে হবে, পরবর্তী সব দায়িত্ব প্রসিকিউশনের এবং এসব মামলা পরিচালনার জন্য কোনো ধরনের আইনজীবী নিয়োগ, টাকা ব্যয় কিংবা হাজিরা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না’।
শহীদ এবং ভিকটিম পরিবারের সবাইকে দ্রুততম সময়ে আসল অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সব প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ জমা সাপেক্ষে ট্রাইব্যুনাল বরাবর অভিযোগ জানাতে আহ্বান জানান তিনি। মামলার সাক্ষী কিংবা ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ চাঁদাবাজি, হুমকি কিংবা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকলে তাকে আইনানুযায়ী নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত সংস্থার দেওয়া তথ্যের আলোকে ট্রাইব্যুনালে করা মামলার আসামি যারা অনেকেই অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে আছেন তাদের নাম আমরা জানতে পেরেছি। খুব শিগগির তাদের আদালতে উপস্থাপন করে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হবে।
বৈঠক আরও উপস্থিত ছিলেন ১৯ জুলাই আন্দোলনে শহীদ তাহির জামান প্রিয়’র মা শামসি আরা জামান এবং শহীদ সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তি, ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ ও গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম।