ঝিনাইদহের সদর উপজেলা ডাকবাংলা বাজার সহ বিভিন্ন উপজেলায় নামে-বেনামে চেম্বার খুলে ডাক্তার এবং অভিজ্ঞ ডাক্তার সাইনবোর্ড লাগিয়ে, প্যাড-ভিজিটিং কার্ডে ডাক্তার নাম ব্যাবহার করছেন যারা তাদের অনেকেই ডাক্তারই নন।
সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঝিনাইদহের ডাকবাংলা বাজারে ‘নুর জাহান মেমোরিয়াল মেডিক্যাল সেন্টারে’ প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত যিনি রোগী দেখছেন এবং তিনি যে প্রেসক্রিপশন বা ব্যবস্থাপত্র লিখেছেন, সেখানে তিনার পরিচয় লেখা আছে ডাক্তার মোঃ রবিউল ইসলাম। নামের নিচে ডিগ্রি লেখা,ডিএমএফ (ঢাকা) সিএম এফ (আল্ট্রা), তার নিচে লেখা,বাত ব্যাথা, মেডিসিন, মা ও শিশু রোগের চিকিৎসক।
ডাক্তার না হয়েও ডাক্তার পরিচয় দিয়ে দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে জনগণের সাথে প্রতারণা করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন এই মোঃ রবিউল ইমলাম, তিনি মুলত হরিনাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার।
বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল অ্যাক্ট ২০ডিসেম্বর-২০১০-এ প্রকাশিত গেজেট এর ধারা ২২এর (১) ও ২৯এর (১) এর আওতায় এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি বাদে অন্য যারা বিভিন্ন ভাবে চিকিৎসাসেবার সাথে যুক্ত আছেন তিনারা নামের আগে ডাক্তার পদবী ও নামের পরে ডিগ্রি ব্যবহার করলে তা অপরাধ ও প্রতারণা বলে গণ্য হবে।
তবে,বিকল্প ধারার চিকিৎসা পদ্ধতির পেশাধারীরা নামের পূর্বে: ইন্টিগ্রেটেড ফিজিশিয়ান, কমপ্লিমেন্টারি ফিজিশিয়ান, ইন্টিগ্রেটেড মেডিসিন প্র্যাকটিশনার, কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন প্র্যাকটিশনার- পদবী ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু তারা কোনো ভাবেই নামের আগে ডাক্তার পদবি লিখতে পারেন না ও নামের পরে ডিগ্রি লিখতে পারবেন না। যদি কেউ আইন অমান্য করে তা করেন তবে সেটা অবশ্যই অপরাধ বা প্রতারণা বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ ভূয়া ডাক্তার হিসাবে গণ্য হবে।
প্রকৃত ডাক্তার না হয়েও নিজের নামের সাথে ডাক্তার সংযুক্ত করে কিভাবে চিকিৎসা দিচ্ছেন, এই বিষয়ে কথা হয় হরিনাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মো:রবিউল ইসলামের সাথে,তিনি সাংবাদিকদের বলেন আমরা নামের আগের ডাক্তার লিখতে পারবো,আমার মতো অনেকেই আছেন যিনারা ডাক্তার পরিচয়ে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া আমি সারা দিন চাকরি করে বিকাল থেকে ওখানে রুগী দেখি, খুব বেশি রুগী আমান হয় না। আর যদি সম্ভব হয় তাহলে নিইজটা করার দরকার নাই।
এবিষয়ে ঝিনাইদহের বিভিন্ন তৃনমুল পর্যায়ের সাধারণ ভুক্তভোগী জনগণের সাথে কথা বলে জানাযায়, তারা চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন বিভিন্ন লোকাল ক্লিনিক, চেম্বার বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেখানে বড়ো করে ডাক্তার লেখা থাকে, প্যাডে ডাক্তার লেখা থাকে, ভিজিটিং কার্ডে ডাক্তার লেখা থাকে, তাহলে আমরা কিভাবে বুঝবো কারা ডাক্তার আর কারা ছদ্মবেশী।
সাধারণ জনগণের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার দ্বায়িত্ব জেলা সিভিল সার্জন,উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের হাতে তারাই যদি সব জেনে শুনে অদৃশ্য কোনো নিয়ন্ত্রনে নিরব ভুমিকায় থাকেন তবে এই ধরনের ভূয়া ডাক্তারের ছড়াছড়ি হয়ে যাবে। সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবে সাধারণ জনগণ।
রবিউলের ডাক্তার পরিচয়ে চিকিৎসা বানিজ্যের বিষয়ে কথা হয় ঝিনাইদহ সদর উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাক্তার মিথিলা ইসলামের সাথে,তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেক রবিউলের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন এবং তিনি বিষয়টি খোজ নিয়ে ব্যাবস্থা নেবার আশ্বাস দেন।