আগামী ১৫ নভেম্বর ইউরোপিয়ান নেশন্স লিগে ফ্রান্সের বিপক্ষে মাঠে নামার কথা রয়েছে ইসরায়েলের। তবে ম্যাচটি বাতিলের দাবিতে ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের (এফএফএফ) সামনে বিক্ষোভ করেছে ফিলিস্তিনের সমর্থকরা। এবার ফিলিস্তিনিদের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছে পিএসজির সমর্থকরা। যা একদমই ভালোভাবে নেননি ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুহনো হোতাইয়ু।
গত বুধবার (৬ নভেম্বর) রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে ঘরের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সেসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের মুখোমুখি হয়েছিল পিএসজি। ম্যাচটিতে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে ২-১ ব্যবধানে হেরে যায় পিএসজি।
ম্যাচ হেরে গেলেও সমর্থকদের কারণে এখন আলোচনায় পিএসজি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচটির কিক-অফের আগে পিএসজির সমর্থকরা দৈত্যাকৃতির একটি পতাকা নিয়ে গ্যালারিতে হাজির হন। যে ফ্ল্যাগে ফিলিস্তিনের সমর্থনে লেখা ছিল ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’।
উয়েফা নেশন্স লিগে ইসরাইলের বিপক্ষে ফ্রান্সের ম্যাচের আটদিন আগে এই ঘটনা ঘটালেন ফরাসি লিগের চ্যাম্পিয়ন দলটির সমর্থকরা। সেই পতাকার নিচের দিকে লেখা ছিল, ‘(খেলার) মাঠে যুদ্ধ হোক, কিন্তু বিশ্বে শান্তি বিরাজ করুক।’
এদিন ম্যাচ চলাকালীন তারা আরও একটি বার্তা লেখা ব্যানার মেলে ধরেন। যেখানে লেখা ছিল, গাজার একটি শিশুর জীবন কি অন্য শিশুর চেয়ে কম মূল্যবান?
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে ক্লাবটি জানিয়েছে, ‘প্যারিস সেন্ট জার্মেই আবারও ব্যক্ত করছে যে, পার্ক দ্য প্রিন্সেস ফুটবলের প্রতি আবেগপূর্ণ (নীতিমালার ব্যাপারে) আছে… এবং অবশ্যই থাকবে। যোগাযোগের স্থান এবং স্পষ্টভাবে স্টেডিয়ামে এমন বার্তার বিরোধিতা করে যা কোনো ধরনের রাজনৈতিক প্রকৃতি ধারণ করে।
ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরাইলের আগ্রাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার বিশ্বের সকল মুক্তিকামী মানুষ। ফুটবলের মাঠে রাজনৈতিক কার্যকলাপ ফিফার নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হলেও ফিলিস্তিনের পক্ষে সমর্থন আটকানো যায়নি কখনোই।
গত বছর স্কটিশ ক্লাব সেল্টিকের সমর্থকরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেলা চলাকালীন ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে ১৭,৫০০ ইউরো জরিমানা গুনেছিল। এবার পিএসজির ক্ষেত্রে কি সিদ্ধান্ত নেয় ফিফা সেটাই দেখার বিষয়।
এ ছাড়াও বিষয়টি ভালোভাবে নেননি ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুহনো হোতাইয়ু। ফরাসি ক্লাবকে নিষেধাজ্ঞার প্রচ্ছন্ন হুমকিই যেন দিলেন তিনি। স্থানীয় এক রেডিওতে এই ঘটনাকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে ক্ষোভ উগড়ে দেন হোতাইয়ু।
ক্লাবটিকে নিষেধাজ্ঞার মতো কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে কি-না, প্রশ্নের উত্তরে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি তিনি। তার ভাষ্য, আমি কোনো কিছু উড়িয়ে দিচ্ছি না। পিএসজির কাছে আমি এর ব্যাখ্যা জানতে চাইব।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ছিটমহলটিতে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।