ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, আমরা তো আসছি মেহমান হয়ে, ঘরের মালিক তারা, যারা নির্বাচিত সরকার। আজ শনিবার দুপুরে খুলনায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক সমস্যা নিরসনে ওলামা-মাশায়েখদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আমরা একটা নির্বাচিত সরকারের জন্য গ্রাউন্ড তৈরি করছি। যারা আসবেন তাদের হাতে আমরা ক্ষমতা হস্তান্তর করব, বাকি সময়টুকু আমাদের। দেশে এত বিশাল জঞ্জাল, এত অনিয়ম, এই অল্প সময়ের মধ্যে তা দূর করা না গেলেও আমরা কাজ শুরু করেছি।
দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে কিছু দুর্বৃত্ত কিছু কায়েমী স্বার্থবাদী লোক এই সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য দুঃসাহসিক প্রয়াস চালায়। এই সম্প্রীতি যারা বিনষ্ট করতে চায়, তাদের প্রতিহত করার জন্য আমরা অত্যন্ত সজাগ আছি। কোনো দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি না থাকলে উন্নয়ন সম্ভব নয়।
দেশে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ মসজিদ আছে জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা জানান, ইমাম এবং খতিবদের জন্য একটা বেতন স্কেল ঘোষণা করার চিন্তাভাবনা করছেন তারা।
জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে মসজিদ কমিটিকে অনুরোধ করে ওই স্কেল অনুযায়ী বেতন ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। সব মসজিদ কমিটি না পারলেও অধিকাংশ মসজিদ পারবে।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা আজেবাজে বই ছেপে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গুদাম ভর্তি করেছিলেন। কোনো পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দিয়ে, ইন্টারভিউ না নিয়ে আগের মহাপরিচালক ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৩০০ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। তারা ইসলামিক ফাউন্ডেশনে আবার প্রাণ ফিরাতে চান। সরকার ৮০ কোটি টাকা দিয়ে বাইতুল মোকাররমকে দৃষ্টিনন্দন মসজিদে পরিণত করবে।
তিনি জানান, মডেল মসজিদগুলো নিয়ে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে, তার জন্য একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা অনিয়ম তদন্ত করছেন। তদন্ত করে যারা দোষী সাব্যস্ত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পানির জাহাজে হজে যাওয়ার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমরা পানির জাহাজে হজে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সেই জাহাজ নেই। টাকা নেই, জাহাজ কীভাবে থাকবে। এই জাহাজ আনতে ১ হাজার কোটি টাকা লাগবে। জাহাজ কোম্পানি বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটা প্রপোজাল রেডি আছে, আপনারা এটা রিলিজ করে দিলেই আমরা আনব। আগামী সোমবার আমার মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকে যাবে। তাদের সঙ্গে আলাপ করে যদি টাকাটা ছাড় করাতে পারি তাহলে এ বছর সমুদ্রপথে জাহাজে হজযাত্রীদের পাঠাতে চেষ্টা করব। যদি বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাড়া না করে তাহলে একটা পথ দেখিয়ে দিলাম, আগামী বছর যদি কেউ চেষ্টা করে তাদের জন্য পথ খুলে যাবে।
মতবিনিময় সভায় ওলামা মাশায়েখসহ ৩০০ ইমাম অংশগ্রহণ করেন।