আওয়ামী লীগ নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে বলে দাবি করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে। কে সংগঠিত করছে, কে দায়িত্ব নিয়েছে, কোথায়, কখন এবং কোন বাসায় তিনি আছেন সে তথ্য আমার কাছে আছে।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর মগবাজার এলডিপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
অলি আহমদ বলেন, স্বৈরাচারীরা বসে নেই। তাদের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তর পুলিশ এবং প্রশাসনে বসে আছে। এখনো স্বৈরাচারের দোসরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্ব অবস্থানে রয়েছে। আমি ড. ইউনূসকে বলবো আর কালবিলম্ব না করে স্বৈরাচারের দোসরদের চিহ্নিত করুন। তাদের বদলি কোনো সমাধান নয়। চাকরি থেকে বাদ দিতে হবে।
দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায়ের দোসরদের কাছেও কোটি-কোটি টাকা আছে। এটা শেখ হাসিনা নিজেও বলেছেন, তার পিয়নের কাছে ৪০০ কোটি টাকা রয়েছে।
এদিকে গতকাল জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একটি বৈঠক হয়। সেখানে অংশ না নিয়ে ফিরে যাওয়ার প্রসঙ্গে অলি বলেন, যে কারণেই হোক না কেনো আমরা সেখানে উপস্থিত থাকতে পারিনি। যার জন্য সরকারের একজন উপদেষ্টা দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, আগামীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না। সুতরাং এ নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
এলডিপির প্রেসিডেন্ট বলেন, অভিজ্ঞতার মূল্য দিতে হবে। লেখাপড়া, বই পড়ে আপনি গবেষণা করতে পারবেন। অভিজ্ঞ লোকদের বিভিন্ন জায়গায় বসাতে হবে। আমার অভিজ্ঞতা রয়েছে, আমি ছয়বার সংসদ সদস্য ও তিনবার সফল মন্ত্রী ছিলাম। সুতরাং রাষ্ট্রপরিচালনায় কে, কোথায় কীভাবে কাজ করছে, কে ভুল করছে, তা আমাদের পক্ষে নির্ণয় করা কঠিন কাজ নয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা মিটিংয়ে থাকি বা না থাকি। বাংলাদেশের বিষয়ে আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার-ভারতকে এটা বুঝতে হবে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা এখনও জীবিত আছি। বাংলাদেশে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ।
অলির দাবি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার শাসনকাল ছাড়া বাকি সময়টুকু ভারতের দালাল হিসেবে কাজ করছে বাকিরা। বর্তমানে কাউকে আমরা ভারতের দালাল হিসেবে কাজ করতে দেব না। আমার ভারতের বিপক্ষে না, কোনো দেশের বিরুদ্ধে না, ইসলাম ধর্মের অনুসারী, যারা আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তবে বেশি গুতাগুতি করলে ভালো হবে না।
ভারতীয় গণমাধ্যমে বিভিন্ন অপপ্রচার নিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কোনো হিন্দুদের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে না। এবার বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে যেভাবে দুর্গাপূজা হয়েছে, তা গত ৫০ বছরেও হয়নি। মুসলমানরা মন্দির পাহারা দিয়েছে, এটা বিরল ঘটনা। তাই ভারত সরকারের উচিত অনতিবিলম্বে এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
তিনি বলেন, ভারতের উচিত হবে বাংলাদেশে তাদের নতুন করে কোনো দালাল সৃষ্টি না করে দেশের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে তারা তাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, আমরা আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করবো। যার যেখানে সাহায্যের প্রয়োজন পড়বে, আমরা একে অপরকে সাহায্য করবে। তবে, ভারতের উচিত তাদের শত্রুতামূলক মনোভাব পরিহার করা।