রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশন রসাটম ১৯৫৯ সালের ৩ ডিসেম্বর তাদের প্রথম পারমাণবিক শক্তিচালিত আইসব্রেকার বহরের উদ্বোধন করে। লেনিন নামক আইসব্রেকারটি চালুর মাধ্যমে এই বহরের যাত্রা শুরু হয়। চলতি বছর আইসব্রেকার বহরটির ৬৫ বছর পূর্ণ হলো।
বরফ আবৃত উত্তর সমুদ্র পথে (নর্দার্ন সীরুট) চলাচল এবং পন্য পরিবহনের ক্ষেত্রে এটি ছিল যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রশাসনের মিডিয়া উইং প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে খবর জানিয়েছে।
পরমাণু শক্তিচালিত আইসব্রেকার লেনিনে ছিল দু’টি পারমাণবিক চুল্লী যাদের মোট তাপোৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৩১৮ মেগাওয়াট, যা ৩২ মেগাওয়াট হর্স পাওয়ার জোগান দিতে সক্ষম। চুল্লীগুলো কোনও রিফুয়েলিং ছাড়াই চার বছর একটানা কার্যক্রম পরিচালনে সক্ষম ছিল। জাহাজটি তার ত্রিশ বছর আয়ুষ্কালে ৬৫৪,০০০ নটিক্যাল মাইল অতিক্রম করে এবং আর্কটিক অঞ্চলে ৩,৭৪১টি জাহাজকে চলাচলে সহায়তা করে। বর্তমানে এই আইসব্রেকারটি মুরমান্সক সমুদ্রবন্দরের জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। প্রতি বছর ৬০ হাজারের অধিক দর্শনার্থী এই জাহাজটি পরিদর্শনে আসেন।
আইসব্রেকার লেনিনের পর, রাশিয়া অব্যহতভাবে তাদের পারমাণবিক আইসব্রেকার প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটাতে থাকে। বর্তমানে রসাটমের আইসব্রেকার বহরে ৭টি পরমাণু শক্তিচালিত আইসব্রেকার রয়েছে, যার মধ্যে তিনটি ২২২২০ প্রকল্পের অধীনে নির্মিতঃ আর্কটিকা, সাইবেরিয়া, এবং উরাল।
এই জাহাজগুলোর প্রতিটিতে স্থাপিত হয়েছে দু’টি করে আরআইটিএম-২০০ চুল্লী; এগুলোর মোট ক্ষমতা ৬০ মেগাওয়াট হর্স পাওয়ার, এবং তাপোৎপাদন ক্ষমতা ৩৫০ মেগাওয়াট। উন্নত ও উদ্ভাবনশীল ডিজাইনের কারণে এগুলো রিফুয়েলিং ছাড়াই সাত বছর একটানা সেবা দিতে সক্ষম। আইসব্রেকারগুলো ২.৯ মিটার পুরু বরফ কেটে অগ্রসর হবার ক্ষমতা রাখে। আইসব্রেকারগুলো বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা সম্ভব। ড্রাফট সমন্বয় করে গভীর সমূদ্রে এবং অগভীর মোহনায়ও এগুলো চলাচল করতে পারে।