বিদ্রোহীদের গেরিলা আক্রমণের মুখে কট্টর স্বৈরাচার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর সিরীয় ভূখণ্ডে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে বর্বর ইসরায়েল।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর এই ঘোষণার পরপরই ১৯৭৪ সালের পর প্রথমবারের মতো সীমান্ত অতিক্রম করে সিরিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর যুদ্ধ ট্যাংক।
ইসরায়েলি সংবাদপত্র মারিভ বলছে, সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী কিংবা বেসামরিক নাগরিকদের ইসরায়েলি ভূখণ্ডের কাছাকাছি আসা ঠেকানোর লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এর আগে, ইসরায়েলের প্রবাসবিষয়ক মন্ত্রী আমিচাই চিকলি বলেন, ইসরায়েল অবশ্যই ১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতি সীমারেখার ভিত্তিতে নতুন প্রতিরক্ষা সীমান্ত স্থাপন করবে। আর এই সীমান্ত রেখা হবে দখলকৃত গোলান মালভূমি থেকে হারমন পর্বত পর্যন্ত।
১৯৬৭ সালে সিরিয়ার গোলান মালভূমির বেশিরভাগ অংশ দখল করে ইসরায়েল। পরবর্তীতে ইসরায়েলি বাহিনী পুরো গোলান মালভূমির দখল নেয় ১৯৮১ সালে। আসাদ সরকারের পতনের পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি সেনাবাহিনীকে ইসরায়েল-অধিকৃত ও সিরিয়া-নিয়ন্ত্রিত গোলান মালভূমির মাঝে অবস্থিত জাতিসংঘের টহল দেওয়া বাফার জোন ‘‘দখল’’ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, সিরিয়ার সঙ্গে স্বাক্ষরিত ১৯৭৪ সালের চুক্তির ‘‘পতন হয়েছে’’। যে কারণে তিনি সামরিক বাফার জোন ও এর কাছাকাছি এলাকার কমান্ডিং অবস্থানগুলো দখল করতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘‘আমরা কোনও শত্রু শক্তিকে আমাদের সীমান্তে প্রতিষ্ঠিত হতে দেব না।’’
এদিকে, লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ পরিচালিত সংবাদমাধ্যম আল মানার বলেছে, রোববার সকালের দিকে দক্ষিণ সিরিয়ায় স্থল আক্রমণ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইহুদিবাদী গণমাধ্যম বলছে, ভোরে গোলান মালভূমি লাগোয়া সীমান্ত বেড়া অতিক্রম করে সিরিয়ায় ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলি সেনা ট্যাংক।
আসাদ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তনের মাঝে বিদ্রোহীরা যখন দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, ঠিক তখনই সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইসরায়েলি এই আগ্রাসনের ঘটনা ঘটেছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম সিরিয়ার দক্ষিণের কুনেইত্রা এলাকায় দখলদার বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সৈন্য জড়ো করা হয়েছে বলে খবর দিয়েছে।
সূত্র: আলজাজিরা, মেহের নিউজ।