ঝিনাইদহের বিভিন্ন পাড়ায় মহল্লায় গড়ে উঠেছে অভিজাত মিনি পতিতালয়। আবাধ, অবৈধ যৌনতা, মাদক কেনা বেচাসহ হানিট্রাপের স্বীকার হচ্ছে টার্গেট করা উচ্চবিত্তরা। শহরের অভিজাত বাসা বাড়ীতে পরিবার পরিচয়ে ভাড়া নিয়ে একাধিক নারীদের দিয়ে করানো হচ্ছে দেহ ব্যবসা। যে সকল স্পট গুলো মাদক কেনা বেচার অভয়ারণ্যে।
প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণে অনেকটা প্রকাশ্যই চলছে এই তাদের দৌরাত্ম। ঝিনাইদহের মর্ডান মোড়, মাস্টার পাড়া, ব্যাপারী পাড়া, আদর্শপাড়া, আরাপপুরে একাধিক স্পটে, টিভি সেন্টার সংলগ্ন, চাকলাপাড়া,উপশহর পড়াসহ শহরের বিভিন্ন মহল্লাতে চলছে তাদের এই অবৈধ মাদকের ও যৌনতার হটা।
অনুসন্ধানে যানা যায়, ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে একাধিক দালাল চক্র সক্রিয় ভাবে কাজ করছে। যারা মাঠ পর্যায়ে কাস্টমারদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে এবং সাথে করে স্পটে নিয়ে যায়। দালাল চক্রের হাত ধরে ছাড়া কোনো ভাবেই এদের অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যাবে না। প্রায় শতাধিক অভিযোগ রয়েছে শহরের বিভিন্ন সম্মানিত ও উচ্চবিত্ত বেক্তিদের হানিট্রাপের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই সিন্ডিকেট।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী জানান, আমি একজন ইউনিয়ন পরিষদের কর্মচারী। আমার পরিবার পরিজন রয়েছে। আমাকে বিভিন্ন মোহে আকৃষ্ট করে ফেল্লে আমিও তাদের ফাদে পা দিই। সেদিন ওই মেয়ের সাথে ঘরে ঢোকার দুই তিন মিনিটের মধ্যে একদল মানুষ এসে আমাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও করে পরবর্তীতে প্রায় দুই লক্ষ টাকা দিলে আমাকে ছেড়ে দেয়, কিন্তু এখানেই থেমে থাকে না। কিছুদিন পর পর টাকা চাইতে লাগলো, সব মিলিয়ে প্রায় দশ লক্ষ টাকা নিয়েছে আমার কাছ থেকে।
ঝিনাইদহের উচ্চবিত্ত নামকরা ব্যবসায়ীর ছেলে পরিচয় না প্রকাশের শর্তে জানান, আমি আমার একটা বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি একটা বাসা আছে যেখানে নিরাপদে বসে ইয়াবা সেবন করা যায়,তার সাথে সেখানে দুই দিন যাবার পরে, তৃতীয় দিনের দিন একটা মেয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়, সেও আমার সাথে ইয়াবা সেবন করে, তার পরেই আমরা দুই জন পাশের রুমে ঘনিষ্ঠ হয় আর ঠিক সেই মুহুর্তেই ডিবি পুলিশ পরিচয়ে একদল লোকজন আসে, ভিডিও করে, মারধর করে, তারা সব মিলিয়ে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা আমার বাবার কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। এদের সাথে তখনকার প্রশাসন জড়িত ছিলো।
একজন স্কুল মাস্টার জানান, আমাকে শেষ করে দিয়েছে। মানসম্মানের ভয়ে সারা জীবনের পুজি দিয়ে দিছি এখনো মাঝেমধ্যে টাকা চাই,বা বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে। শহরের মুন্সি মার্কেটের একজন কাপড়ের ব্যবসায়ীকে ফাদে ফেলে একাধিকবার ব্লাকমেইল করে নাস্তানাবুদ করে অবশেষে ফেক আইডি দিয়ে ভিডিও ভাইরাল করা হয়। এরকমই অসংখ্য ছোট বড়ো অভিযোগ পাওয়া যায় অনুসন্ধানের সময়। প্রতিটি পাড়া মহল্লার মাস্তান থেকে প্রশাসনের অনেকেই নিয়মিত মাসোহারা নিচ্ছেন, এমন কি ঝিনাইদহের একাধিক সাংবাদিক জড়িত থাকার বিষয়ে অনেক তথ্য প্রমান বের হয়ে আসে।
এমতাবস্থায়, ঝিনাইদহের সুশীল সমাজের মানুষেরা তাদের সন্তানদের নিয়ে রয়েছেন দুঃশ্চিন্তায়, মাদক আর যৌনতার মতো বিষয় যেখানে সহজলভ্য সেখানে সন্তান লালনপালন অসম্ভব হয়ে পড়ছে। নিষিদ্ধ সবকিছুর উপরেই ছেলেদের আকর্ষন থাকে। তাই ঝিনাইদহের সর্বসাধারণ জনগণের চাওয়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্মুল অভিযান পরিচালিত করা হোক। অন্ধকার অশ্লীল ও ভয়ংকর মাদকের অভয়ারণ্যে থেকে রক্ষা করা হোক ঝিনাইদহের আজ ও আগামীর প্রজন্মকে।