ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তারা আমাদের সাহায্য করেছে। সেই ভারত একজন গণহত্যাকারীকে, অর্থলোপাটকারীকে কোনো কাগজপত্র ছাড়াই আশ্রয় দেবে এটা আমরা প্রত্যাশা করি না। সময় থাকতে তাকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠান।’
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি। গণহত্যাকারী ও তার দোসরদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন।
মানববন্ধনে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘যারা এ দেশের কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের ১৮ থেকে ২০ লাখ কোটি টাকা লোপাট করেছে, যারা এ দেশের সাধারণ জনগণ, ছাত্রদের হত্যা করেছে- তারা ভারতে থাকতে পারে না। আমি ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানকে বিশেষভাবে বলবো সময় থাকতে তাকে ফেরত পাঠান।’
তিনি বলেন, ‘বাঙালি জাতি বীরের জাতি, এ জাতি যদি একবার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে কী হবে ৫ আগস্ট প্রমাণ হয়েছে। ভারত আমাদের বন্ধু এটা আমরা মনে করি। কিন্তু অন্যায়কারীকে যদি তারা আশ্রয় দেয় তাহলে তাকে ছিনিয়ে আনতে এ দেশবাসী একটুও পরোয়া করবে না। সেটা তাদের মনে রাখতে হবে।’
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে, আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন গণতন্ত্রের লড়াই এখনো শেষ হয়নি। গণতন্ত্রের লড়াই তখনই শেষ হবে যখন এ দেশের সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারবে। তারা তাদের অধিকার ফিরে পাবে। এটা অন্তর্বর্তী সরকার, এই সরকারের প্রতি বিরোধী দলগুলো, বিএনপির সমর্থন আছে। তাদের প্রধান কাজ একটি ভালো নির্বাচন দেওয়া। সেই নির্বাচন যদি দিতে না পারে তাহলে দেশবাসী অস্থির হয়ে যাবে। সেদিকে এই সরকার নজর দেবে এটা আমি মনে করি।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে সরকার সহায়তা করছে এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। এটা অত্যন্ত ভালো কাজ হয়েছে। আরও ভালো কাজ হবে যারা গত ১৬ বছর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন- তাদের পরিবারকে সহায়তা করলে। এটা দেশবাসী মনে করে।’
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ‘এ দেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতার জন্য ১৯৭১ সালে রক্ত দিয়েছে। সেই গণতন্ত্র আমরা বারবার হারিয়েছি। এখন একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে আমি এই সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও উপদেষ্টাদের আহ্বান জানাবো- বেশি সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না। দেশবাসীকে পরীক্ষায় ফেলা ঠিক হবে না। দেশবাসীর অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। গত ১৬ বছর তারা ভোট দিতে পারেনি। এখনো যদি ভোট দিতে না পারে তাহলে সেটা হবে দুঃখজনক। এটা ঠিক হবে না।’
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন। সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, জাতীয় পার্টি-জেপি মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।