রাজনীতিবিদ ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী (৮২) মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হাসপাতালটির জেনারেল ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন।
মতিয়া চৌধুরীর বোন মাহমুদা চৌধুরী বলেন, আজ ১২টার দিকে উনি চলে গেছেন। মাস দুয়েক আগে তিনি মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয় ওনার। এরপর সুস্থ হয়ে তিনি বাসায় গিয়েছিলেন। আজকে সকাল পর্যন্তও ভালো ছিলেন। হঠাৎ করে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, দুপুর ১২টার দিকে মারা যান মতিয়া চৌধুরী। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত হলে তাকে সকালে হাসপাতালে আনা হয়। এরপরই চিকিৎসকরা তার ইসিজি করে সেবা দিতে শুরু করেন। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।
শেরপুর-২ আসনের (নালিতাবাড়ী-নকলা) সাবেক সংসদ সদস্য মতিয়া চৌধুরীর জন্ম ১৯৪২ সালের ৩০ জুন। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। আর মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী।
মতিয়া চৌধুরী ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন।
ঢাকার ইডেন কলেজে পড়ার সময় রাজনীতিতে জড়ানো মতিয়া ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ সালে ‘অগ্নিকন্যা’ নামে পরিচিত মতিয়া পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন এবং এর কার্যকরী কমিটির সদস্য হন। ১৯৭০ ও ১৯৭১ এর মাঝামাঝি সময়ে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, প্রচারণা এবং আহতদের শুশ্রুষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন।
১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন মতিয়া চৌধুরী। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তিনি বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হন।
মতিয়া চৌধুরী ১৯৯৬ ও ২০০৯ এবং ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদে উপনেতা হয়েছিলেন তিনি। যদিও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে সংসদ সদস্য ও উপনেতার পদ হারান মতিয়া চৌধুরী।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।