বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করর্পোরেশন (বিআরটিসি) সরকারের একটি বৃহৎ জনসেবা মূলক প্রতিষ্ঠান। বিআরটিসির বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব মোঃ তাজুল ইসলামের হাত ধরে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লোকসানি প্রতিষ্ঠানের তকমা থেকে বের হয়ে লাভের মুখ দেখে প্রতিষ্ঠানটি। তাছাড়া নানামুখী অপবাদ ঘুচিয়ে যাত্রী সেবায় চমক দেখিয়ে যাত্রীদের সন্তুষ্টিও অর্জন করেছে বিআরটিসি। কিন্তু চোখে স্বার্থের কালো চশমা পরিহিত একটি গোষ্ঠীর নিকট বিআরটিসির এই ধারাবাহিক উন্নয়ন সহ্য হচ্ছে না মোটেও। তাই প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও নিজস্ব ভান্ডার সমৃদ্ধ করে ফায়দা হাসিল করতে রীতিমতো নাটকীয় মানববন্ধন সহ কথিত সংবাদ সম্মেলন শুরু করেছে গুটিকয়েক মহল।
এইতো কিছুদিন আগেই রাজধানীতে বিআরটিসির প্রধান কার্যালয়ের সামনে একটি নাটকীয় মানববন্ধনের অপচেষ্টা করে একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠী। অবশ্য পরবর্তীতে একজন দুষ্কৃতিকারী আটক হলে বেরিয়ে আসে কথিত মানববন্ধনের আসল রহস্য।
এবার সম্প্রতি মহাসড়কে বিআরটিসি বাস, ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, থ্রি হুইলারসহ সব ধরনের তিন চাকার যানবাহন বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাগেরহাট আন্তঃজেলা বাস-মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতি। এমনকি দাবি না মানলে ২২ অক্টোবর থেকে বাস চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারিও দেন নেতারা। যা নিয়ে নানা মহলে সৃষ্টি হয়েছে বহুমুখী বিতর্ক।
যেখানে বিআরটিসির উন্নয়ন, সুনাম দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। সেখানে বিআরটিসির বিরুদ্ধে কেনো এমন অভিযোগ দাঁড় করানোর চেষ্টা ? এগুলো কি শুধুই অভিযোগ, নাকি লুকিয়ে আছে গভীর কোনো ষড়যন্ত্র ?
এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি আমরা। রাজধানী সহ সারাদেশের চলমান বিআরটিসি সেবায় আওতাভুক্ত এলাকাগুলোতে জনগণের মতামত জানার চেষ্টা করি আমরা। কিছু গঠনমূলক পরামর্শের পাশাপাশি বিআরটিসি সেবায় সন্তুষ্ট যাত্রী সাধারণ। বরং কোম্পানি বা সিন্ডিকেট বাস মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই মানুষের।
মহাসড়কে বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের বিষয় বাস যাত্রীদের মতামত নিই আমরা। অধিকাংশ যাত্রী বলেন, “বিআরটিসি সরকারি মালিকানাধীন পরিবহন হওয়ায় একটা সময় বেশ ভোগান্তি ছিলো। কারণ তাদের সেবার মান ছিলো খুবই বাজে। কিন্তু কয়েকবছর যাবৎ বিআরটিসি অনেক ভালো সেবা দিচ্ছে। বরং প্রাইভেট কোম্পানির বাসগুলোতে ভোগান্তির শেষ নেই। তাই মহাসড়ক কেনো, কোনো সড়কেই বিআরটিসি বাস সেবা বন্ধ করা কোনো যৌক্তিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না।”
কোম্পানি মালিকানাধীন অনেক বাসের যাত্রীরা বলেন, “আমরা জনগণ শান্তির যাত্রা চাই। কিন্তু এসব কোম্পানি বাসগুলো অধিক লাভের আশায় সিন্ডিকেট করে রমরমা ব্যবসা করে যাচ্ছে। বিআরটিসি সেবার কারণে তাদের ব্যবসায়ে যাতে ভাটা না পরে। সেজন্যই ওরা এমন ফন্দি আঁটছে। বিআরটিসি বাস বন্ধ করতে পারলে দেখবেন ওরা আরও বেপরোয়া হয়ে যাবে।”
বিআরটিসির নজিরবিহীন উন্নয়ন সত্ত্বেও কেনো এমন ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত ? এ-বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিসির চেয়ারম্যান জনাব তাজুল ইসলাম বলেন, “আমরা জনগণের সেবক হিসেবে আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে যাচ্ছি। সরকারের একটি প্রতিষ্ঠানকে লোকসানের হাত থেকে বাঁচিয়ে জনগণের জন্য আরামদায়ক যাত্রার সুব্যবস্থা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। এটি আমাদের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো। আমার বিশ্বাস আমি পেরেছি, আমরা পেরেছি। সাধারণ যাত্রীগণ বিআরটিসি সেবায় সন্তুষ্ট হলেই আমাদের স্বার্থকতা। সেক্ষেত্রে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল যদি আমাদের বিরুদ্ধে কিছু করতে চাই, তার বিচার এদেশের সাধারণ মানুষের বিবেকের উপর ছেড়ে দিলাম। তবে এতোটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি- বিআরটিসিকে যেহেতু লস প্রজেক্ট থেকে লাভজনক প্রেজেক্টে রুপান্তর করতে পেরেছি। কোনো ষড়যন্ত্রই আমাদের চলমান উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।”