পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ষড়যন্ত্র মূলকভাবে অপসারণ চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করা হয়েছে। বুধবার সকাল ১১ টায় উপজেলা প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি করা হয়।
উপজেলার ৬ ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের আয়োজিত মানববন্ধন অনুষ্ঠানে অন্তত ২ হাজার নানা শ্রেনী পেশার মানুষ অংশ নেয়। এদিন অনুমোদিত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দ্রুত স্থাপনের দাবী জানান তারা। মানববন্ধন শেষে আইন ও বিচার বিভাগ মন্ত্রণালয়ের আইন উপদেষ্টা বরাবর ৭টি দাবী তুলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
জানা গেছে, ২০১২ সালে রাঙ্গাবালী উপজেলা হিসেবে ঘোষনা হওয়ার পরে পর্যায়ক্রমে সকল দাপ্তরিক অফিস স্থাপন হলেও কেবল ‘সিনিয়র সহকারী জজ আদালত’ স্থাপন হয়নি।
এ উপজেলার জমিজমার মামলা এবং ক্রিমিনাল মামলার জট খুলতে দৌড়াতে হতো পাশ্ববর্তী গলাচিপা উপজেলায়। এতে নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হতো রাঙ্গাবালীর মানুষদের। এটির সুরহার জন্য দীর্ঘদিন রাঙ্গাবালীবাসী দাবী তুললে ২০২৪ সালে জুন মাসে রাঙ্গাবালীতে ‘সিনিয়র সহকারী জজ আদালত’ স্থানান্তর করে মামলার কার্যক্রম শুরু করা হয়।
সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে প্রথম দিকে দেওয়ানী মামলার নথিপত্র এলেও অনুমোদিত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কার্যক্রম থমকে রয়েছে। ভোগান্তি লাঘবে রাঙ্গাবালীতে বিচারিক ব্যবস্থার সুরহা চায় উপজেলাবাসী।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মু. নিয়াজ আকন বলেন, রাঙ্গাবালী অবহেলিত উপজেলা। জেলা শহর হতে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এখানকার মানুষ রাষ্ট্রের সিংহভাগ সুবিধাবঞ্চিত। জেলা শহরসহ সারাদেশে যোগাযোগ করতে হলে আগুনমুখা এবং রাবনাবাদ নদী পারাপার হয়ে যেতে হয়। যাহা জীবন মৃত্যুর ঝুঁকিতে রাখতে হয়।
এ উপজেলাবাসীর নাগরিক অধিকার ও দুর্ভোগ বিবেচনায় অত্র উপজেলায় চৌকি আদালত (সিনিয়র সহকারী জজ আদালত) স্থাপন করা হয়। এতে সকলে উপকৃত হলেও কিছু ষড়যন্ত্রকারী এই এলাকার মানুষের নাগরিক অধিকার হরনকরনের জন্য চৌকি আদালত অপসারণ করার পায়তারা করতেছে আমরা এর তীব্র নিন্দা জানায় পাশাপাশি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর রেখে আহ্বান জানাই সকল অপচেষ্টা নতসাৎ করে বিচারিক কার্যক্রম তরান্বিত করা হোক।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আঃ রহমান ফরাজী বলেন, বিজ্ঞ আদালত স্থাপিত হওয়ার পর থেকে কিছু কুচক্রী মহল তাহাদের ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলে জন্য এ উপজেলার মানুষদের বিপদগামী করে স্থাপিত চৌকি আদালত জেলা শহরে স্থানান্তরের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এমনকি আদালত স্থাপন হওয়ার পর এযাবৎকালে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে কোন ধরনের তদারকি বা খোঁজখবর নেয়া হয়নি।
এছাড়াও রাঙ্গাবালীর চৌকি আদালতের এখতিয়ারধীন মোকদ্দমা সমূহ পূর্বের দায়িত্ব প্রাপ্ত গলাচিপা সহকারী জজ আদালতের আওতা হতে রাঙ্গাবালীর চৌকি আদালতে প্রেরণ করা হয়নি। কুচক্রী মহল উপজেলা হতে জেলা শহরে বিজ্ঞ আদালত স্থানান্তর করতে না পারে এ জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি করা হয়েছে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে আইন উপদেষ্টা বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান বলেন, স্মারকলিপি পেয়েছি। জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়েছে।