বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধী দলীয় হুইপ জয়নাল আবদীন ফারুক বলেছেন, শহিদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিমদের আত্মত্যাগে দ্বিতীয় স্বাধীনতা এসেছে। এই স্বাধীনতা ধরে রাখতে হলে এই সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই।
তিনি বলেছেন, বিএনপি দিনের ভোট রাতে চায় না, বিএনপি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন চায় না। বিএনপি ও তারেক রহমান চায়, আমার ভোট আমি দেবো।
শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মন্ডলীর সাবেক সদস্য ও ঝিনাইদহ-২ আসনের চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মসিউর রহমানের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা শহরের শিশু একাডেমি কমপ্লেক্স মিলনায়তনে বিকাল সাড়ে তিনটায় স্মরণ সভা শুরু হয়।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুল আলিমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোমিনুর রহমান, মসিউর রহমানের সহধর্মীনী মাহবুবা রহমান শিখা, ড্যাবের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মো. ইব্রাহীম রহমান বাবু প্রমুখ।
স্মরণ সভায় শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দমন করতে শেখ হাসিনা আয়নাঘর বানিয়েছিল। যেই ব্যক্তিটি বলত, শেখ হাসিনা পালায় না। কিন্তু আজ গণআন্দোলনের তোপের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। ১৯৭১ এ শেখ মুজিব যেভাবে ইয়াহিয়ার সাথে আঁতাত করে দেশ ছেড়ে পাকিস্তানে নিয়েছিল, সেই ভাবে শেখ হাসিনা ডলার ভর্তি ব্যাগ নিয়ে ভারতে পালিয়ে গিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে আওয়ামীলীগ লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছিল দাবি করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা জনগণের ভোটের ওপর বিশ্বাস করেনা। তারা দেশের কোটি কোটি ডলার বিদেশে পাচার করেছে। ব্যাংক লুট করেছে। শেখ পরিবারের সদস্যরা হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে চুরি করে কানাডায় বেগমপাড়া বানিয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার প্রেতাত্মারা ধ্বংস করে দিয়েছে।
অন্তর্বর্তকালীন সরকারকে সহযোগিতার জন্য সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মসিউর রহমানের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজপথের সহযোদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা মসিউর রহমানের আজ বড্ড প্রয়োজন ছিল। দেশ গড়ার কাজে, নতুন স্বাধীনতা পরবর্তি দেশের উন্নয়নে মসিউর রহমানের মতো দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের বিকল্প নেই। আমরা আজ তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। প্রফেসর ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন,বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই। পলাতক আওয়ামী লীগের নেতারা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ড. ইউনূসের এই সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।
সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী বিএনপি সরকার গঠন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, প্রফেসর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বতীকালীন সরকার একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেবে। সেই নির্বাচনে জননেতা তারেক রহমান দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন, ইনশাআল্লাহ।
স্মরণসভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনপির দুর্দিনের কাণ্ডারি দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশনায় বিগত ১৬ বছর হামলা-মামলা মাথায় নিয়ে আপনারা রাজপথে ছিলেন। আমার ওপর কয়েকবার হামলা হয়েছে। আমাকে প্রায় ৮ বছর কারাগারে রেখেছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকার। তাই,আগামী দিনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশ গঠন করতে হলে সকল আন্দোলনে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে রাজপথে থাকতে হবে।