ফেনীর সোনাগাজীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিতর্কিত যুবলীগ নেতা, কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী মোহাম্মদ দুলাল প্রকাশ ওরফে বাটা দুলালকে শনিবার রাত ১০টার দিকে গ্রেফতারের পর থানায় হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু তাকে গভীর রাতে ছেড়ে দেন মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান।
থানা থেকে গভীর রাতে আসামি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশিত হলে শুরু হয় তুমুল সমালোচনা। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওসির এমন কাণ্ড নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিশেষ করে এমন দাগী আসামী ছেড়ে দেয়ায় বেজায় ক্ষিপ্ত এলাকার মানুষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক নেতা বলেন, “সোনাগাজীর একজন সমালোচিত প্রভাবশালী যুবদল নেতার তদবিরে ওসি কামরুজ্জামান মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আসামিকে গভীর রাতে ছেড়ে দিয়েছেন। স্থানীয়রা ওসির প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছেন। গ্রেফতার দুলাল উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের চরচান্দিয়া ভুঞা বাজার এলাকার আবু তাহেরের ছেলে এবং চরচন্দিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সহসভাপতি। তার বিরুদ্ধে ৫ আগস্ট ফেনীর ট্রাংক রোড দোয়েল চত্বরে গুলি করে নাহিদুর রহমান নামে এক যুবককে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় তার বাবা বাহার মিয়ার দায়ের করা মামলার ১৪১ নম্বর আসামি সে।”
তবে থানা থেকে আসামি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি ওসি কামরুজ্জামান। গণমাধ্যমকে সোজাসাপটা এড়িয়ে যান তিনি।
তবে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার বাটা দুলালকে গভীর রাতে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে ফেনীর পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘তাকে গ্রেফতারের পর থানায় অনলাইনে যাচাই-বাছাই করে পাঁচটি মামলার তথ্য ছাড়া আর কোনো মামলা পাওয়া যায়নি। তিনি সে মামলাগুলোতে জামিনে রয়েছেন। পত্রিকায় দেখেছি তার বিরুদ্ধে ৫ আগস্টে ছাত্র হত্যার মামলা রয়েছে। এ মামলায় তিনি আসামি হলেও এজাহারে তার বাবার নাম ভুল হওয়ায় থানায় যাচাই করে কোনো মামলা খুঁজে পাওয়া যায়নি, তাই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। তবে আমরা বিষয়টা খতিয়ে দেখছি।’
তবে এমন বিতর্কিত ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ সাধারণ জনগণ। তারা বলছেন, বাটা দুলালের মতো এমন মাদক সম্রাট, বিতর্কিত নেতা হঠাৎ করে ফেরেশতা হয়ে গেলো ? নাকি মোটা অঙ্কের টাকা খেয়ে ওসি কামরুজ্জামান দুলালকে ফেরেশতা বানিয়ে দিলো ? আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’