ফরিদপুরের মাটিকে জামায়াতে ইসলামীর দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
রোববার ১ ডিসেম্বর) বিকেলে ফরিদপুর শহরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ফরিদপুর জেলা জামায়াত ইসলামীর আমীর মাওলামা মোহাম্মদ বদরুদ্দিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় ওই কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে ডা. শফিকুর রহমান উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এই আহ্বান জানান। এসময় তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের কড়া সমালোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনটির সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য শামসুল ইসলাম আল বরাটি, কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য প্রফেসর আব্দুত তাওয়াব প্রমুখ। এসময় ফরিদপুর জেলা জামাতের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
জামায়াতের নেতারা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করে আরো বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামিলীগ সরকার দেশের জনগণের উপর জুলুম, অত্যাচারের স্টিমরোলার চালিয়েছিল৷ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ছিল গত সরকারের জুলুমের প্রধান টার্গেট। জামায়াতে ইসলামীর অনেক নেতাকে জুডিশিয়াল ক্যু এর মাধ্যমে হত্যা করেছে৷
এরমধ্যে ফরিদপুরের দুই সন্তান তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং জেনারেল সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে লগি-বৈঠা দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে এবং ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ৫৭ জন চৌকস ও দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে৷ আগামীতে জামায়াত ক্ষমতায় এলে এই ঘটনার সাথে জড়িত সবার বিচার করা হবে৷ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশকে ন্যায়বিচার ও ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। এজন্য দেশে ইসলামী শাসনব্যাবস্থা কায়েম করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে জনগণের ঘরে ঘরে গিয়ে ইসলামী শাসনব্যাবস্থা সম্পর্কে অবগত করার আহ্বান জানান। এছাড়া গত পাঁচ আগস্টের জনতার বিপ্লবে শহীদ হওয়া প্রতিটি নাগরিককে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
বক্তারা চিরজীবন এদেশের ছাত্র সমাজের প্রতিকৃতজ্ঞ থাকা অঙ্গীকার করেন৷ এছাড়া শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন করে সাজাতে চান যাতে শিক্ষাজীবন শেষে ছাত্রসমাজকে বেকার বসে থাকতে না হয়।
এছাড়া তিনি দেশের নারী সমাজের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হয় যে আমরা ক্ষমতায় গেলে দেশের আমাদের মা-বোনদেরকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখবো৷ তিনি এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেন। বাংলাদেশকে একটি ন্যায় ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন৷ ফরিদপুরের মাটিকে জামায়াতে ইসলামীর দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করার আহবান জানান।
বক্তারা বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তারা জানান, ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদ কোন শক্তি যেন মাথা ছাড়া দিয়ে উঠতে না পারে এদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
সমাবেশটিতে অংশ নিতে দুপুর ১২টা থেকে সমাবেশ স্থল ফরিদপুর জেলা সহ আশেপাশের জেলাগুলো থেকেও নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।