খুঁজুন
শনিবার, ১০ মে, ২০২৫, ২৭ বৈশাখ, ১৪৩২

কুরুচির বই বিক্রি ও জয় বাংলা স্লোগান

মুচলেকায় ছাড়া পেলেন বিতর্কিত প্রকাশক শতাব্দী ভব

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:৫৭ অপরাহ্ণ
মুচলেকায় ছাড়া পেলেন বিতর্কিত প্রকাশক শতাব্দী ভব

অমর একুশে বইমেলায় কুরুচির মহিলা খ্যাত বিতর্কিত তসলিমা নাসরিনের বই রাখাকে কেন্দ্র করে ‘সব্যসাচী’ স্টলে হামলা ও হট্টগোলকে কেন্দ্র করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির সচিব ও বইমেলা টাস্কফোর্স কমিটির প্রধান সেলিম রেজা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সোমবারের ঘটনায় ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। তারপর আমরা একটি সিদ্ধান্তে আসব।

এদিকে ‘সব্যসাচী’ প্রকাশনার স্টলে বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রি ও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্টল ভাঙচুরের পর পুলিশ প্রকাশক শতাব্দী ভবকে আটক করে। সোমবার সন্ধ্যায় আটকের পর রাত ১২টার দিকে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। হামলার পর থেকে বন্ধ রয়েছে স্টলটি।

মূলত অমর একুশে বইমেলায় সব্যসাচী স্টলে লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বই রাখা নিয়ে কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উত্তেজনা ছড়াচ্ছিল। এরই মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় ‘তৌহিদি জনতা’র নামে একদল লোক স্টলটিতে হামলা চালায়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম গণমাধ্যমে বলেন, তসলিমা নাসরিনের বই রাখায় বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলায় সব্যসাচী প্রকাশনার স্টলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সোমবার সন্ধ্যায় তৌহিদি জনতার নামে একদল লোক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করলে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে শতাব্দী ভবকে বইমেলায় পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে আটজন এবং শতাব্দী ভবকে থানায় নেওয়া হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। পরে পৃথক মুচলেকা নিয়ে সোমবার রাতেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন একদম স্বাভাবিক বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, শতাব্দী ভবর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে বাংলা একাডেমি। এটা তাদের বিষয়। স্টল বন্ধ থাকার কোনো নির্দেশনা আমরা দেইনি। পরে লেখক, প্রকাশক সমিতিসহ সংশ্লিষ্টরা সিদ্ধান্ত নেবেন বলে তিনি জানান।

এদিকে হামলার পর সব্যসাচীর প্রকাশক শতাব্দী ভবর স্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, হুমকির বিষয়টি ২ দিন আগেই পুলিশকে জানিয়েছিলেন। তার এমন দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিসি মাসুদ আলম বলেন, এ বিষয়টি আমরা জানি না। তার স্ত্রীর সঙ্গে আমার কখনো কথা হয়নি। আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। আমরা যখন জেনেছি তখন এটা নিয়ে কাজ করেছি।

জানা যায়, চলতি বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে সব্যসাচী প্রকাশনা সংস্থার স্টলে (১২৮ নম্বর স্টল) রাখা হয়েছিল তসলিমা নাসরিনের বিতর্কিত বই ‘চুম্বন’। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েক দিন ধরেই নানা বিতর্ক চলছিল। সোমবার সন্ধ্যায় একদল লোক স্টলটিতে গিয়ে প্রকাশককে ঘিরে ধরে স্লোগান দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ প্রকাশক শতাব্দী ভবকে বইমেলায় তাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নিয়ে যায়। পরে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষও ঘিরে রাখেন উত্তেজিত জনতা। তারা দাবি করেন, শতাব্দী ভব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটাক্ষ করে ইসলামপন্থিদের ‘জঙ্গি’ বলে গালাগাল করেছেন এবং মেলায় এসে ‘জয় বাংলা/জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে সাধারণ-জনতার ওপর হামলা করেছেন।

জানা যায়, শতাব্দী ভব হামলার শঙ্কার কথা আগেই বলেছিলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিও বার্তাও দিয়েছিলেন। তার স্ত্রী সানজানা গণমাধ্যমকে বলেন, তসলিমা নাসরিনের বই রাখার কারণে ২ দিন ধরে কিছু লোক সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে আমাদের স্টল গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল। এই বিষয়টি পুলিশ এবং বইমেলা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা বই সরিয়ে নিতে বললে, বই সরানো হয়েছে। তারপরও স্টলে হামলা করেছে।

এমন হুমকির বিষয়ে খোদ লেখিকা তসলিমা নাসরিনও সোমবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

একুশে বইমেলায় স্টলে হামলার ঘটনায় সোমবার রাতেই এক বিবৃতিতে কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এ হামলা বাংলাদেশের নাগরিকদের অধিকার ও দেশের আইনের প্রতি চরম অবমাননার প্রতিফলন। এমন সহিংসতা এ মহান সাংস্কৃতিক আয়োজনের মুক্তচিন্তার চেতনাকে লঙ্ঘন করে। যা ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্র“য়ারি মাতৃভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গকারী ভাষা শহিদদের স্মরণে অনুষ্ঠিত হয়। একুশে বইমেলা আমাদের লেখক ও পাঠকদের প্রতিদিনের মিলনমেলা।

এদিকে শোভা প্রকাশনী (প্যাভিলিয়ন-৩) থেকে মেলায় এসেছে আবদুল হাই শিকদারের বই ‘জ্যোতির্ময় জিয়া এবং কালো মেঘের দল’।

একাদশ দিনে নতুন বই ৯১টি:
বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগ জানায়, মঙ্গলবার মেলার একাদশ দিনে নতুন বই এসেছে ৯১টি। এ পর্যন্ত মেলায় মোট নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে ৮২৮টি। এর মধ্যে গল্পের বই ১০৫টি, উপন্যাস ১৫৪, প্রবন্ধ ৩৫, কবিতা ২৫৩, গবেষণা ১৬, ছড়া ১১, শিশুতোষ ১৭, জীবনী ২৬, রচনাবলি ৬, মুক্তিযুদ্ধ ৭, নাটকের বই ১০টি।

এছাড়া বিজ্ঞান ১৮, ভ্রমণ ১০, ইতিহাস ২৪, রাজনীতি ১২, চিকিৎসাশাস্ত্র ২, ভাষার বই ৫, গণঅভ্যুত্থান ৫, ধর্মীয় ১৫, অনুবাদ ৬, অভিধান ২, সায়েন্স ফিকশন ৬ ও অন্যান্য ৮০টি।

৩৬ স্থানে পাকিস্তানের ৪০০ ড্রোন হামলা, স্বীকার করলো ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১০ মে, ২০২৫, ১২:১৭ অপরাহ্ণ
৩৬ স্থানে পাকিস্তানের ৪০০ ড্রোন হামলা, স্বীকার করলো ভারত

৮ ও ৯ মে’র মাঝরাতে ৩৬টি স্থানে প্রায় ৩০০-৪০০টি ড্রোন ব্যবহার করে লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) ডিঙিয়ে ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। শুক্রবার এমন অভিযোগ করেছে ভারত। শুক্রবার (৯ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য ওয়ায়ার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ড্রোনের মাধ্যমে সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা এবং বেসামরিক বিমানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রী, সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার ভূমিকা সিংহ এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানান, পাকিস্তানের এই ড্রোন অনুপ্রবেশের সম্ভাব্য উদ্দেশ্য ছিল ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা করা। ভারতের হাতে ধরা পড়া ড্রোনগুলোর ধ্বংসাবশেষ প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সেগুলো তুরস্কের আসিসগার্ড সংগার ড্রোন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ মে) রাতে ভারত ‘অপারেশন সিদুঁর’ চালিয়ে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি লক্ষ্যবস্তুতে সামরিক হামলা চালায়।

উইং কমান্ডার ভূমিকা সিংহ বলেন, সামরিক স্থাপনার ওপর হামলার উদ্দেশ্যে ৮ এবং ৯ মে’র মাঝরাতে ভারতের পশ্চিম সীমান্তজুড়ে আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী। এলওসি এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর লেহ থেকে সির ক্রিক পর্যন্ত ৩৬টি স্থানে ৩০০ থেকে ৪০০ ড্রোন পাঠানো হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী কাইনেটিক এবং নন-কাইনেটিক পদ্ধতিতে এই ড্রোনগুলো নামিয়ে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, এসব অনুপ্রবেশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল।

তিনি আরও জানান, পাকিস্তানের একটি সশস্ত্র ইউএভি ভারতের বাঠিন্ডা সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা করেছিল, যেটিকে সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে। জবাবে ভারতীয় সশস্ত্র ড্রোন পাকিস্তানের চারটি আকাশ প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে হামলা চালায় এবং এর মধ্যে একটি ড্রোন পাকিস্তানের একটি এয়ার ডিফেন্স রাডার ধ্বংস করতে সক্ষম হয়।

ভূমিকা বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী এলওসি বরাবর ভারী ক্যালিবারের কামান থেকে গোলাবর্ষণ করে এবং টাংধার, উরি, পুঞ্চ, মেন্ধার, রাজৌরি, অখনূর ও উধমপুরে সশস্ত্র ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালায়, যার ফলে ভারতীয় সেনাদের কিছু ক্ষয়ক্ষতি ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। পালটা হামলায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান তাদের বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ না করে বরং ‘ঢাল হিসেবে’ ব্যবহার করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে ভূমিকা বলেন, ৭ মে রাত ৮টা ৩০ মিনিটে পাকিস্তান ভারতের ওপর একটি ব্যর্থ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। কিন্তু তারা তাদের বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ করেনি। বরং করাচি-লাহোর বিমানপথে বেসামরিক বিমান চলছিল, যা পাকিস্তানের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণকে আবারও সামনে এনেছে। তারা জানে ভারত এই হামলার জবাবে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেবে।

ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উত্তেজনার জেরে দেশের ২৮টি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে জম্মু ও কাশ্মীরের এলওসি ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর একাধিক সামরিক স্থাপনা ও বেসামরিক এলাকায় ভারী গোলাবর্ষণ ও ড্রোন-মিসাইল হামলার কারণে এক নারী নিহত এবং অপর একজন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়। জম্মু শহর ও সীমান্তবর্তী বিভিন্ন গ্রামে রাতভর গোলাগুলির আওয়াজ, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া এবং সাইরেনের শব্দে আতঙ্কে রাত কাটান সাধারণ মানুষ।

আ'লীগ নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবি

শাহবাগে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

মোঃ হাসানুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শনিবার, ১০ মে, ২০২৫, ১২:০১ অপরাহ্ণ
শাহবাগে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি ও সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের পর আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল পুরোদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্র-জনতা। সারা রাত অবস্থানের পর শনিবার (১০ মে) সকালে সেখানে লোক সমাগম কম লক্ষ্য করা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ছাত্র-জনতা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীরা সেখানে অবস্থান করছেন। তারা ‘ব্যান ব্যান, আওয়ামী লীগ ব্যান’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। রাতে অবস্থানকারী অনেকেই রাস্তার ওপর শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন। তবে বেশিরভাগই শাহবাগ ছেড়ে গেছেন। আশপাশে গাছের ছায়ায় বসে থাকতে দেখা গেছে অনেকেই।

এদিকে ছাত্র-জনতার অবস্থানের কারণে শাহবাগ মোড়ের প্রতিটি সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। শুক্রবারের মতো শনিবারও সেখানে যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।

শুক্রবার বিকেলে আন্দোলন শুরু হয়। এর আগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ের পাশের মঞ্চ থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি শাহবাগ মোড় অবরোধের ঘোষণা দেওয়ার পর আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে শাহবাগে এসে অবরোধ শুরু করেন। সারারাত সেখানে অবস্থান করেন তারা।

রাত ১১টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শনিবার (১০ মে) বিকেল ৩টায় শাহবাগে গণজমায়েতের আহ্বান জানান এবং অবস্থান কর্মসূচি চলমান রাখার ঘোষণা দেন। সবমিলিয়ে এ-কথা বলাই যায়- আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলন ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।

চীনা যুদ্ধবিমান দিয়ে ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১০ মে, ২০২৫, ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ
চীনা যুদ্ধবিমান দিয়ে ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান

চীনের নির্মিত পাকিস্তানি একটি যুদ্ধবিমান গত বুধবার কমপক্ষে দুটি ভারতীয় সামরিক বিমান ভূপাতিত করেছে। এমনটি জানিয়েছেন দুই মার্কিন কর্মকর্তা।

এই ঘটনাকে বেইজিংয়ের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

চীনের তৈরি ওই যুদ্ধবিমানের সক্ষমতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ওয়াশিংটন। এ থেকে ধারণা পাওয়া যেতে পারে, তাইওয়ান বা বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কোনো সংঘর্ষের ক্ষেত্রে বেইজিং কেমনভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তান চীন নির্মিত জে-১০ (জে- টেন) যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতীয় যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে একটি এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। এতে অন্তত দুটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত হয়।

আরেক কর্মকর্তা বলেন, অন্তত একটি ভারতীয় বিমান যা ভূপাতিত হয়েছে। সেটি ছিল ফ্রান্সের নির্মিত রাফাল যুদ্ধবিমান। উভয় কর্মকর্তা জানান, পাকিস্তানের চালানো হামলায় লকহিড মার্টিনের তৈরি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহৃত হয়নি।

দিল্লি অবশ্য কোনো বিমান হারানোর কথা স্বীকার করেনি এবং বরং দাবি করেছে যে, তারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ‘সন্ত্রাসী’ অবকাঠামো লক্ষ্য করে সফল হামলা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনসহ বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলো ভারত ও পাকিস্তানকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

ভারতীয় বিমান বাহিনীর এক মুখপাত্র রয়টার্সের এই প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। আর রাফাল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান দাসো অ্যাভিয়েশন এবং মেটিওর এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান এমবিডিএ তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।

বুধবার ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের বরাতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে দেশটির তিনটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার কথা জানানো হয়।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেন, পাকিস্তান জে-১০ বিমান ব্যবহার করে তিনটি রাফাল বিমান ভূপাতিত করেছে। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা আকাশযুদ্ধে মোট পাঁচটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করেছে।

রাফাল ও জে-১০ দুটিই আধুনিক প্রজন্মের যুদ্ধবিমান। পশ্চিমা বিশ্লেষকদের মতে, ভবিষ্যতে বড় শক্তির মধ্যে সংঘর্ষে ব্যবহৃত হতে পারে এমন কিছু অত্যাধুনিক অস্ত্রের কার্যকারিতা এখন খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

তবে তারা সতর্কতা জানিয়ে বলেছেন, এখনই কোনো দৃঢ় সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়, কারণ বিষয়টি পুরোপুরি বিশ্লেষণ করতে আরও সময় প্রয়োজন।