খুঁজুন
শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৩ পৌষ, ১৪৩১

বেলকুচিতে কভার্ডভ্যান ভর্তি ভারতীয় সূতা উদ্ধার

রেজাউল করিম স্টাফ রিপোর্টার,সিরাজগঞ্জঃ
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:৫৩ অপরাহ্ণ
বেলকুচিতে কভার্ডভ্যান ভর্তি ভারতীয় সূতা উদ্ধার

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌর এলাকার সুবর্নসাড়ায় কভার্ড ভ্যান ভর্তি ভারতীয় সুতা উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ৯ টার দিকে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১১০ পাউন্ডের ৭৫ কাটুন ভারতীয় বন্ডের সুতা আটক করা হয়।

বেলকুচি থানার ওসি জাকেরিয়া হোসেন ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে গার্মেন্টেসের শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে আনা বিভিন্ন ব্রান্ডের সুতা গার্মেন্টেসে ব্যবহার না করে গোপনে চোরা চালানের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন তাঁত শিল্পে বাজারজাত করে বিপুল মুনাফা আয় ও লক্ষ লক্ষ টাকা কর ফাঁকি দিয়ে আসছিল চক্র গুলো।

এ বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে যমুনা ও একুশে টেলিভিশন  সংবাদ প্রকাশ করে। এজন্য দেশজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি করে। তবে কৌশল পরিবর্তন করে বেলকুচির কুচক্রি সুতা ব্যবসায়ীরা এ ব্যবসা চালিয়েই যাচ্ছিল।

হঠাৎ বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বেলকুচি উপজেলার সুবর্ণসাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের পাশের রাস্তা দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে আসা ভারতীয় সুতা ভর্তি একটি কভার্ড ভ্যানে তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ তামাই যাচ্ছিল। তখন যমুনা টেলিভিশনের সহযোগীতায় স্থানীয়রা গাড়ি আটকালে চোরা চালানকারীরা পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে থানা পুলিশ রাত ৯ টার দিকে সুতা গুলোসহ কাভার্ড ভ্যানটি থানায় নিয়ে আসে। এরপর গাড়ি থেকে ভারতীয় এসটি গোল্ড ব্র্যান্ডের ১১০ পাউন্ডের ৭৫ কাটুন সুতা উদ্ধার করা হয়।

বেলকুচি থানার ওসি জাকেরিয়া হোসেন আরও জানান, সুতা গুলো আমদানি নিষিদ্ধ কিনা তা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে গুম হয়ে ভারতের কারাগারে যাওয়ার বর্ণনা দিলেন সুখরঞ্জন বালি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:৩৮ অপরাহ্ণ
সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে গুম হয়ে ভারতের কারাগারে যাওয়ার বর্ণনা দিলেন সুখরঞ্জন বালি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন সুখরঞ্জন বালি। এরপর তাকে ভারতের কারাগারে কাটাতে হয় পাঁচ বছর। কীভাবে তাকে গুম করা হয় ও কীভাবে ভারতের কারাগারে নেয়া হয় তার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন সুখরঞ্জন।

ঘটনাটি ঘটে ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর সকালে। অপহৃত হওয়ার পর তার কপালে কী জুটেছিল সে-বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাথে। সেখানেই বিশদ বর্ণনা তুলে ধরেন সুখরঞ্জন বালি। বাসসের সাথে তার সেই আলাপটি তুলে ধরা হলো বিডিনিউজ ট্রিপল নাইন পাঠকদের জন্য।

স্বাক্ষাৎকারে সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘২০১২ সালের নভেম্বর মাসের ৫ তারিখে আমি ঢাকায় কোর্টে গিয়েছিলাম। আমার সাথে দুজন ব্যারিস্টার ও দুইজন উকিল ছিলেন। আমাদের গাড়ি দেখে কোর্টের গেটে আটকে ফেলা হয়, তখন আমার সঙ্গে থাকা আইনজীবীদের সাথে গেটের লোকদের তর্ক-বিতর্ক চলছিল। আমি গাড়িতে দু’জন ব্যারিস্টারের মাঝে বসা ছিলাম, এ সময় কিছু সাদা পোশাকের লোক আমাকে নামিয়ে টানাটানি করতে লাগলো।’

‘তারা বলছিল, যার জন্য গাড়ি থামানো হয়েছে সেই লোক উনি। একেই আমাদের দরকার। সেই লোকরা আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে টেনেহিঁচড়ে পাঁচ-ছয় হাত দূরে অপর একটি গাড়িতে তুলে আমার চোখ বেঁধে ফেলে এবং একটু পরে গাড়িটি ছেড়ে দেয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রায় আধা ঘণ্টা গাড়িটি চালানোর পরে সাদা পোশাকের লোকেরা আমাকে হাঁটাতে থাকে। এ সময় আমি নিচের দিকে নামার মতো অনুভব করি। কিছুদূর হাঁটিয়ে একটা দরজা খুলে অন্ধকার জায়গায় আমাকে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। কোনো আলো সেখানে ছিল না, অথচ তখন সকাল দশটা-এগারোটা বাজে।’

সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘আমাকে একটি খালি রুমে আটকে দেয়া হয়। বাইরে কোনো শব্দ ছিল না, ঘরে কোনো জানালা বা কোনো ফাঁকা ছিল না যা দিয়ে কোনোরকম আলো ভেতরে আসতে পারে। তখন আমাকে মাঝে মাঝে অল্প করে খাবার দেয়া হতো। সেখানে কিছু লোক ছিল যারা আমাকে খাবার দিতো বা পাহারায় আসতো তারা নীল রংয়ের পোশাক পরা থাকতো।’

ভয়াবহ নির্যাতনের কথা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘এর দুদিন পর আমাকে সেই রুম থেকে বের করে অন্য একটি রুমে নেয়া হয়। সেখানে আমাকে নিয়ে তারা জোর করে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তি নিতে চায়। সে রুমে অনেকগুলো ক্যামেরা লাগানো ছিল আমি দেখতে পাই। আমার ভাইয়ের হত্যায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী জড়িত কি-না জানতে চাইলে আমি যখন অস্বীকার করি এবং বলি যে যারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে তাদের আমি চিনি। তাদের বিরুদ্ধে আমি সাক্ষ্য দিতে পারবো, কিন্তু তারা বারবার আমাকে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে বলে। একপর্যায়ে তারা আমাকে মারধরসহ কারেন্টের শক দেয়, নির্যাতন করে।’

সুখরঞ্জন বলেন, ‘তারা আমাকে একপর্যায়ে টাকা দিয়ে লোভ দেখানোর চেষ্টা করে এরপরও রাজি না হলে তারা অমানবিক নির্যাতন চালায়। সেখানে টানা কয়েকদিন ছিলাম। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতো। তখন তিন-চারজন লোক জিজ্ঞাসাবাদ করতো।’

অত্যাচারে তিনি অসুস্থ হয়ে যান জানিয়ে বলেন, ‘তাদের অত্যাচারে আমি অসুস্থ হয়ে যাই। কয়েকদিন সেখানে থাকার পর তারা একদিন সকাল সাতটা কি আটটার দিকে আমাকে চোখ বেঁধে গাড়িতে তোলে। আয়নাঘর থেকে যখন গাড়িতে ওঠানো হচ্ছিল, তখন আমি ভয়ে ভয়ে জানতে চাই আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? জবাবে তারা বলেছিল, আমরা তোকে তোর দেশে নিয়ে যাবো। বল কোথায় নামিয়ে দিলে তুই তোর বাড়ি চিনে যেতে পারবি। তখন বলি, বাগেরহাটে নামিয়ে দিলে আমি আমার বাড়িতে যেতে পারবো। সারাদিন ধরে গাড়ি চালানোর পর মাঝে একবার ফেরিতে ওঠানো ও নামানো হয় সেটা আমি অনুভব করতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে আবার গাড়ি চলতে শুরু করে; দীর্ঘক্ষণ চালানোর পর দুইজন লোক গাড়িতে ওঠে। এর কিছুক্ষণ পর দশ-বারো মিনিটের মতো হবে গাড়িটি চলতে চলতে থেমে যায়। এ সময় গাড়ি থেকে আমাকে নামানো হয় ও চোখ খুলে আমাকে সামনে এগোতে বলা হয়।’

সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘জায়গাটা বাগেরহাট কি-না সেটা বুঝতে চেষ্টা করি। আমি বুঝতে পারি যে, ওটা বাগেরহাট নয় এবং স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি সামনে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী (বিএসএফ), যেটা বর্ডার এলাকা। সেখানে যারা আমায় নিয়েছে কান্না করতে করতে আমি বিএসএফ-এর হাতে তুলে না দিতে তাদের অনুরোধ করি। আমি বলি এদের হাতে তুলে দিয়েন না। প্রয়োজনে আমাকে মেরে ফেলেন। এ কথা বলতে বলতে আমি মাটিতে পড়ে যাই।’

সুখরঞ্জন বলেন, ‘আমাকে নেয়া গাড়ির লোকেরা জোর করে বিএসএফ-এর কাছে দিয়ে আসে আমায়। এ সময় আমি দেখতে পাই গাড়িতে ৬-৭ জন সবুজ পোশাকের পুলিশের সাথে দু’জন বিজিবি সদস্য আছেন। তখন বুঝতে পারি গাড়ি থামিয়ে যাদের নেয়া হয় তারাই বিজিবি।’

সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন নিরপরাধ নাগরিককে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরেকটি দেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে তুলে দেয় কেমন করে?’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘আমি যেতে না চাইলে জোর করে তারা আমাকে ধরে বিএসএফ সদস্যদের হাতে তুলে দেয়। বিএসএফ কিছু জিজ্ঞেস না করেই আমাকে প্রচণ্ড মারপিট শুরু করে। বিএসএফ হিন্দিতে কথা বলছিল এবং আমি আমাকে না মারার জন্য বাংলায় বোঝাতে চেষ্টা করি। আমার কোনো কথা তারা বুঝতে পেরেছিল কি-না আমি আজও বুঝিনি। একপর্যায়ে বিএসএফ মোটা দড়ি দিয়ে পেছন দিক দিয়ে আমার হাত বেঁধে ফেলে।

হাত বাধার সেই দাগ এখনও স্পষ্ট আছে বলে বাসসের এই প্রতিবেদককে দেখান সুখরঞ্জন বালি।

সুখরঞ্জন বালি তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনায় বলেন, মোটা লাঠি দিয়ে বিএসএফ তাকে মারতে থাকে। এতে তিনি ডান হাতের কনুইতে প্রচণ্ড আঘাত পান। এখনো ডান হাত দিয়ে ভালোভাবে তিনি কোনো কাজ করতে পারেন না। বিএসএফ-এর মারের পরে তিনি প্রায় তিন ঘণ্টা বেহুঁশ ছিলেন।

সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘আমি বিএসএফকে বলতে থাকি যে আমি ইচ্ছা করে এখানে আসিনি কিন্তু আমার কথা বুঝতে না পারায় তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করে।
আমাকে মারধরের আর কোনো কারণ বুঝিনি। বিএসএফ-এর ক্যাম্পটির বিষয়ে জানতে পারি এটি বৈকারী বাজার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর-চব্বিশ পরগণা জেলার স্বরূপনগর থানা এলাকা। এরপর বশিরহাট জেলে আমাকে বাইশ দিন রাখা হয়। সেখানে একদিন আমাকে কোর্টেও নেয়া হয়। এরপর আসা হয় দমদম জেলে।’

সুখরঞ্জন বলেন, দমদম জেলে থাকাকালীন সেখানে এক বন্দিকে (সম্পর্কে আমার ভাগনে হয়) আমি দেখি। সে আমাকে চিনতে পারেনি। আমি সুযোগ বুঝে তাকে আমার পরিচয় দিলে সে আমায় জড়িয়ে ধরে বলে ‘মামা তুমি বেঁচে আছো? আমরাতো জানি তুমি মারা গেছো।’ সে ভাগনে কারামুক্তির পর আমার বাড়িতে ও নিকটাত্মীয়দের আমরা বেঁচে থাকা ও ভারতের দমদম জেলে বন্দি থাকার কথা জানায়।

তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ির লোকেরা ভারতে প্রশাসন ও মানবাধিকার সংস্থার সাথে যোগাযোগ করলে মানবাধিকার সংস্থা সহায়তায় সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ২০১৮ সালের প্রথম দিকে ৫ বছর জেল খেটে আমি মুক্ত হয়ে দেশে ফেরত আসতে পারি।’ তিনি জানান, দমদমে থাকাকালীন বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা তার ইন্টারভিউ নিয়েছিল।

সুখরঞ্জন বালি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় কারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে সেই দৃশ্য আমি আমার বাড়ির পাশে টয়লেটের ভেতর লুকিয়ে থেকে নিজ চোখে দেখেছি। সেখানে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমি দেখিনি। তখন এ নামে কাউকে আমি চিনতামও না। উনি আমাদের এলাকা থেকে নির্বাচিত দুই দু’বারের এমপি ছিলেন। তখন উনার সম্পর্কে জানি ও চিনতে পারি। তিনি যখন এমপি ছিলেন তখন আমাদের মনে হতো যেন আমরা মায়ের কোলে আছি। তিনি নিরাপরাধ নির্দোষ তার বিরুদ্ধে শত নির্যাতন সহ্য করেও আমি সাক্ষ্য দেইনি। আমাকে ক্ষুদিরামের মতো ফাঁসি দিলেও আমি প্রস্তুত ছিলাম।

সুখরঞ্জন বালি বলেন, ভারত থেকে দেশে ফিরেও আমি নিজ এলাকায় পিরোজপুরের ইন্দুরকানিতে যেতে পারিনি। নিরাপত্তার কারণে বাগেরহাটে আত্মীয় ও পরিচিতিদের সহায়তায় তাদের আশ্রয়ে ছিলাম। বলেন, ‘পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি (সাবেক জিয়ানগর) উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নের উমেদপুর গ্রামে আমার বাড়ি।’

নিজের পেশা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি পেশায় কাঠমিস্ত্রি। আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। আমার ছেলেও কাঠমিস্ত্রির কাজ করতো। তাতে যে আয় রোজগার ছিল তাতে আমি পরিবার নিয়ে ভালোই চলতাম।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় সাক্ষ্য দেয়াকে কেন্দ্র করে আমাকে অপহরণ করে গুম করে নির্যাতন নিপীড়ন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং বিজিবি সহায়তায় বিএসএফের হাতে তুলে দিয়ে টানা ৫ বছর কারাবন্দি করে অবর্ণনীয় সাজা ভোগে বাধ্য করা হয়। অনেক ভয় আতঙ্কের পরও সাঈদীর মৃত্যুর পর তার জানাজায় উপস্থিত হয়েছিলাম। তারপর আবারও আমি নিরাপত্তার কারণে আড়ালে চলে যাই।

তিনি বলেন, তার ওপর ঘটে যাওয়া এতো ঘটনার পর তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে স্বাভাবিক হতে পারেননি। নিজ পেশায়ও ফিরে যেতে পারেননি। ফলে অর্থ কষ্টে ও অভাবে দিন কাটছে তার ও পরিবারের।

সুখরঞ্জন বালি রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় অপহরণ, গুম এবং ৫ বছর কারাবন্দি থাকাসহ তার সাথে ঘটে যাওয়া সকল অন্যায়ের বিচার চান তিনি। ক্ষতিপূরণ চান রাষ্ট্রের কাছে।

উল্লেখ্য, সুখরঞ্জন বালি পশ্চিমবঙ্গের এক কারাগারে আছেন, এ খবর প্রথম প্রকাশ করে ঢাকার একটি ইংরেজি পত্রিকা। সুখরঞ্জন বালি বাংলাদেশে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধের মামলায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন। তিনি ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চত্বর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর আইনজীবীরা তখন অভিযোগ করেছিলেন যে তাকে সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন অপহরণ করে নিয়ে গেছে।

ইংরেজি দৈনিকটির প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের হয়ে একজন ভারতীয় নাগরিক কারাগারে সুখরঞ্জন বালির বক্তব্য নেন, যেখানে বালি বলেন যে তাকে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ অপহরণ করে এবং পরবর্তীতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর কাছে তুলে দেয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের বশিরহাটের স্বরূপনগর থানায় সুখরঞ্জন বালির বিরুদ্ধে যে এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) দাখিল করা হয়, তার কোথাও এমন কথা উল্লেখ নেই যে তাকে কেউ অপহরণ করেছিলেন বা বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ তাকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর-চব্বিশ পরগণা জেলার স্বরূপনগর থানায় সুখরঞ্জন বালির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন বিএসএফ-এর ১৫২ নম্বর ব্যাটালিয়নের এ কোম্পানির অধিনায়ক বি পি সিং।

সুখরঞ্জন বালি ভারতের কারাগারে বন্দি থাকার বিষয়ে তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশের একটি ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য, কারামুক্ত হওয়ার পর সুখরঞ্জন বালির বক্তব্য এবং গুম কমিশনের ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের তথ্য একই চিত্র ফুটে উঠেছে।

জামায়াতের তৎকালীন নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে তাকে আমৃত্য কারাদণ্ড দেয়া হয়। সাজা ভোগকরাকালীন ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট কারা হেফাজতে হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দুই বারের নির্বাচিত এমপি ছিলেন।

পাইকগাছায় শামছুর রহমান ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ঔষধ বিতরণ

মোঃ রেজাউল ইসলাম, পাইকগাছা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৫:২৯ অপরাহ্ণ
পাইকগাছায় শামছুর রহমান ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ঔষধ বিতরণ

————————————————————–
আজ (২৭ ডিসেম্বর ) খুলনার পাইকগাছায় শামসুর রহমান ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ঔষধ বিতরণ সকাল ৮ টায় স্থানীয় ভোলানাথ সুখুদা সুন্দরী মাধ্যমিক বিদ্যালয় অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ঔষধ বিতরণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক পরিচালক ও শামছুর রহমান ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান মেজর মেসবাহুল ইসলাম ( অবঃ)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শামসুর রহমান ফাউন্ডেশন এর সদস্য সচিব মোঃ ইকবাল হোসেন,মাওঃ গোলাম সরোয়ার, মাওঃ আমিনুল ইসলাম, মোঃ হাবিবুল্ল্যাহ বাহার,মোঃ খোরশেদুজ্জামান (প্যানেল চেয়ারম্যান), মাওঃ আব্দুল মুত্তালিব মিয়া, মোঃ আলতাফ হোসেন,
মোঃ আব্দুল্লাল মামুন, আবুল কাশেম হাজরা, মোঃ হাসানুজ্জামান, মোঃ অহেদুল ইসলাম ও মোঃ রেজাউল ইসলাম বাদশা।
যে সকল ডাক্তারগণ চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন-মরহুম শামছুর রহমান সাহেবের পুত্রবধূ বিশিষ্ট হরমোন ও ডায়াবেটিস রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ হুরজাহান বানু উর্মি,সহকারী অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
অন্যান্য ডাক্তারদের মধ্যে ছিলেন – ডাঃ সঞ্জয় কুমার মন্ডল(এমবিবিএস) , ডাঃ শাহরিয়ার মাহফুজ পিয়াস(এমবিবিএস) , ডাঃ মুনমুন রহমান(এমবিবিএস) , ডাঃ রাখি সরকার পূজা(এমবিবিএস)।
ঔষধ বিতরণ ও সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন – মোঃ রাশেদুল হাসান (ফার্মাসিস্ট), মোঃ আব্দুল খালেক (পল্লী চিকিৎসক), মোঃ মুজিবর রহমান (পল্লী চিকিৎসক) , মোঃ শাহাদাত হোসেন (স্কয়ার কোম্পানি) , মোঃ ফয়সাল সরদার,মোঃ আল-আমিন, সবুজ ও তানজিম।

নরসিংদীর শিবপুরে ভারতীয় ভেজাল মবিল কারখানা জব্দ, মালিক গ্রেফতার

মোঃ আলম মৃধা, স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৫:২৭ অপরাহ্ণ
নরসিংদীর শিবপুরে ভারতীয় ভেজাল মবিল কারখানা জব্দ, মালিক গ্রেফতার

শিবপুরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) তথ্যের ভিত্তিতে নরসিংদী ডিবি অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় ভেজাল বাজাজ মবিল প্রস্তুতকারী কারখানা জব্দ করে এবং কারখানার মালিককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গতকাল (২৬ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার রাত দশটা থেকে অভিযান পরিচালনা শুরু হয়। সাড়ে বারটার দিকে কারখানা জব্দ করে কারখানার মালিক জিয়াবুর রহমানকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, এই অবৈধ ভারতীয় মবিল বাজাজ কারখানার মালিক জিয়াবুর রহমান (৩৮) , চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কালামিয়া পাড়া এলাকার মৃত কবির আহমেদের ছেলে। শিবপুরের কামারগাঁও কান্দাপাড়া এলাকার মোরগ ব্যবসায়ী মোঃ বাবুল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া বাসায় থেকে প্রায় ০২ বছর যাবৎ ব্যবসা করে আসছিলো।

আরো জানা যায়, সে নরসিংদীর আশেপাশের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ নকল ভারতীয় বাজাজ মবিলের ডিলারও নিয়োগ দিয়েছে। দুটি রুম ভাড়া নিয়ে সে এই অবৈধ কারখানা পরিচালনা করে আসছিল।

এ সময় তার কাছে মবিল প্রস্তুত করার কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এখান থেকে উদ্ধারকৃত মবিলের মালামাল ও প্রস্তুতকৃত মেশিনের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৮-১০ লাখ টাকা। মবিলে লাল রং মিশিয়ে সেটাকে কালার করে বাজারজাত করতো এই অবৈধ কারখানার মালিক।

এ ধরনের অবৈধ ব্যবসায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা ও নরসিংদীর সচেতন মানুষ।