খুঁজুন
বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ১২ চৈত্র, ১৪৩১

পানামা চুক্তি, ট্রাম্পের চালে চীনের অস্বস্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫, ৭:৪০ অপরাহ্ণ
পানামা চুক্তি, ট্রাম্পের চালে চীনের অস্বস্তি

Oplus_131072

ব্ল্যাকরক একটি মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান। গত ৪ মার্চ প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দেয়, তারা হংকংভিত্তিক সিকে হাচিসন (সিকেএইচ)-এর কাছ থেকে পানামা খালের দুটি বন্দর কিনে নিচ্ছে। এই চুক্তির আওতায় বিশ্বের ২৩টি দেশে ৪৩টি বন্দর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে চীনের প্রতিক্রিয়া ছিল তুলনামূলকভাবে শান্ত। যদিও এখন বিষয়টি নিয়ে বেইজিংয়ের অসন্তোষ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

চীনের বিরোধিতার কারণ:
গত ১৩ মার্চ চীনের এক সরকারি ওয়েবসাইটে এই চুক্তির তীব্র সমালোচনা প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, চুক্তিটি ‘মেরুদণ্ডহীন’ এবং এটি ‘সব চীনা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে। চীনের সরকারি মুখপত্রগুলোর সরাসরি নিন্দা না থাকলেও হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি ১৮ মার্চ বলেন, এই বিষয়ে ‘গুরুতর মনোযোগ’ প্রয়োজন।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও এই চুক্তি নিয়ে ক্ষুব্ধ বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে। বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো সম্ভাব্য নিরাপত্তা ও অ্যান্টি-ট্রাস্ট লঙ্ঘনের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। যদিও চীনের সরকারি সংস্থাগুলোর এই চুক্তি আটকে দেওয়ার সরাসরি আইনি ক্ষমতা নেই, তবে তারা বিভিন্ন অপ্রত্যক্ষ উপায়ে চুক্তির ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে।

চীন যদি চুক্তিটি রুখতে যায়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক রাষ্ট্রীয় সফরের পরিকল্পনা রয়েছে, যা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাছাড়া, ট্রাম্পের দাবি যে ‘চীন পানামা খাল নিয়ন্ত্রণ করে,’ তা আরও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারে, যা আন্তর্জাতিক মহলে চীনের বন্দর নীতি নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করবে।

তাছাড়া, চীনের বাণিজ্য ও সামরিক স্বার্থ রক্ষায় পানামা খালের বন্দরগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও দেশটি এরই মধ্যে ৫০টি দেশে অন্তত ৯৩টি বন্দর পরিচালনা করছে। ফলে এই চুক্তির সামরিক প্রভাব তুলনামূলকভাবে সীমিত। অনেক দেশেই চীনা যুদ্ধজাহাজগুলোর নোঙর করার অনুমতি থাকে না, ফলে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বন্দরগুলোর সামরিক কার্যকারিতা কমে যায়।

শি জিনপিং এই চুক্তি নিয়ে ক্ষুব্ধ হলেও তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে আগ্রহী। এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কিছু কৌশলগত সমঝোতার মাধ্যমে কিছু বন্দর চুক্তি থেকে বাদ দেওয়ার সুযোগও থাকতে পারে। ফলে চীন চুক্তিটির বিরোধিতা করলেও সরাসরি বাধা দেওয়ার পথে হাঁটার সম্ভাবনা কম।

এবার ঈদে আকাশপথে যাত্রীর চাপ কম

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ৩:৫৭ অপরাহ্ণ
এবার ঈদে আকাশপথে যাত্রীর চাপ কম

এবার ঈদে আকাশ পথে যাত্রীর তেমন চাপ নেই। অন্য বছরগুলোতে প্রতিটি এয়ারলাইন্স যাত্রীর চাপ সামলাতে হিমশিম অবস্থা হয়। বাড়তি ফ্লাইট চালাত বাধ্য হন তারা। কিন্তু এবার পুরোটাই ভিন্ন চিত্র। শুধুমাত্র বিমান এয়ারলাইন্স তিন রুটে ১৩ বাড়তি ফ্লাইটের ঘোষণা দিলেও এখনো বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো বাড়তি ফ্লাইটের ব্যাপারে কিছু জানাতে পারেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার শুধু বেসরকারি নয় সরকারি এয়ারলাইন্সেও যাত্রীর তেমন চাপ থাকবে না। সব মিলে বলতে গেলে শুধু উত্তরের রুটে যাত্রী থাকবে। অন্য রুটগুলোতে তেমন চাপ নেই। বিশেষ করে বরিশাল। বিগত সময়ে কক্সবাজার রুটে ঈদের পর লম্বা লাইন লেগে যেতো। কিন্তু এবার তেমনটা ঘটবে না। তবে যাত্রীরা যাবেন নিয়মিত ফ্লাইটে।

এছাড়াও বিগত বছরগুলোতে উত্তরের জেলাগুলোতে ছুটতে গলদঘর্ম হতো। যাত্রা পথেই লেগে যেতো ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা। কিন্তু এখন আট লেনের রাস্তার কাজ অনেকাংশে শেষ হওয়ার পথে। ফলে সেই ভোগান্তি আর থাকছে না। এ কারণেও উত্তরের জেলাগুলোর মানুষজন সড়ক পথেই এবার রওনা হচ্ছেন। যার প্রভাব পড়েছে আকাশ পথে। পাশাপাশি এবার নৌ পথেও যাত্রী বাড়বে। আকাশ পথে যাত্রী কম হওয়ার এটাও অন্যতম কারণ।

জানা গেছে, প্রতি বছর আকাশ পথে টিকিটের চাপ থাকে। টিকিট হয়ে ওঠে সোনার হরিণ। ফলে বাড়তি দামেও টিকিট কিনে থাকেন ক্রেতারা। কিন্তু এবার সেই চাপ ও চড়া মূল্যের টিকিটে ভাটা পড়েছে। এয়ারলাইন্সগুলো গতকাল (২৫ মার্চ) থেকে চাপ প্রত্যাশা করেছিল। কিন্তু সেটি হয়নি। বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বাড়তি ফ্লাইট চালানোর ঘোষণা আসেনি। তবে ঈদের দিন থেকে পরের তিনদিন কক্সবাজার রুটে পর্যটকের চাপ থাকবে। ফলে সেই তিন দিন এয়ারলাইন্সগুলো ব্যস্ত সময় কাটাবে। ফ্লাইটও বাড়তে পারে।

এভিয়েশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবার ঈদে দেশের যাত্রীদের বিদেশগামী যাত্রী ব্যাপক মেলে। কিন্তু সেই চিত্রেও এবার ভাটা পড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অন্য বছরে চাপ থাকলেও এবার ফেরার চাপ বাড়বে।

বাংলাদেশ বিমানের জনসংযোগ কর্মকর্তা বোসরা ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, শনিবার (২৫ মার্চ) থেকে আমাদের অভ্যন্তরীণ ঈদের ফ্লাইটগুলো চালু হয়েছে। চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত। পরে কি হবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। উত্তরের জেলা রাজশাহী এবং সৈয়দপুরে বাড়তি ছয়টি করে ১২টি ফ্লাইট চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া বরিশাল রুটে একটি। এই মিলে বিমানের ১৩টি বাড়তি ফ্লাইট চলবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, বিমান এয়ারলাইন্স রাজশাহী রুটে স্বাভাবিকভাবে সপ্তাহে চারটা ফ্লাইট চালায়। কিন্তু সেই জায়গায় এবার তারা প্রতিদিন বাড়তি দুইটা ফ্লাইট দিচ্ছে। এ বাড়তি ফ্লাইট চলবে আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত। বরিশালে চলে তিনটা কিন্তু একটা বাড়ানোর পাশাপাশি সৈয়দপুর রুটে প্রতিদিন একটা করে ফ্লাইট চলে সেখানে আরও একটা বাড়িয়েছে তারা।

17

ইউএস-বাংলার কামরুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, এবার আমাদের বাড়তি ফ্লাইট নেই। তবে রাজশাহী সৈয়দপুর এবং যশোর রুটে চাপ রয়েছে। এছাড়া ঈদের পরে কক্সবাজার রুটে যাত্রীদের কিছুটা চাপ থাকবে কারণ লোকজন বিনোদনের জন্য কক্সবাজারকে বেছে নিচ্ছেন।

তিনি জানান, বিগত বছরগুলোতে যেভাবে ঈদকে কেন্দ্র করে ঢাকা থেকে ঢাকার বাইরে যাওয়ার প্রবণতা ছিল সেই চিত্রে কিছুটা ভাটা পড়েছে। এবার উত্তরবঙ্গের সৈয়দপুর, রাজশাহী, যশোর বা বরিশাল রুটে তেমন চাপ নেই। যাত্রীর চাপ কম থাকায় তারা এবার বাড়তি ফ্লাইট চালানোর সিদ্ধান্ত এবার নেননি।

আরও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার অভ্যন্তরীণ রুটের পাশাপাশি বাইরে যাওয়ার যাত্রীর চাপ কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একদিকে ভারত ভিসা বন্ধ করায় তার চাপ পড়েছে এয়ারলাইন্সগুলোর ওপর। দুবাই, কাতার, থাইল্যান্ডগামী যাত্রীও কমেছে।

এমআইকে/এএস

গুরুদাসপুর প্রশাসনের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন

মোঃ সাইফুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ৩:১৪ অপরাহ্ণ
গুরুদাসপুর প্রশাসনের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন

নাটোরের গুরুদাসপুরে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৫ এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের সংবর্ধনা, সেই সাথে বীর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে গুরুদাসপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনটি ধাপে এই দিবসকে স্মরণ করা হয়েছে।

প্রথম ধাপে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ২১ বার তপত ধনীর মাধ্যমে বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তাবক অর্পণ করেন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা জনাবা ফাহমিদা আফরোজ। এরপর উপজেলার সর্বোস্তরের সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীগণ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এ সময় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষ থেকেও শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পুষ্পস্তবক শেষে ১ মিনিট নিরবতা পালন করে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় মোনাজাত করা হয়।

দ্বিতীয় পর্যায়ে এসে কোরআন তেলোয়াত ও গীতা পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা ঘোষনা করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহি কর্মকর্তা বেলুন উড়িয়ে সেই সাথে পায়রা অবমুক্ত করেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা জনাব ফাহমিদা আফরোজ এবং অফিসার্স ইনচার্জ জনাব গোলাম সারোয়ার।

এ সময় গার্ডঅব অনার প্রদান করেন, পুলিশ বাহিনী, ফায়ারসার্ভিস,আনছার বাহিনী এবং ১০ টি স্কুলের স্কাউট দল। সভাপতির বক্তব্যে জনাব ফাহমিদা আফরোজ মহান স্বাধীনতা দিবসে সকলের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে গঠনমূলক আলোচনা করেন।

সবশেষ বিজয়ী দের মাঝে পরুস্কার বিতরণ করেন এবং প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুয়েল চেয়ার বিতরণ করেন।
তৃতীয় পর্যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা গণকে ফুলদিয়ে বরণ করেন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা।মুক্তিযোদ্ধাগনের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।

আজ চীন যাচ্ছেন ড. ইউনূস, থাকবে নানা ইস্যু

অনলাইন নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ২:৪৩ অপরাহ্ণ
আজ চীন যাচ্ছেন ড. ইউনূস, থাকবে নানা ইস্যু

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে আজ বুধবার বেইজিং যাচ্ছেন। এ সফরের অন্যতম লক্ষ্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর মাধ্যমে ঢাকা-বেইজিং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া। তার সফরে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে, আসতে পারে কিছু ঘোষণাও।

আঞ্চলিক পরিস্থিতির পরিবর্তন এবং ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে উত্তেজনার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার এই সফর ভূরাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে ড. ইউনূসের প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর হিসেবে চীনকে বেছে নেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছে ঢাকা।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের বিস্তারিত গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তুলে ধরেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। তিনি জানান, চীনের হাইনান প্রদেশে অনুষ্ঠেয় বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার (বিএফএ) সম্মেলনে যোগদান এবং বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য আজ বুধবার চীনের উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। আগামীকাল ২৭ মার্চ বোয়াও সম্মেলনের প্লেনারি সেশনে বক্তব্য রাখবেন তিনি। এছাড়া এদিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে চীনের স্টেট কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রিমিয়ার দিং ঝুঝিয়াংয়ের বৈঠক হতে পারে।

২৮ মার্চ বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ড. ইউনূস। সেখানে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় নানা ইস্যু ও সহযোগিতা আলোচনা হবে। একই দিনে হুয়াওয়ে কোম্পানির উচ্চ-প্রযুক্তিসম্পন্ন এন্টারপ্রাইজ পরিদর্শন করবেন প্রধান উপদেষ্টা। ২৯ মার্চ চীনের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় পিকিং ইউনিভার্সিটি তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে এবং সেখানে তিনি বক্তব্য রাখবেন। পরে বেইজিং থেকে চীনের একটি বিমানে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার। তার চীন সফরে ৫৭ জনের একটি প্রতিনিধিদল থাকছে।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর, বাংলাদেশের একটি বার্তা:

চীন সফরে বাংলাদেশের চাওয়া কি? সাংবাদিক সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন বলেন, এ সফরে চাওয়াটা বহুমাত্রিক। চীন আমাদের অন্যতম বড় উন্নয়ন সহযোগী। দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ছে। আমরা নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে চলেছি, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। প্রধান উপদেষ্টা তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর হিসেবে চীনকে বেছে নেওয়ার মাধ্যমে একটা বার্তা আমরা দিচ্ছি। তবে এ বার্তা কার উদ্দেশে সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি তিনি।

পররাষ্ট্র সচিব জানান, এই সফরটি বাংলাদেশ-চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ঐতিহাসিক সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করার এবং নতুন দিগন্ত উন্মোচনের একটি সুযোগ তৈরি করবে।

চীন সফরে চুক্তি ও ঘোষণা:

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে পানি সম্পর্ক উন্নয়নে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া বিষয়ক সহায়তা এবং গণমাধ্যম বিষয়ক সহযোগিতা। এছাড়া অর্থনৈতিক বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে কিছু ঘোষণা আসতে পারে।

তিস্তা প্রকল্প, সামরিক ইস্যুতে আলোচনা:

তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীনের সঙ্গে কোনো সমঝোতা স্মারক সই হবে কি না—এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিব জানান, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের মধ্যে বৈঠকে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যে বৈঠকটি হবে, সেটি শীর্ষ নেতৃত্ব তাদের পছন্দ অনুযায়ী কথা বলবেন। তবে, আমাদের দিক থেকে এবং চীনের দিক থেকে পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কথা বলার আগ্রহ আছে। পানি ব্যবস্থাপনার আওতায় তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কথা বলার সুযোগ আছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য, রোহিঙ্গা, জিডিআই, অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

সামরিক বিষয়ে আলোচনা নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমাদের দিক থেকে চীনের সঙ্গে সামরিক বিষয়ে যে আলোচনা আছে তার সাধারণ একটা আলোচনা হবে।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে জসীম উদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘদিনের। এর মধ্যে সাত বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশের দিক থেকে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে সমস্যার যেন সমাধান হয়। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনায় চীনও আমাদের সহায়তা করেছে। তিনি বলেন, দুই নেতার বৈঠকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যে উদ্ভূত পরিস্থিতি সেটি নিয়ে চীন কী ভাবছে তা আমরা দেখতে পারি। আমাদের চিন্তা তাদের জানাতে পারি।

স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে আলোচনা চলছে এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চীনে বাংলাদেশি রোগীদের প্রথম ব্যাচ গেছে। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, তারা চিকিৎসাসেবায় সন্তুষ্ট। এছাড়া বাংলাদেশি রোগীদের জন্য কুনমিংয়ে চারটি হাসপাতাল চিহ্নিত করা হয়েছে। সচিব বলেন, আমাদের প্রত্যাশা, সামনের সময়ে এই সহযোগিতা আরও বাড়বে এবং চীন বাংলাদেশে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল করবে, যেটি বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যে সুবর্ণজয়ন্তী, তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বিষয় হবে।