খুঁজুন
রবিবার, ৪ মে, ২০২৫, ২১ বৈশাখ, ১৪৩২

সিরাজগঞ্জ পৌর ১২নং ওয়ার্ড বিএনপি’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

রেজাউল করিম স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: রবিবার, ৪ মে, ২০২৫, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ণ
সিরাজগঞ্জ পৌর ১২নং ওয়ার্ড বিএনপি’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

সিরাজগঞ্জে উৎসব মূখর পরিবেশে পৌর ১২ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র যৌথ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার (৩ মে) বিকেল ৪টায় সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার আমলাপাড়া ঈদগাহ মাঠে উক্ত যৌথ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন, জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোঃ মকবুল হোসেন চৌধুরী। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন, সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক  মোঃ আবু সাঈদ সুইট। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও শহর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ভূঁইয়া সেলিম এবং সঞ্চালনা করেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও শহর বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুন্সী জাহেদ আলম। 

আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আনিসুজ্জামান পাপ্পু, মুন্সী কামাল উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক সাবেক ভিপি শামীম খান, যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী, সাব্বির হোসেন ভূইয়া সাফি, সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর আলম, সদস্য শাহীন পারভেজ,  জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ আলামিন খান, যুগ্ন-সাধারণ রাকিব তালুকদার, শহর যুবদলের সভাপতি সজীব খান, থানা যুবদলের সভাপতি মোঃ বরাত হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মিলন হক রঞ্জ, যুগ্ন-সম্পাদক রুবেল আহমেদ, জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি সাবিনা ইয়াসমিন হাসি, সাধারণ সম্পাদক এলেমা বেগম প্রমুখ। 

এ সময়ে মতবিনিময় সভা আনন্দ উৎসব করে অনুষ্ঠানে প্রার্থীরা তাদের সর্মথকেরা শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে বর্ণাঢ্য একটি মিছিল ব্যানার ফেস্টুন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে মতবিনিময় সভাস্থলে উপস্থিত হয় এবং অন্যান্য সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রার্থীরা একই ভাবে আনন্দ উৎসব করে শ্লোগান শ্লোগানে মুখরিত করে মিছিল নিয়ে সভাস্থলে  উপস্থিত হয়। 

উক্ত যৌথ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার ১২ ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন করার লক্ষ্য উক্ত যৌথ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ওয়ার্ডের একাধিক  সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রার্থীরা তাদের জীবন বৃত্তান্ত এবং পতিত  স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ১৭ বছরে  নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, মামলায় পড়েছেন, কারাভোগ করেছেন তাদের বিভিন্ন  মামলার নথির কপি সহ অন্যান্য কাগজ-পত্র সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি কাছে জমা দেয়।

এবার পাকিস্তানের সব বন্দরে ভারতীয় জাহাজ নিষিদ্ধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ৪ মে, ২০২৫, ১:৩৮ অপরাহ্ণ
এবার পাকিস্তানের সব বন্দরে ভারতীয় জাহাজ নিষিদ্ধ

সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলায় ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় পাকিস্তান তাদের সব বন্দরে ভারতীয় পতাকাবাহী জাহাজগুলো নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। শনিবার (৩ মে) নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বন্দর ও শিপিং শাখা এ আদেশ জারি করে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

শনিবার (৩ মে) বিকেলে পাকিস্তানের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বন্দর ও শিপিং শাখা থেকে জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, ‘‘প্রতিবেশী দেশের (ভারতের) সঙ্গে সাম্প্রতিক সমুদ্র পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের সমুদ্র সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য অবিলম্বে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো কার্যকর করা হলো—

‘ভারতীয় পতাকাবাহী জাহাজগুলোকে পাকিস্তানের কোনো বন্দরে ভিড়তে দেওয়া হবে না। পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজগুলো কোনো ভারতীয় বন্দরে যাবে না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে অনুমতির বিষয়টি আলাদাভাবে বিবেচনা করা হবে।’’

এর আগে পাকিস্তানি জাহাজ বন্দরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত। দেশটির নৌপরিবহন মহাপরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজগুলোকে ভারতের কোনো বন্দরে ভিড়তে দেওয়া হবে না এবং ভারতীয় পতাকাবাহী জাহাজগুলোও পাকিস্তানের কোনো বন্দরে যাবে না। ভারতীয় সম্পদ, পণ্য ও সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জনস্বার্থে এবং ভারতীয় শিপিংয়ের স্বার্থে এই আদেশ জারি করা হলো।’

ভারতের এই পদক্ষেপের পরপরই পাকিস্তানের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ভারতের বিরুদ্ধে একই ধরনের পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়।

উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হন। এতে ভারত অভিযোগের আঙুল তোলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। যদিও পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারপরও ভারত পাকিস্তানি উড়োজাহাজের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া, সিন্ধু নদীর পানিচুক্তি স্থগিত করাসহ আরও অনেকগুলো পদক্ষেপ নেয়। পাকিস্তানও ভারতের বিরুদ্ধে অনুরূপ একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে।

যুদ্ধের শঙ্কায় বাঙ্কার সংস্কারে ব্যস্ত কাশ্মীরিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ৪ মে, ২০২৫, ১:০৫ পূর্বাহ্ণ
যুদ্ধের শঙ্কায় বাঙ্কার সংস্কারে ব্যস্ত কাশ্মীরিরা

পহেলগাম হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত এবং পাকিস্তান একে অপরের বিরুদ্ধে বেসামরিক নানা বিধিনিষেধ ঘোষণার পরও কাশ্মীরের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন। তারা ভেবেছিলেন, পরিস্থিতি হয়তো এর চেয়ে খারাপ হবে না। কিন্তু গত সপ্তাহে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর গুলি বিনিময়ের কারণে বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন কাছাকাছি বসবাসকারী মানুষেরা।

ভারতশাসিত কাশ্মীরের উরি সেক্টরের তুতমার গলি পোস্ট এবং পাকিস্তান শাসিত লিপা সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর গত সপ্তাহে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। তবে এখনে পর্যন্ত ওই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এহসান-উল-হক শামি পাকিস্তান শাসিত লিপা উপত্যকার বাসিন্দা। ওই অঞ্চলের জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার এবং সেখানকার বেশিরভাগ মানুষই আইন মেনে চলেন।

নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাড়ি শামির। ভারতীয় এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময়ে ২০১৯ সালে তার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি জানিয়েছেন, একইভাবে ২০০২ ও ১৯৯৮ সালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তার বাড়ি।

পেশায় আইনজীবী এহসান-উল-হক শামি বলেন, পহেলগামের ঘটনার পর গত শুক্রবার ও শনিবার পাকিস্তান ও ভারতের সেনাবাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময় হয়েছে। শুক্রবার ও শনিবারের মধ্যবর্তী রাতে সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময় চলে। এরপর শনিবার রাতে ফের গুলি বিনিময় শুরু হয়। ওইদিন রাত ১০টায় গুলি বিনিময় শুরু হয়ে ভোর ৫টা পর্যন্ত চললেও সাধারণ মানুষকে কিন্তু নিশানা হতে হয়নি।

ভারতশাসিত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সবচেয়ে স্পর্শকাতর এলাকা উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারা ও বারামুল্লা জেলায় অবস্থিত। শুক্রবার কুপওয়ারার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একটা নির্দেশ জারি করে জানিয়েছিলেন, কুপওয়ারার নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলে যেতে হলে আগাম অনুমতি নিতে হবে।

আতঙ্কে সাধারণ মানুষ:
কুপওয়ারায় এখন পর্যন্ত সীমান্তে গুলি বিনিময়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে নিয়ন্ত্রণরেখার খুব কাছাকাছি যারা বাস করেন, তাদের মধ্যে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। কুপওয়ারার কারনাহ সেক্টরের বাসিন্দারা ব্যক্তিগত ব্যয়ে ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার তৈরির কাজ শুরু করেছেন বা সেগুলো পুনর্নির্মাণ করছেন।

পহেলগামের ঘটনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ির নিচে বাঙ্কার তৈরির কাজ যারা শুরু করেছেন, তাদেরই একজন পীরজাদা সৈয়দ।

তিনি বলেন, সীমান্তে গোলাগুলির পরিণতি আমরা এরই মধ্যে দেখেছি। জীবনহানি হয়েছে, অতীতে কৃষিকাজের অভাবের কারণে মানুষও অনাহারে মারা গেছে। আল্লাহ করুন যেন কিছু না হয়, কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে যে কোনো সময় কিছু একটা ঘটে যেতে পারে। সে কারণেই আমরা ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার বানাচ্ছি যাতে কিছু হলে আমরা সেখানে আশ্রয় নিতে পারি।

কুপওয়ারার একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত সামরিক তৎপরতা’ এবং রাতের আকাশে জেট বোমারু বিমানের আওয়াজ তাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।

কুপওয়ারার নিয়ন্ত্রণ রেখার জিরো লাইনে অবস্থিত টোড গ্রামের এক বাসিন্দার কথায়, ২০১৭ সালে যখন গোলাবর্ষণ হচ্ছিল, তখন আমাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে একটা শেল এসে পড়েছিল এবং তার মৃত্যু হয়।

‘কিন্তু ২০২১ সালে যখন ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কঠোরভাবে অস্ত্রবিরতি মেনে চলতে রাজি হয়। তারপর গত চার বছর জীবন শান্তিপূর্ণ ছিল। এখানে কৃষিকাজ হয়েছে, বাচ্চারা স্কুলে গিয়েছে, ব্যবসা হয়েছে। কিন্তু এখন আশঙ্কা হচ্ছে, আগের মতো পরিস্থিতি হয়ত ফিরে আসতে পারে।’

পীরজাদা সৈয়দ বলেন, দু’দিন আগে নামবরদার এসে এখানকার বাসিন্দাদের বাঙ্কার পরিষ্কার করতে এবং তার চারপাশের আগাছা বা কাঠের জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলতে বলেছিলেন। এই ঘোষণার কারণে সবাই হতবাক হয়েছে। কিন্তু বাঁচতে হবে তাই সকলে বাঙ্কার পরিষ্কার করতে বা সেগুলো পুনর্নির্মাণ করতে শুরু করে দিয়েছে।
‘সারা রাত ঘুমাতে পারিনি’

এহসান-উল-হক শামি জানান, তার এলাকায় প্রায় প্রতিটা বাড়িতেই ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার রয়েছে। বাড়ির কাজে এই বাঙ্কার ব্যবহার করা হয়। বাঙ্কারগুলো এমনিতে মজবুত কিন্তু সব ধরনের বিপদ এড়াতে সক্ষম নয়। তিনি বলেন, বাঙ্কারগুলো বেশ মজবুত। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এটি বুলেট বা গোলা থেকে রক্ষা করতে পারলেও ভারী অস্ত্রের শেল সরাসরি বাঙ্কারে পড়লে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

‘আমরা যে বাড়িতে থাকি সেটি ২০০২ এবং ১৯৯৯ সালেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আমরা নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর আছি। এই কারণে আশঙ্কা থেকে যায় যে, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেই পারি। অবশ্য এমনিতেই গুলি চললে কারও পক্ষে ঘুমানো সম্ভব নয়।’

শামির মতো ওই অঞ্চলের অন্য বাসিন্দারাও বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন। তার কথায়, প্রায় পুরো এলাকার মানুষই গোটা রাত জেগে ছিল। তারা একে অপরের মঙ্গল কামনা করেছে। তবে আমাদের কাছে তথ্য আছে যে এখন পর্যন্ত এই গোলাগুলিতে বেসামরিক জনগণের কোনো ক্ষতি হয়নি।’

‘বাঙ্কারগুলো অবস্থান করার মতো যোগ্য নয়’

উরি সেক্টরেও নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন মানুষ। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এই সেক্টরের ভাটগ্রান ও চরন্দা এলাকায় ১৬টি বাঙ্কার নির্মাণ করা হলেও স্থানীয়দের অভিযোগ, সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ ও পানির ব্যবস্থা নেই।

ভাটগ্রানের বাসিন্দা মোহাম্মদ কুদ্দুস বলেন, কেউ কেউ নিজের খরচে বাঙ্কার তৈরি করেছেন, কিন্তু দরিদ্র মানুষরা যাবে কোথায়। এখন আমরা এই একই বাঙ্কারগুলোই পরিষ্কার করবো।

‘আল্লাহ দয়া করুন, যাতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সমস্ত কিছু ঠিক থাকে আর গুলিবিনিময় বন্ধ হওয়ার পর জীবনযাত্রা আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়,’ বলেন কুদ্দুস।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা।

২৩ মে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি করবে হেফাজতে ইসলাম

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ৪ মে, ২০২৫, ১:০১ পূর্বাহ্ণ
২৩ মে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি করবে হেফাজতে ইসলাম

Oplus_131072

নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আগামী তিন মাসের মধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন এবং নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে আগামী ২৩ মে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

শনিবার (৩ মে) দুপুরে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশে নতুন এই দুই কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনটির মহাসচিব সাজিদুর রহমান।

তিনি বলেন, নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আগামী তিন মাসের মধ্যে বিভাগীয় সম্মেলন করা হবে। আগামী ২৩ মে বাদ জুমা চার দফা দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।

এর আগে ১২ দফা ঘোষণাপত্র পাঠ করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক।

সমাবেশে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের দেশ এখন বহুমুখী সঙ্কটে রয়েছে। সেইসাথে আগ্রাসী ভারতের ষড়যন্ত্রও থেমে নেই। উপরন্তু, মানবিক করিডোরের নামে সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের ভূরাজনৈতিক লড়াইয়ের স্বার্থে আমাদের জন্মভূমি বাংলাদেশকে নতুন যুদ্ধের ক্ষেত্র বানাতে পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় আমাদের জাতীয় ঐক্য আরো সুদৃঢ় করতে হবে। বাংলাদেশ নিয়ে আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের ষড়যন্ত্র ঠেকাতে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নানা সঙ্কট মোকাবেলায় আমাদেরকে জুলাই-আগস্টের মতো ইস্পাত-কঠিন জাতীয় ঐক্য ও সংহতি আবারও গড়ে তুলতে হবে।

তিনি আরো বলেন, দেশে ইসলামবিরোধী গোষ্ঠী আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সম্প্রতি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন কোরআনবিরোধী প্রতিবেদন দাখিল করেছে। সাম্রাজ্যবাদের ফান্ডখোর কুখ্যাত নারীবাদীরা এদেশের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ, বিধি-বিধান, ঐতিহ্য ও পরিবারকাঠামো ধ্বংস করার পশ্চাত্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, এনজিওবাদী গোষ্ঠীর প্ররোচনায় এমন কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিবেন না, যা কোরআন-সুন্নাহর বিরুদ্ধে যায়। এক্ষেত্রে আমরা কোনো ছাড় দেবো না। এই বিতর্কিত কমিশন ও কোরআনবিরোধী প্রতিবেদন অবিলম্বে বাতিল করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম অংশীদার আলেম-ওলামার পরামর্শ নিয়ে নতুন কমিশন গঠন করুন।

হেফাজতে ইসলাম নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আমরা সরকারের নিকট দাবি জানাচ্ছি, দেশের যৌতুকপ্রথা বন্ধে কঠোর আইন করুন। শিক্ষা ও কর্ম ক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। এছাড়া, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন ফৌজদারি দণ্ডবিধি ও সাইবার সিকিউরিটি আইন থেকে ধর্ম অবমাননার শাস্তি সংক্রান্ত ধারাগুলো বাদ দেয়ার সুপারিশ করেছে, এটি আরেক গভীর ষড়যন্ত্র। সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘু— কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অধিকার অন্য কারো নেই। তাই ধর্ম অবমাননার শাস্তির আইনি ধারাগুলো বহাল রেখে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের ওই নির্দিষ্ট সুপারিশগুলো বাদ দিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর নামে কটূক্তি বা বিষোদ্গার বন্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির আইন করতে হবে। ৫ আগস্টের এই বিজয়কে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে হবে। এমন একটি ন্যায়ভিত্তিক সংবিধান ও সরকারব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে করে এই বাংলাদেশের মাটিতে আর কখনো কোনো ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের জন্ম না হয়।

তিনি আরো বলেন, আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে সংখ্যালঘুসহ সব নাগরিকের জান-মালের নিরাপত্তা, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ধর্ম পালনের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে। নাস্তিকতা ও মুক্তমনা চর্চার নামে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার সুযোগ থাকবে না। সংখ্যালঘুদের রাজনীতির বলির পাঁঠা বানানো যাবে না। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এমন একটি বিভেদমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যেখানে কাউকে গুম-খুন, জেল-জুলুম ও পুলিশি নির্যাতন করা হবে না। গণহত্যার বিচারের পাশাপাশি ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দালালদেরও বিচার করা হবে। আমরা এদেশে ন্যায়বিচার ও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

সমাবেশের সভাপতি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় এই মহাসমাবেশ।

এ সময় মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাহমুদুর হাসান কাশেমী, নায়েবে আমির আহমেদ কাশেমী, জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক প্রমুখ।