‘খাদ্য নিরাপত্তায় প্রাণীর অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে’
মানুষের নিরাপদ খাদ্য পেতে প্রাণীর অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। আজ সোমবার প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এলআরআই) কনফারেন্স হলে ‘প্রাণিসম্পদের ভ্যাকসিন উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, মানুষের খাদ্য প্রাণীর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই মানুষের নিরাপদ খাদ্য পেতে প্রাণীর অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
ফরিদা আখতার আরও বলেন, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা, সুষম পুষ্টি, বেকার সমস্যার সমাধান ও আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি জমির উর্বরতা বৃদ্ধি, মেধাসম্পন্ন জাতি গঠন ও বৈদেশিক আমদানি নির্ভরতা হ্রাসে জিডিপিতে প্রাণিসম্পদের অবদান অপরিসীম। প্রাণিজ খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বণ্টন-প্রক্রিয়া অন্যান্য খাতের চেয়ে ভিন্ন ও জটিল। এ প্রক্রিয়া সমন্বিতভাবে গড়ে তুলতে না পারলে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে। নতুন নতুন রোগের উদ্ভব হবে। এর ফলে শিল্পটি হুমকির মুখে পড়বে।
সমন্বিত ব্যবস্থাপনা করা না হলে মারাত্মক রোগ ও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই প্রাণিসম্পদের উন্নয়নের জন্য এ খাতের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে একত্রে সমন্বিত হয়ে কাজ করতে হবে।
ভ্যাকসিন তৈরিতে দেশের প্রতিভাবান বিজ্ঞানীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ভ্যাকসিন প্রান্তিক খামারিদের জীবন-জীবিকার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। রোগগুলো যেন গবাদিপশুকে আক্রমণ করতে না পারে, সে লক্ষ্যে ভ্যাকসিন বা টিকাদানের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের দেশের বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিন তৈরিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে একদিকে যেমন বিদেশ নির্ভরতা কমবে, অন্যদিকে দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। বিজ্ঞানীদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান দিয়ে প্রাণিসম্পদ খাত আরও বিকশিত ও সমৃদ্ধ হবে।
এলআরআইকে দক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়তে রিসার্স পুল গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করে উপদেষ্টা বলেন, যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী রাতদিন পরিশ্রম করেন, তাদের ইনসেন্টিভ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমরা এলআরআই-এর ভ্যাকসিন উৎপাদন কমপক্ষে তিনগুণ বাড়াতে চাই।
দেশে পশুজাত খাবারের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য আঞ্চলিক ল্যাব স্থাপনের গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমরা প্রান্তিক মানুষের নিকট সেবা পৌঁছানোর জন নিরাপদ চেইন সিস্টেম বানাতে চাই।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সভাপতিত্বে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ড. মো. মোস্তফা কামাল। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল-সহ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গবেষক এবং বিজ্ঞানীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন