খুঁজুন
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ, ১৪৩১

‘আয়নাঘর’ শেখ হাসিনার গোপন কারাগার

ভয়ংকর আয়নাঘর নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪, ৪:১৬ অপরাহ্ণ
ভয়ংকর আয়নাঘর নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপর তার শাসনামলে কুখ্যাত আয়নাঘরে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নির্যাতনের বিবরণ প্রকাশ্যে এসেছে। আর এই বিবরণগুলো এসেছে সেসব বন্দিদের কাছ থেকে যাদের হাসিনা আমলে দীর্ঘদিন আটক রাখা হয়েছিল সেই গোপন বন্দিশালায়। প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস কথা বলেছে আয়নাঘর থেকে মুক্ত কয়েকজনের সঙ্গে। নিউইয়র্ক টাইমসের সেই প্রতিবেদনের কিছু অংশ তুলে ধরা হলো।

আয়নাঘর থেকে মুক্তি পাওয়া বহু মানুষ দাবি করেছেন, যে ভূগর্ভস্থ কক্ষে তাদের রাখা হত তার ওপর সকালে সামরিক কুচকাওয়াজের শব্দ শোনা যেত। বাংলাদেশ সরকারের সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান ছিলেন সেই বন্দিদের এক জন।

জামান জানান, তিনি ৪৬৭ দিন বন্দি ছিলেন আয়নাঘরে। মারুফ একসময়ে কাতার ও ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছিলেন। তার দাবি অনুযায়ী, ঢাকার সামরিক গ্যারিসনে অবস্থিত এই আয়নাঘর।

জামান দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার মাথা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হতো এবং মুখে বারবার ঘুষি মারা হতো। তাকে তার সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ব্লগে পোস্ট করা লেখাগুলোর কপি দেখানো হতো এবং নির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ নিয়ে প্রশ্ন করা হতো।

জিজ্ঞাসাবাদকারীরা তাকে বলেছিল, ‘আমরা আপনার পোস্ট ছাপাতে এত টাকা খরচ করেছি। আপনার বাবা কি আমাদের এই সব টাকা ফেরত দেবেন?’

আয়নাঘরের আরেক বন্দি ছিলেন ব্যারিস্টার আহমদ বিন কাসেম। ২০১৬ সালে তাকে আটক করা হয়। কাসেমকে জানালাবিহীন নির্জন কারাগারে চব্বিশ ঘন্টা বেঁধে রাখা হয়েছিল। তাকে প্রায় সব সময় ধাতব হাতকড়া পরিয়ে রাখা হতো।

গোপন বন্দিশালার আরেক বন্দি ছিলেন সাবেক উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা আবদুল্লাহিল আমান আজমি। আয়নাঘরে বিরামহীন যন্ত্রণা ভোগের বর্ণনা দিয়েছেন তিনি নিউইয়র্ক টাইমসকে।

আমান আজমি আট বছর বন্দি ছিলেন। আজমির অনুমান, ওই কয়েক বছরে অন্তত ৪১ হাজারবার তার চোখ বাধা হয়েছে এবং হাতকড়া পরানো হয়েছে।

আজমি নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, ‘আমি আল্লাহর আকাশ, সূর্য, ঘাস, চাঁদ, গাছ দেখিনি। সেখানে আমি যে অপমান এবং বেদনা অনুভব করেছি তা ব্যাখ্যা করতে পারব তার ভাষা নেই।’

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা জানান, বন্দি অবস্থায় তিনি মর্যাদাপূর্ণ মৃত্যুর জন্য প্রার্থনা করেছিলেন।

শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ঢাকার চিঠি পেয়েছে নয়াদিল্লি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৫:১৭ অপরাহ্ণ
শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ঢাকার চিঠি পেয়েছে নয়াদিল্লি

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ঢাকার পাঠানো চিঠি (নোট ভারবাল) পেয়েছে নয়াদিল্লি। বার্তাসংস্থা এএনআই এমনটি জানায়।

সোমবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, তারা হাসিনার প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত একটি নোট ভারবাল পেয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, আমরা নিশ্চিত করছি যে আজ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে একটি নোট ভারবাল পেয়েছি, যা একটি প্রত্যর্পণ অনুরোধের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই মুহূর্তে এ বিষয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।

এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ভারতের কাছে নোট পাঠায় বাংলাদেশ। সোমবার দুপুরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিচারের সম্মুখীন করার জন্য বাংলাদেশ ফেরত চেয়েছে। এটা ভারতকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতকে নোট ভারবাল পাঠানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে হত্যাকাণ্ড, গত ১৬ বছরে গুম-ক্রসফায়ার, পিলখানা হত্যাকাণ্ড এবং মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড— এসব মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এসেছে। শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিসভা, বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা চলমান।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তার সুনির্দিষ্ট অবস্থান নিয়ে ভারত সরকার এখনো কিছু বলেনি।

আতশবাজি ও রাহাতের সুরের মূর্ছনায় শুরু বিপিএল উন্মাদনা

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৫:১৫ অপরাহ্ণ
আতশবাজি ও রাহাতের সুরের মূর্ছনায় শুরু বিপিএল উন্মাদনা

শানাইয়ের আওয়াজ ভেসে আসতেই পুরো স্টেডিয়ামে করতালি। মঞ্চে উঠে রাহাত ফতেহ আলি খান বললেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’।

শেষ হলো দীর্ঘ অপেক্ষারও। বিপিএল মিউজিক ফেস্টও যেন পেল পূর্ণতা। একের পর এক গানে এরপর শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রাখলেন পাকিস্তানি এই শিল্পী।

কখনো ‘আফরি, আফরি’, কখনো রাহাত গাইলেন রুনা লায়লার গান। মাঝে তিনি মাইক ছাড়লেন ছেলে শাহ জামান আলি খানকেও। তার সুর খুঁজে ফিরলো ওস্তাদ নুসরাত ফতেহ আলি খানকে। এসবের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়ে গেল এবারের বিপিএল যাত্রা।

২০১২ সালের বিপিএলের থিম সং গেয়েছিলেন ভারতীয় শিল্পী বাপ্পি লাহেড়ি। এরপর ভারতীয় শিল্পীদের আধিপত্যই ছিল বেশি। কয়েক বছর বিরতি দিয়ে এবার আবারও বিপিএলের উদ্বোধনে দেখা গেল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বড় আয়োজন।

সোমবার ঢাকার শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিকেল ৩ টা ৫০ মিনিটে শুরু হয় ‘বিপিএল টি-টোয়েন্টি মিউজিক ফেস্ট’। প্রথমে জনপ্রিয় ব্যান্ড অ্যাভয়েড রাফা মঞ্চে উঠেন। তার পরিবেশনার পর দেওয়া হয় নামাজের বিরতি।

এরপর মঞ্চে উঠেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। ‘নতুন বাংলাদেশে নতুন বিপিএল’ বলে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। জুলাই অভ্যূত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পাওয়ার কথাটি স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।

তাদের বক্তব্যের পর মঞ্চে উঠেন জেফার, মুজা ও সঞ্জয়। এক ঘণ্টা একসঙ্গে পারফর্ম করেন তারা। সঞ্জয়ের ডিজে মিউজিক দিয়ে তাদের পরিবেশনা শুরু করে জেফার গেয়েছেন ‘ঝুমকা’ গান। মুজা গেয়েছেন ‘নয়া দামান’,
‘আসি বলে গেল বন্ধু’, ‘ঢোল এর তালে’, ‘বেনী খুলে’।

তাদের পরিবেশনার পর মঞ্চে আসেন মাইলস। তাদের পারফরম্যান্সের পর আলোক ঝলকানির খেলা শুরু হয় মিরপুরে। আতশবাজিতে রঙিন হয়ে উঠে পুরো স্টেডিয়ামের চারপাশ। সবার শেষে মঞ্চে উঠেন রাহাত ফাতেহ আলি খান।

জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিসিবিতেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসে পুরো দেশের মতোই। ফারুক আহমেদের বোর্ড শুরু থেকেই বিপিএলে বড় আয়োজনের চেষ্টা করে আসছিল। অবশেষে শানাইয়ের সুর, আতশবাঁজির রঙিন ছোঁয়া ও রাহাত ফতেহ আলির সূরের মূর্ছনায় শুরু হলো বিপিএল উন্মাদনা।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানি ছাড়াল ৪৫ হাজার ৩০০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৫:১২ অপরাহ্ণ
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানি ছাড়াল ৪৫ হাজার ৩০০

ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় রবিবার ভোর থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ৫৮ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৮৪ জন। সোমবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইতোমধ্যে এ অভিযানে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েলি বাহিনীর ১৪ মাসব্যাপী অভিযানে গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৫ হাজার ৩১৭ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৭১৩ জন।

“নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কারণ ভবনের ধ্বংস্তূপের তলায় অনেকে চাপা পড়েছেন। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও জনবলের অভাবে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি”, উল্লেখ করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।

২০২৩ সালে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা। জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করার আগ পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।