খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫, ১৩ চৈত্র, ১৪৩১

সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪, ২:৩৫ পূর্বাহ্ণ
সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান গ্রেফতার

সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদকে রোববার দিবাগত রাতে বনানী থেকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এর যেকোন একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।

এর আগে সিন্ডিকেট করে অর্থ আত্মসাৎ ও মানবপাচারের অভিযোগে সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে গত ৩ সেপ্টেম্বর পল্টন থানায় একটি মামলা হয়। এতে আসামি হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ আরও ১০৩ জনের নাম যুক্ত করা হয়েছে।

জানা যায়, পল্টন থানায় আলতাফ খান নামে এক ব্যক্তি নিজেকে ভুক্তভোগী দাবি করে মামলাটি করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে ২৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনেন তিনি।

মামলার বাদী আফিয়া ওভারসিজের মালিক আলতাফ খান অভিযোগ করেন, মন্ত্রী নিয়মের বাইরে গিয়ে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে চেয়েছিলেন। তাদেরকে জোরপূর্বক জিম্মি করে তারা টাকা নিয়েছেন। তার ব্যক্তিগত ১২ কোটি টাকা জোর করে আদায় করেছেন মন্ত্রী। এই সিন্ডিকেটে তৎকালীন সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন তার ছেলেকে দিয়ে ব্যবসা করেছেন।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ইমরান আহমদকে জনসমুক্ষে দেখা যায়নি। ইমরান আহমদ ১৯৮৬ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত আছেন। তিনি তৃতীয় (১৯৮৬), পঞ্চম (১৯৯১), উপনির্বাচন (সেপ্টেম্বর ১৯৯৬), নবম (২০০৮), দশম (২০১৪) এবং একাদশ জাতীয় সংসদ (২০১৮) নির্বাচনে সিলেট-৪ (জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানিগঞ্জ) আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহীন শিকদারে অতিষ্ঠ জনগণ, সমাধান কোথায় ? (পর্ব-১)

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫, ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ
শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহীন শিকদারে অতিষ্ঠ জনগণ, সমাধান কোথায় ? (পর্ব-১)

রাজধানী সহ সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, রাহাজানির মহড়া। এসব সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ আটক হলেও অধিকাংশই রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। সবমিলিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ, রীতিমতো আতঙ্কে দিনপার করছেন ভুক্তভোগী পরিবার গুলো। তবে দীর্ঘ ১৫-১৭ বছর যাবত যারা এমন সন্ত্রাস চালিয়ে আসছে, তাদেরকেও ধরতে না পারার অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে রাজধানীর মিরপুর, কাফরুল, ভাষানটেক সহ আশপাশের এলাকাগুলোতে এক আতঙ্কের নাম কুখ্যাত সন্ত্রাসী শাহীন শিকদার। যার ভয়ে কোনো মামলা তো দূরের কথা- অভিযোগ করতেও সাহস পায় না সাধারণ মানুষ।

বিভিন্ন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের আগস্ট মাস থেকে অনুসন্ধান শুরু করি আমরা। বিগত সময়ের তুলনায় সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, কাফরুল, ভাষানটেক, পল্লবী সহ বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি দিন দিন বেড়েই চলেছে। চাঁদা না দিলে গুম, খুন, হত্যার চেষ্টার আতঙ্কে আছে অসংখ্য পরিবার। অবশেষে বাধ্য হয়ে তারা সাংবাদিকদের কাছে তাদের অসহায়ত্বের কথা বর্ণনা করে।

অভিযোগ এসেছে, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে রাজধানীতে বিভিন্ন ব্যক্তি, পরিবার, প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির অভয়ারণ্যে পরিনত করেছে শাহীন শিকদার নামের এক সন্ত্রাসী। অবশ্য শাহীন শিকদার নিজেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ফোন করেন সকলকে। এতেই আতঙ্কের মাত্রা বেড়ে যায় ভুক্তভোগীদের। আর এসব অপকর্মে সহায়তা করে মিরপুর, কাফরুলের অসংখ্য গ্যাং।

নাম পরিচয় গোপন রেখে শাহীন শিকদারের ভয়াল অধ্যায়ের বর্ণনা করেন অসংখ্য মানুষ। শুধুমাত্র মিরপুর, কাফরুল, ভাষানটেকেরই ১৯ জন ভুক্তভোগী তাদের দুর্দশার কথা স্বীকার করেন। এক ভুক্তভোগী বলেন, “শাহীন সিকদার +১৬১৩৫০৫০১৭০, +১৬১৩৭০২৫২৬২ নাম্বার থেকে ফোন করে চাঁদা চায়। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে পরিবারের বাচ্চা কিডন্যাপ, খুন করার মত হুমকি দেয়। দলবল নিয়ে ঘরে এসে কুপিয়ে যাবে বলে নানা রকমভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়। কাফরুল এলাকার অনেক পরিবার আছে যারা গোপনে চাঁদা দেয় শাহীনের হুমকির ভয়ে। এমনকি থানায় মামলা বা অভিযোগ করলে থানা থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই ফোন করে, মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দেয়। অর্থাৎ পুলিশের মধ্যেও তার সোর্স আছে।”

আরেক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বলেন, “শাহীন শিকদারের বড় একটা গ্যাং চাঁদাবাজির নেপথ্যে কাজ করে। বিভিন্ন অভিজাত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আবাসিক এলাকায় তার সোর্স বা ইনফরমার আছে। কাফরুলে কয়েকটি সন্ত্রাসী ঘটনায় মৃত্যুর ভয় নিয়েই কাফরুল থানায় মামলা করেছে তারা। মামলার আলোকে শাহীন সিকদার গ্যাংয়ের দুই আসামি রবি শেখ ও জুম্মনকে আইনের আওতায় আনা হয়। তবে তার দলের মুরাদ, বিপ্লব, অভি, হেলেনা, বাচ্চু, মিরপুর ১১ স্বর্ণপট্টি বিহারি ক্যাম্পের আসিফ সহ অনেকে পলাতক আছে। মূলত আসিফ টাকা ছিনতাই করলে তার পরিবার চালাকি করে আসিফকে বাঁচাতে রিহাবে পাঠিয়েছে।

শাহিন সিকদার কিছুদিন আগে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটক হয়েছে। তবে শাহীনকে ভারতের জেল থেকে বাংলাদেশে এনে তাকে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। কারণ সে ছাড়া পেলেই অভিযোগকারী সবাইকে মেরে ফেলবে।”

একান্ত নির্জনে মুখ ঢেকে, পরিচয় গোপন রাখার শর্তে সাংবাদিকদের হাত ধরে অনুরোধ করে ৪ জন ভুক্তভোগী বলেন, শাহীন ও তার গ্যাংয়ের নামে খুনসহ ৫০ টিরও বেশি মামলা আছে। বিদেশ থেকে ফোন করে চাঁদা চেয়ে মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলছে শাহীন। তার কথায় রাজি না হলে দেশে তার গ্যাং দিয়ে হামলা, মারধর করা, কুপিয়ে জখম করাই এদের কাজ। এমনকি মেরেও ফেলে। শাহীন ও তার গ্যাংয়ের উপযুক্ত শাস্তি হলে কাফরুল ভাষানটেক সহ রাজধানীবাসি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে। আপনারা আমাদেরকে বাঁচান ভাই।”

একজন মা তার সন্তানকে কুপিয়ে জখম করার ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে জানান, “শাহীনের দুইজন সন্ত্রাসী জেলখানার ভিতরে যাওয়ার পর বাকি সদস্যরা আরও তৎপর হয়ে উঠেছে। বিভিন্নভাবে যারা মামলা করেছে তাদের জীবনকে বিষন্ন করে তোলে এরা। সবসময় মানুষকে হুমকি-ধান্তির মধ্যে রাখে। তাদেরকে এমন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক- যাতে আর কখনো মানুষ হত্যা করার মত কোন কার্যক্রম না করতে পারে। তাদে ফাঁসির ব্যবস্থা করা হোক।”

কাফরুলের এক হোটেল ব্যবসায়ীর আত্মীয় বলেন, “শাহীন ভারতে আটক হয়েছে। তাই হয়তো কিছুদিন আমরা একটু স্বস্তিতে আছি, তবুও তার চেলাপেলা, গ্যাং থেমে নেই। বড় কথা হলো ও (শাহীন) যদি এবার ইন্ডিয়া থেকে ছাড়া পেয়ে যায়, তাহলে কাফরুল, ভাষানটেক, মিরপুরের জনগণকে কুপিয়ে তাদের জীবন বিপন্ন করে তুলবে। কারণ আমরা কিছু মানুষ থানা ও সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করাই ওরা ব্যাপক ক্ষিপ্ত। মানুষের সাধারণ জীবন ব্যাহত করে ফেলবে এটা নিশ্চিত। তাই আমরা চাই, শাহীন শিকদারের মতো জঘন্য অপরাধীর আইনের আওতায় এনে ফাঁসির ব্যবস্থা করা হোক।”

কিছু মহিলা ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, “কাফরুলে পুলিশ স্টাফ কলেজ সংলগ্ন, পুলিশ কনভেনশন হলের পাশে জিরো পয়েন্টে সন্ত্রাসী জুম্মনের মা জরিনার একটা চায়ের দোকান আছে। জুম্মনের মা বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করতে তার ছেলেকে সাহায্য করে। এমনকি ছুরি, চাপাতি, দেশীয় অস্ত্র ওই জরিনার দোকানেই থাকে। মূলত ছোট দোকানটার আড়ালে জরিনা সেখানে ইয়াবা, গাজা সহ মাদক বিক্রি এবং অনেক যায়গায় সাপ্লাই দেয়। সেখানে মিরপুর ১১, স্বর্নপট্টি সংলগ্ন বিহারি ক্যাম্পের আসিফ নিয়মিত যাতায়াত করে। ওখানে থেকে বিহারি আসিফ মাদক নিয়ে নিজে সেবন করে এবং মিরপুর বিক্রি করে। বিশেষ করে মিরপুর ১১ ডুইপ প্লটে হেরোইন মোস্তাকের ছেলে ইয়াবা সুমন ও তার ভাইদের কাছে মাদক পাঠায় আসিফ। আসিফ লোকজনকে বলে- ও (বিহারি আসিফ) নাকি সেকেন্ড থানা। শাহীনের এসব সন্ত্রাসী বিভিন্ন ব্যক্তিকে, কুপানো, মারধর করা, জিম্মি করা, কিডন্যাপ করার কাজ করে থাকে। তারা চুক্তিতেও মানুষ কোপায়। কি ভয়ংকর বিষয় ভাবা যায় ?”

২২ বছর বয়সী একজন শিক্ষার্থী বলেন, “ভাই শাহীনের লোক শুধু কাফরুলে না, পুরো মিরপুর জুড়েই আছে। আমি মিরপুর ১১ প্যারিস রোডের পাশে কাইল্লার বস্তির মাঠ বা বর্তমান যে খেলার মাঠ আছে, ওখানে যায়। মিরপুর ১১, স্বর্নপট্টির ওই বিহারি আসিফ তার সাথে থাকা ৩ জনকে নিয়ে আমাকে মারধর করে আমার মানিব্যাগ, দুইটা মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। আসিফের সাথে মুরাদ ও জুম্মনও ছিলো। সেখানে অনেকে আসিফকে দেখলেও ভয়ে কেউ আমাকে সাহায্য করেনি। এমনকি মিরপুর ১৩ তে ইয়াবা আসিফ বা হিরোন্সি আসিফ তার ৩ জন লোক নিয়ে আবারও একদিন আমাকে ধরে। ওইদিন ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে লোকজন চলে আসলে ২ হাজার নিয়ে দৌড় দেয় আসিফ। আপনি জানলে অবাক হবেন- আসিফ পল্লবী থানার পুলিশকে ভাঙিয়ে বলে ” আমি সেকেন্ড থানা”। পুলিশের কাছে গিয়ে বলিস আসিফ ধরেছে। অর্থাৎ সব যায়গায় শাহীনের লোক আছে।”

ঠিক এভাবেই অসংখ্য ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন সন্ত্রাসী শাহীনের বিরুদ্ধে। তবে পরিবার ও নিজের জীবনের ভয়ে সরাসরি থানা বা সাংবাদিকদের কাছে তারা অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছে না। তারা গোপনে মিডিয়ার মাধ্যমে এই অভিশাপ থেকে পুলিশের সাহায্য কামনা করছে।

খুবই অবাক করার বিষয়- ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শাহীন রাজধানীর এক ব্যক্তিকে সরাসরি ফোন করে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। এমন কয়েকটি অডিও রেকর্ড আমাদের হাতে এসেছে। সেখানে শাহীন চাঁদা চেয়ে হুমকি দিয়ে বলছে; “আপনি কিন্তু দেরি করছেন, আপনার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। মানুষের কথা না শুনে দ্রুত আমার সাথে যোগাযোগ করেন, দেখা করেন। টাকা দিয়ে দেন তাহলে আর সমস্যা হবে না। আপনি এমপি, মন্ত্রী, প্রশাসন যা-ই করেন না কেনো, কোনো লাভ নেই। দেখেন প্রধান উপদেষ্টারে আমারে ফোন দিয়াইতে পারেন নাকি… তবুও কোনো লাভ নেই। কথা না শুনলে ক্ষতি কিন্তু আপনি ও আপনার পরিবারেরই হবে। এর আগে যারা আমার কথা শুনেনি, তারা কেউ মেডিকেলে গেছে, কেউ কবরে গেছে। পরে মেডিকেল দেয় ২০ লাখ, আমারে দেয় ৩০ লাখ। আপনার কাছে কমই চাইছি, ৫০ লাখ। তাই ভালোই ভালোই আমার সাথে যোগাযোগ করেন, টাকা দেন।”

ঠিক এভাবেই টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের কাছে ফোন করে সরাসরি চাঁদা চাই শাহীন। চাঁদা না দিলে মারপিট, কুপিয়ে জখম করা, পরিবারের সদস্যদের হেনস্তা ও হামলা, স্ত্রী সন্তানকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি সহ নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে শাহীন ও তার গ্যাং।

সম্প্রতি কাফরুল থানা পুলিশ শাহীনের দুই গ্যাং সদস্যকে আটক করে। জানতে চেয়ে কাফরুল থানার এসআই শরিফুজ্জামান শরিফকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। এমনকি তিনি পরবর্তীতে ফোনকল ব্যাকও করেন নি।

দর্শক এটা ছিলো শাহীন ও তার গ্যাংয়ের চাঁদাবাজি, রাহাজানি, সন্ত্রাসের কিছু নমুনা মাত্র। যেখানে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ শাহীন ও তার গাংয়ের সবার ফাঁসি চান। ভারতের জেল থেকে ছাড়া পেলেও শাহীন যেনো বাইরে না থাকে, সে বিষয়ে তারা পুলিশের সহায়তা চান। আমাদের পরের পর্বে আসবে শাহীনের কালো জগতের আরও বিস্তারিত তথ্য।

তুরস্কে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ শেষ, টিকে গেলেন এরদোগান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫, ২:১১ পূর্বাহ্ণ
তুরস্কে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ শেষ, টিকে গেলেন এরদোগান

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে মেয়র ইকরাম ইমামোগলুকে গ্রেফতার করার পর তুরস্কজুড়ে যে নজিরবিহীন বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, তা শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়েছে। গত ১৯ মার্চ থেকে টানা ৭ দিন আন্দোলন করার পর বিক্ষোভকারীরা বাড়ি ফিরে গেছে। অর্থাৎ ষড়যন্ত্রের ইতি ঘটিয়ে বিজয়ী হলেন আধুনিক সুলতান খ্যাত রিসেপ তায়্যেপ এরদোয়ান।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বিক্ষোভের সমাপ্তি ঘোষণা করেন দেশটির প্রধান বিরোধীদল সিএইচপির নেতা ওজগুল ওজেল। বলেন, ‘আমরা ৭ দিন সফলভাবে আন্দোলন করেছি। আমরা এখন এই ময়দান থেকে চলে যাব। আন্দোলন নতুন ফরমেটে যাবে। আমরা ইস্তাম্বুলের প্রতিটি ওয়ার্ডে ইফতার মাহফিল করব। আমরা ঈদের দিন ঈদ জমায়েত করব। আজ ময়দান থেকে চলে যাওয়ার সময় যদি আমাদের কোনো নেতাকর্মীর ওপর আবারও পিপার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়, আবারও লাঠিচার্জ করা হয়, তাহলে আমরা ৫ লাখ লোক নিয়ে আবারও ময়দানে ফিরে আসব। আমরা মাথানত করিনি। করব না’।

এদিকে সরকার পতনের এই আন্দোলনকে ঠান্ডা মাথায় মোকাবিলা করেছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। সমঝোতার মাধ্যমে কোনো রক্তপাত ছাড়াই এতবড় আন্দোলনকে থামিয়ে দিয়ে তিনি তুরস্কের রাজনীতির অপ্রতিদ্বন্দ্বী খেলোয়াড় হিসাবে নিজেকে আবারও প্রমাণ করলেন। আপাতত তুরস্ক বড় ধরনের অনিশ্চয়তা ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা থেকে মুক্তি পেল।

দুই বারের নির্বাচিত ইস্তাম্বুলের মেয়র ইমামোগলু দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করার পর সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল তুরস্কের প্রধান বিরোধীদল সিএইচপি। টানা ৭ দিন ধরে ইস্তাম্বুল সিটি কর্পোরেশন অফিসের সামনে বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মীকে হাজির করাতে সক্ষম হয় দলটি। এতে তুরস্কের মুদ্রার মান কমে গিয়েছিল ৬ শতাংশ। এই সফলতা মেয়রের কারামুক্তির আন্দোলনকে এরদোগানের পতন আন্দোলনে রূপান্তর করে।

বিশ্ব মিডিয়ার চোখে আন্দোলন:

তুরস্কের এরদোগান বিরোধী এই আন্দোলন বিশ্ব মিডিয়ায় ব্যাপক কাভারেজ পায়। সে সঙ্গে বাংলাদেশি মিডিয়াও গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করে। এরদোগানের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা বিশ্লেষণ চলতে থাকে। কেউ কেউ এটিকে এরদোগানের ক্ষমতার শেষ সময় বলে প্রচার করেন। বাংলাদেশি মিডিয়ায় যেসব সংবাদ প্রচার হয় তার বেশিরভাগ পশ্চিমা মিডিয়ার সংবাদের অনুবাদ। যে প্রতিবেদনগুলোতে বেশিরভাগ সময় উঠে এসেছে এরদোগান বিরোধীদের বক্তব্য। তবে এরদোগানের সমর্থক বা তুরস্কের সাধারণ জনগণের বক্তব্য খুব একটা চোখে পড়েনি। ফলে প্রায়ই তুরস্কের সঠিক চিত্রটি ধরতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশের মিডিয়া।

আন্দোলন ব্যর্থ হলো যেভাবে:

এই আন্দোলনে বিরোধীদল তাদের প্রচুর নেতাকর্মীদের জড়ো করতে সফল হলেও সাধারণ জনগণকে খুব একটা টানতে পারেনি। ফলে এটি গণআন্দোলনে রূপ নেয়নি। কারণ ইস্তাম্বুলের মেয়রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনেক দিনের এবং তাকে মেয়রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথাও সোশ্যাল মিডিয়াতে চাউর ছিল। তার দলের থেকে কেউ তাকে দুর্নীতি মুক্ত বলতে পারেনি। বরং তার দলের একটি অংশই গোপনে তার দুর্নীতির দলিল দস্তাবেজ তুলে দিয়েছে আদালতের হাতে।

উদাহরণ স্বরূপ- একটি কোম্পানিকে ৩২২ মিলিয়ন লিরার টেন্ডার দিয়েছে ইস্তাম্বুল সিটি কর্পোরেশন, সেই একই হিসাব থেকে ২ দিন পর ইমামোগলুর ব্যক্তিগত কোম্পানির অ্যাকাউন্টে ৫০ মিলিয়ন লিরা প্রবেশ করেছে। এই জাতীয় অনেক দুর্নীতির ফাইলগুলো এখন ঘুরেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই প্রমাণগুলোকে মিথ্যা বলতে পারছে না বিরোধীদল। ইমামোগলুর বিরুদ্ধে ৫৫৬ বিলিয়ন লিরার ফান্ড তসরুপ করার অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ মানুষ বলছে, তদন্ত হোক, নির্দোষ হলে ছাড়া পাবে, দোষী হলে সাজা হবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

একদিকে দুর্নীতির প্রমাণ অন্যদিকে দলের ভেতরের অন্তর্কোন্দলে এই আন্দোলন টিকতে পারেনি। সেই সঙ্গে তুরস্কে এই মুহূর্তে এরদোগানের বিরুদ্ধে বড় কোনো জনঅসন্তোষ নেই। অর্থনীতি আগের চেয়ে ভালো। রপ্তানি আয় বাড়ছে। রিজার্ভ ১৭০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ফলে নির্ভার ছিল এরদোগান।

যেভাবে আন্দোলন শান্ত করলেন এরদোগান:

প্রথম দিকে বিরোধীদলের এই আন্দোলন ছিল চমত্কার সুশৃঙ্খল। প্রতিরাতে নিয়ম করে তারা সিটি অফিসের সামনে জড়ো হতো। দিনে সবাই যার যার কাজে চলে যেত। কিন্তু পরবর্তীতে তুরস্কের নিষদ্ধি ঘোষিত কিছু দলের নেতাকর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে। পুলিশ হাজারের বেশি (১,১৩৩) বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে।

পরে সরকারের সঙ্গে বিরোধীদলের একটি সমঝোতা হয়। সেখানে সিটি মেয়র কারাগারে থাকায় সেখানে সরকারি প্রশাসক নিয়োগ না দিয়ে বরং বিরোধীদলের থেকেই একজনকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র পদে নির্বাচনের ব্যাপারে অঙ্গীকার করা হয়। এতো সিটি কর্পোরেশন কার্যত বিরোধীদলের নিয়ন্ত্রণেই থাকছে। এতে সন্তুষ্ট হয়ে আন্দোলন সমাপ্তির ঘোষণা দেয় প্রধান বিরোধীদল। এতে একদিকে যেমন এরদোগানের অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পর্দার আড়ালে চলে গেল। একই সঙ্গে তুরস্ক বড় ধরনের ঝামেলা থেকে রেহাই পেল। শক্তি প্রয়োগ না করে কেৌশলে বিরোধীদলকে ম্যানেজ করে ফেলেছেন এরদোগান।

তুরস্কে আগামী দিনের রাজনীতি:

আসলে সময়টা এরদোগানের পক্ষে ছিল। এই আন্দোলনে বিরোধীদল অন্য কোনো বিরোধীদলের সমর্থন পায়নি। কুর্দিরা সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় আছে। তাই আন্দোলনে যোগ দেয়নি। অন্য দলগুলোও সিটির কাজের ভাগ না পাওয়ার অভিমানে আন্দোলনে আসেনি। এদিকে তুরস্কে নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছে ট্রাম্প। এরদোগানকে বলেছেন ভালো লিডার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান আমেরিকা সফরে গেছেন। সেখানে দুই দেশের মধ্যে উষ্ঞ সম্পর্কের আভাস পাওয়া গেছে। সিরিয়ায় ইরানি প্রভাব ঠেকাতে এরদোগানকে পাশে দরকার ট্রাম্পের।

সামনে এরদোগানের প্রধান চ্যালেঞ্জ মুদ্রাস্ফিতি আরও কমিয়ে আনা। অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করা। ততদিনে মানুষ ইমামলুর প্রতি মানুষের আবেগ কমে আসতে পারে। সুবিধাজনক পরিস্থিতি দেখতে আগাম নির্বাচন দিয়ে নিজেকে আবারও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী করবেন এরদোগান। এই ধরনের জল্পনা রয়েছে তুরস্কে। বড় কোনো ঝামেলা তৈরি না হলে তুরস্কে আবারও এরদোগানই আসছেন।

সিংড়ায় স্বাধীনতা দিবসে বিএনপির আলোচনা সভা

মোঃ কুরবান আলী, সিনিয়র রিপোর্টার
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫, ২:০০ পূর্বাহ্ণ
সিংড়ায় স্বাধীনতা দিবসে বিএনপির আলোচনা সভা

নাটোরের সিংড়ায় মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা করেছে উপজেলা ও পৌর বিএনপি।

বুধবার (২৬ মার্চ) বিকেল ৪টায় সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এ কর্মসূচি পালন করে দলটি।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এস এম নইমুদ্দিন মন্টুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, সিংড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী দাউদার মাহমুদ।

এছাড়াও বক্তব্য দেন পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তায়েজুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান, ডাহিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন, পৌর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি প্রফেসর খালেকুজ্জামান, উপজেলা মৎস্যজীবি দলের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন বাবু।

এসময় উপস্থিত ছিলেন যুবদল নেতা আব্দুল্লাহ আল মমিন, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব আমিনুল হক, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুল মোমিনীন নিশান প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানসহ স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়।