খুঁজুন
সোমবার, ২ জুন, ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে, একে ধরে রাখতে হবে: তারেক রহমান

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:৫৯ অপরাহ্ণ
জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে, একে ধরে রাখতে হবে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং হাজারো শহিদের রক্তের বিনিময়ে ২০২৪ সালের দেশ ও জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধে গণতন্ত্রকামী জনগণ বিজয়ী হয়েছে। হাজার হাজার আহত মানুষের আর্তচিৎকার আর লাখো শহিদের রক্তস্নাত জমিনে জাতীয় যে ঐক্য গড়ে উঠেছে, তা যে কোনো মূল্যে ধরে রাখতে হবে। বিশ্বাস করি, জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা গেলে, কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র করে কেউ আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে সক্ষম হবে না।

প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের রেখে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিএনপির পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সরকারকে আরও সতর্ক হয়ে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও সংবিধানের সঙ্গে যুক্ত বিষয়ে তাড়াহুড়া না করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শও দেন তারেক রহমান।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে ‘শারদীয় দুর্গোৎসব-উত্তর শুভেচ্ছা বিনিময়’ অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি বরাবরই নাগরিকদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার ওপরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। কারণ বিএনপি মনে করে একটি রাষ্ট্রে ভোটবিহীন নাগরিকের অবস্থা যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র এবং প্রশিক্ষণবিহীন একজন সৈনিকের মতোই নাজুক। নাগরিকের ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করা গেলে, রাষ্ট্র এবং সমাজে নাগরিকদের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়।’

তিনি বলেন, ‘মাফিয়া সরকারের রেখে যাওয়া ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে মেরামত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে। ১৫ বছরের জঞ্জাল ভেদ করে চলমান সংস্কার কার্যক্রম অবশ্যই একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি, এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করতে গিয়ে জনগণের প্রতিদিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করা না গেলে জনগণের রাজনীতি এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার বিষয়টি উপেক্ষিত থাকলে অন্তর্র্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম প্রশ্নের মুখে পড়বে। ফলে এই সরকারের কার্যক্রম অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এজেন্ডা নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করে দিতে পরাজিত অপশক্তি এবং শাসন-প্রশাসনে থাকা তাদের দোসররা নানা কৌশলে সক্রিয় হয়ে উঠছে। এই কারণে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ভিন্ন ভিন্ন দলীয় কর্মসূচি থাকলেও একটি বিষয় বিএনপিসহ সবাই আমরা একমত। মাফিয়া চক্রের সুবিধাভোগীদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রেখে অন্তর্র্বর্তী সরকারের পক্ষে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ নয়।’

তিনি বলেন, ‘যারা সরকারে রয়েছেন এবং গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, আমরা যারা এই সরকারের সমর্থনে রয়েছি আমাদের প্রত্যেকটি কাজ যথাযথ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা অত্যন্ত জরুরি। যাতে পরাজিত অপশক্তি কোনো সুযোগ নিতে না পারে। বিএনপি মনে করে কোনোভাবেই অন্তর্র্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। কারণ এই সরকারের ব্যর্থতা হবে গণতন্ত্রের ও বাংলাদেশের পক্ষের শক্তির ব্যর্থতা।’

দুর্গোৎসব-উত্তর শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে দুপুর থেকেই সহস্রাধিক হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ লেডিস ক্লাবে জড়ো হন। এ সময় ঢোল বাজিয়ে নেচে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে দেখা যায় তাদের। বেলা সাড়ে ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতারা বিগত সময়ে তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা দেন। তারা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচারের দাবি করেন। অতীতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হাতে তারা নির্যাতিত হয়েছেন বলেও জানান।

তারেক রহমান বলেন, ‘মাফিয়া সরকারের পলায়নের পর তাৎক্ষণিক পরিস্থিতিতে গঠিত অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহল ছাড়াও বর্তমানে খোদ সরকারের মধ্যে নানা রকম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ চলছে। অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার কেন বর্তমান সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছে, কিংবা বর্তমান সরকার কি বিপ্লবী সরকার কেউ কেউ এ ধরনের প্রশ্ন তুলেছেন। অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বর্তমান পর্যায়ে এসে তাদের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে যে ধরনের প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, এই ধরনের বিতর্ক সরকারের গতিশীলতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। সরকারের লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার কারণ হতে পারে। এই কারণে বিএনপি মনে করে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো সরাসরি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কিংবা সরাসরি সংবিধানের বিধিবিধানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া পরিহার করে একটি সুচিন্তিত, সুবিবেচিত ফলপ্রসূ পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে ভবিষ্যতে যে কোনো জটিল প্রশ্ন কিংবা পরিস্থিতি মোকাবিলাও সহজ হবে।’

হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের একটিই বার্তা বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী, সংশয়বাদী কিংবা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী এই বাংলাদেশ আপনার-আমার-আমাদের সবার। তথাকথিত সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু নয়, এই জাতি রাষ্ট্রের, আমাদের একটাই পরিচয় আমরা সবাই বাংলাদেশি। এই দেশের নাগরিক হিসাবে আপনার যতটুকু অধিকার, আমারও ততটুকুই অধিকার। সবার আগে বাংলাদেশের স্বার্থই হবে সবচাইতে বড়। রাষ্ট্র-রাজনীতি, শাসন-প্রশাসন পরিচালনায় আমরা গুরুত্ব দেব মেরিটোক্রেসিকে। সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে এটাই বিএনপির নীতি ও রাজনীতি।’

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরে নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল, যা আওয়ামী লীগের ব্যর্থ নেতৃত্বের কারণে একটি সুষ্ঠু বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারেনি। এরপর গত ১৫ বছরে এই দলটি দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যে বিজয় এসেছে সেই বিজয়ের ধারাবাহিকতা আমরা যাতে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি সেই লক্ষ্য কাজ করব।

বিএনপির ধর্মবিষয়ক সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপুর সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- স্থায়ী কমিটির ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা বরকতউল্লাহ বুলু, নিতাই রায় চোধুরী, ড. সুকোমল বড়ুয়া, আফরোজা খান রিতা, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বিএনপি নেতা জয়ন্ত কুমার কুণ্ড, অপর্ণা রায় দাস, সুশীল বড়ুয়া, রমেশ দত্ত, দেবাশীষ রায় মধু, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, উপদেষ্টা তপন মজুমদার, মহাসচিব তরুণ দে, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মিল্টন বৈদ্য, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রী চিত্ত রঞ্জন মজুমদার, জয় দেব জয়, অশোক তালুকদার, শ্যামল ঘোষ, সত্যজিৎ কুণ্ড, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা পিন্টু গুহ প্রমুখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও সনাতন ধর্মাবলম্বীর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বেলকুচিতে পূবালী ব্যাংকের ২৩২ তম উপশাখার উদ্বোধন

রেজাউল করিম স্টাফ রিপোর্টার,সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১০:৫৬ অপরাহ্ণ
বেলকুচিতে পূবালী ব্যাংকের ২৩২ তম উপশাখার উদ্বোধন

গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করতে এবং সর্বস্তরের মানুষের দোরগোড়ায় আধুনিক ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে পূবালী ব্যাংক পিএলসি-এর ২৩২ তম উপশাখার শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।

রবিবার (১ জুন) সকালে উপজেলার চালা ওয়াবদা বাঁধ সংলগ্ন আলহাজ্ব আবুল হাসেম সরকার মার্কেটের ২য় তলায় অবস্থিত নতুন উপ-শাখা প্রাঙ্গণে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পূবালী ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও বগুড়া অঞ্চলের অঞ্চল প্রধান এ এস এম রায়হান শামীম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবু জাফর মো: রকিবুল্লাহ, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পূবালী ব্যাংক পিএলসি খামারগ্রাম শাখার ব্যবস্থাপক মো: মাহবুব আলম, সঞ্চালনা করেন বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তা মো: শওকত রহমান।

পূবালী ব্যাংকের নতুন এই উপশাখাটি খামারগ্রাম শাখার অধীনে পরিচালিত হবে। এর মাধ্যমে বেলকুচিসহ আশেপাশের অঞ্চলের সাধারণ জনগণ, ব্যবসায়ী, কৃষক ও চাকরিজীবীরা সহজে ও দ্রুত আধুনিক ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এতে স্থানীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বেলকুচি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো: রেজাউল করিম, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তাঁদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে ব্যাংকের সংযোগকে আরও দৃঢ় করে তোলে। পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, নতুন এই উপশাখার মাধ্যমে এখন থেকে সঞ্চয় ও চলতি হিসাব, ক্ষুদ্রঋণ, মোবাইল ও কার্ড ব্যাংকিং, এবং এটিএমসহ অন্যান্য আধুনিক সেবা সহজে পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে পুবালী ব্যাংকের ৫০৮টি শাখা এবং ৬১৪টি এটিএম সার্ভিস রয়েছে, যা সারা দেশে একটি বিস্তৃত ও গতিশীল আর্থিক সেবাব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। এই উপশাখা চালুর মাধ্যমে পূবালী ব্যাংক আবারও প্রমাণ করল যে, এটি কেবল একটি ব্যাংক নয় বরং দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি ও উন্নয়নের একটি নির্ভরযোগ্য সঙ্গী।

নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই: জোনায়েদ সাকি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১০:১৬ অপরাহ্ণ
নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই: জোনায়েদ সাকি

নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। রবিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, বিচারের বিষয়ে মানুষ দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায়। সংস্কার, নির্বাচন এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এগুলো পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন- এগুলো এক সূত্রে গাথা।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংস্কারগুলো দূরত্ব ও অনাস্থা দেশকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে। নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই। যদি ডিসেম্বরে নির্বাচন না হয় তাহলে সেটার ব্যাখ্যা জনগণের সামনে হাজির করতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ না দিলে সংস্কারের অনেক বিষয় সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। সংস্কারের অনেকগুলো বিষয়ে ঐক্যমত্য আছে আবার কিছু বিষয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে ঐক্যমত তৈরি করা এবং নানা বিষয় সংস্কারও সম্ভব। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকার নিজেও নানা পক্ষপাত দেখাচ্ছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও জরুরি।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, যারা শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে সাহায্য করেছিলেন, এখন তারা নতুন বন্দোবস্ত করে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ফ্যাসিজমের থেকে যাওয়া শিকড়ে পানি ঢেলে তারা আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাচ্ছেন।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্যে ফাটল ধরেছে। কোনো অভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতারা এতটা বিতর্কিত হননি, যতটা এখন হচ্ছেন। তরুণরা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজে জড়িত হয়ে পড়েছেন, যা লজ্জাজনক।

এবি পার্টির সভাপতি মজিবর রহমান মঞ্জু বলেন, বিএনপিকে বলেছিলাম জাতীয় অধিকারের প্রশ্নে আপনারা ঐক্য গড়ে তুলুন। সরকার আমাদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে নাই, রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে পারে নাই। আমাদের ঐতিহাসিক সুযোগ আমরা যেন নষ্ট না করি।

আদালতের নির্দেশনা পেলে জামায়াতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: ইসি সচিব

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ণ
আদালতের নির্দেশনা পেলে জামায়াতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: ইসি সচিব

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, আদালতের নির্দেশনা কমিশনে পৌঁছালে জামায়াতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আজ রবিবার রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।

পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, আদালতের নির্দেশনা ইসিতে পৌঁছালে জামায়াতের নিবন্ধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে সাময়িক নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরের বছর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন।

রিটে জামায়াতের তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নির্বাচন কমিশনসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়। তারা জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের আর্জি জানান।

এ রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক (পরে প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. আবদুল হাইয়ের (বর্তমানে অবসর) হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রুল জারি করেন। নিবন্ধন নিয়ে রুল জারির পর ওই বছরের ডিসেম্বরে একবার, ২০১০ সালের জুলাই ও নভেম্বরে দু’বার এবং ২০১২ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দু’বার তারা গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয় জামায়াত। এসব সংশোধনীতে দলের নাম ‘জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয়।

২০১৩ সালের ১২ জুন ওই রুলের শুনানি শেষ হয়। একই বছরের ১ আগস্ট জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন (বর্তমানে অবসর), বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম (পরে আপিল বিভাগের বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন) ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের (১৯ নভেম্বর পদত্যাগ করেন) সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ।

সে সময় সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বলেন, এ নিবন্ধন দেওয়া আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত। একইসঙ্গে আদালত জামায়াতে ইসলামীকে আপিল করারও অনুমোদন দিয়ে দেন।

তবে এ রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন একই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। পরে একই বছরের ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।

এরপর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে টানা চতুর্থ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। তবে গত বছর জুলাই মাস থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে ছাত্র-জনতা সরকার পতনের দাবি তোলে। এর মধ্যে ১ আগস্ট সরকার অঙ্গসংগঠনসহ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের আবেদন বাতিলের উদ্যোগ নেয়।