খুঁজুন
শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১ মাঘ, ১৪৩১

জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে, একে ধরে রাখতে হবে: তারেক রহমান

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:৫৯ অপরাহ্ণ
জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে, একে ধরে রাখতে হবে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং হাজারো শহিদের রক্তের বিনিময়ে ২০২৪ সালের দেশ ও জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধে গণতন্ত্রকামী জনগণ বিজয়ী হয়েছে। হাজার হাজার আহত মানুষের আর্তচিৎকার আর লাখো শহিদের রক্তস্নাত জমিনে জাতীয় যে ঐক্য গড়ে উঠেছে, তা যে কোনো মূল্যে ধরে রাখতে হবে। বিশ্বাস করি, জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা গেলে, কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র করে কেউ আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে সক্ষম হবে না।

প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের রেখে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিএনপির পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সরকারকে আরও সতর্ক হয়ে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও সংবিধানের সঙ্গে যুক্ত বিষয়ে তাড়াহুড়া না করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শও দেন তারেক রহমান।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে ‘শারদীয় দুর্গোৎসব-উত্তর শুভেচ্ছা বিনিময়’ অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি বরাবরই নাগরিকদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার ওপরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। কারণ বিএনপি মনে করে একটি রাষ্ট্রে ভোটবিহীন নাগরিকের অবস্থা যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র এবং প্রশিক্ষণবিহীন একজন সৈনিকের মতোই নাজুক। নাগরিকের ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করা গেলে, রাষ্ট্র এবং সমাজে নাগরিকদের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়।’

তিনি বলেন, ‘মাফিয়া সরকারের রেখে যাওয়া ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে মেরামত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে। ১৫ বছরের জঞ্জাল ভেদ করে চলমান সংস্কার কার্যক্রম অবশ্যই একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি, এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করতে গিয়ে জনগণের প্রতিদিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করা না গেলে জনগণের রাজনীতি এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার বিষয়টি উপেক্ষিত থাকলে অন্তর্র্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম প্রশ্নের মুখে পড়বে। ফলে এই সরকারের কার্যক্রম অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এজেন্ডা নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করে দিতে পরাজিত অপশক্তি এবং শাসন-প্রশাসনে থাকা তাদের দোসররা নানা কৌশলে সক্রিয় হয়ে উঠছে। এই কারণে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ভিন্ন ভিন্ন দলীয় কর্মসূচি থাকলেও একটি বিষয় বিএনপিসহ সবাই আমরা একমত। মাফিয়া চক্রের সুবিধাভোগীদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রেখে অন্তর্র্বর্তী সরকারের পক্ষে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ নয়।’

তিনি বলেন, ‘যারা সরকারে রয়েছেন এবং গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, আমরা যারা এই সরকারের সমর্থনে রয়েছি আমাদের প্রত্যেকটি কাজ যথাযথ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা অত্যন্ত জরুরি। যাতে পরাজিত অপশক্তি কোনো সুযোগ নিতে না পারে। বিএনপি মনে করে কোনোভাবেই অন্তর্র্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। কারণ এই সরকারের ব্যর্থতা হবে গণতন্ত্রের ও বাংলাদেশের পক্ষের শক্তির ব্যর্থতা।’

দুর্গোৎসব-উত্তর শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে দুপুর থেকেই সহস্রাধিক হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ লেডিস ক্লাবে জড়ো হন। এ সময় ঢোল বাজিয়ে নেচে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে দেখা যায় তাদের। বেলা সাড়ে ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতারা বিগত সময়ে তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা দেন। তারা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচারের দাবি করেন। অতীতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হাতে তারা নির্যাতিত হয়েছেন বলেও জানান।

তারেক রহমান বলেন, ‘মাফিয়া সরকারের পলায়নের পর তাৎক্ষণিক পরিস্থিতিতে গঠিত অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহল ছাড়াও বর্তমানে খোদ সরকারের মধ্যে নানা রকম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ চলছে। অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার কেন বর্তমান সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছে, কিংবা বর্তমান সরকার কি বিপ্লবী সরকার কেউ কেউ এ ধরনের প্রশ্ন তুলেছেন। অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বর্তমান পর্যায়ে এসে তাদের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে যে ধরনের প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, এই ধরনের বিতর্ক সরকারের গতিশীলতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। সরকারের লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার কারণ হতে পারে। এই কারণে বিএনপি মনে করে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো সরাসরি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কিংবা সরাসরি সংবিধানের বিধিবিধানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া পরিহার করে একটি সুচিন্তিত, সুবিবেচিত ফলপ্রসূ পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে ভবিষ্যতে যে কোনো জটিল প্রশ্ন কিংবা পরিস্থিতি মোকাবিলাও সহজ হবে।’

হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের একটিই বার্তা বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী, সংশয়বাদী কিংবা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী এই বাংলাদেশ আপনার-আমার-আমাদের সবার। তথাকথিত সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু নয়, এই জাতি রাষ্ট্রের, আমাদের একটাই পরিচয় আমরা সবাই বাংলাদেশি। এই দেশের নাগরিক হিসাবে আপনার যতটুকু অধিকার, আমারও ততটুকুই অধিকার। সবার আগে বাংলাদেশের স্বার্থই হবে সবচাইতে বড়। রাষ্ট্র-রাজনীতি, শাসন-প্রশাসন পরিচালনায় আমরা গুরুত্ব দেব মেরিটোক্রেসিকে। সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে এটাই বিএনপির নীতি ও রাজনীতি।’

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরে নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল, যা আওয়ামী লীগের ব্যর্থ নেতৃত্বের কারণে একটি সুষ্ঠু বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারেনি। এরপর গত ১৫ বছরে এই দলটি দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যে বিজয় এসেছে সেই বিজয়ের ধারাবাহিকতা আমরা যাতে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি সেই লক্ষ্য কাজ করব।

বিএনপির ধর্মবিষয়ক সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপুর সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- স্থায়ী কমিটির ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা বরকতউল্লাহ বুলু, নিতাই রায় চোধুরী, ড. সুকোমল বড়ুয়া, আফরোজা খান রিতা, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বিএনপি নেতা জয়ন্ত কুমার কুণ্ড, অপর্ণা রায় দাস, সুশীল বড়ুয়া, রমেশ দত্ত, দেবাশীষ রায় মধু, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, উপদেষ্টা তপন মজুমদার, মহাসচিব তরুণ দে, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মিল্টন বৈদ্য, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রী চিত্ত রঞ্জন মজুমদার, জয় দেব জয়, অশোক তালুকদার, শ্যামল ঘোষ, সত্যজিৎ কুণ্ড, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা পিন্টু গুহ প্রমুখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও সনাতন ধর্মাবলম্বীর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আহত

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ৫:৩৭ অপরাহ্ণ
সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আহত

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন।

আহতরা হলেন- আলী হোছেন (৩৫), মো. আরিফ উল্লাহ (৩০) ও দৌছড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ রাসেল (২৫)।

শুক্রবার সকালে উপজেলার ফুলতলী সীমান্তের ৪৭-৪৮-৪৯ নম্বর পিলার এলাকায় পৃথক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফুলতলী সীমান্তের ৪৭-৪৮ নম্বর পিলার ফুলতলী এলাকায় মিয়ানমারের গরু আনতে যান আলী ও আরিফ। কাঁটাতারের পাশে গেলে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণ হয়। এতে আলী হোসেনের বাম পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ও আরিফ উল্লাহর মুখে গুরুতর আঘাত পান। অন্যদিকে সীমান্তের ৪৯ নম্বর পিলার এলাকায় গরু আনতে গেলে আহত হন ছাত্রলীগ নেতা রাসেল।

আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান স্থানীয়রা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য শামসুল আলম জানান, সীমান্তে পৃথকস্থানে মাইন বিস্ফোরণে ৩ বাংলাদেশি আহত হয়েছেন।

তাদের মধ্যে আলী হোছেন নামে একজনের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অন্যরা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন। আহতরা মিয়ানমার সীমান্তে গরু আনতে গিয়েছিলেন।

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি মো. মাসরুল জানান, সীমান্তে বিস্ফোরণে আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম। তিনি জানান, সীমান্ত এলাকা হওয়ায় বিষয়টি বিজিবি দেখছে।

বাংলাদেশের মানচিত্র না এঁকে আপনি ভারতেরটা আঁকতে পারবেন না: ড. ইউনূস

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ৫:২২ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশের মানচিত্র না এঁকে আপনি ভারতেরটা আঁকতে পারবেন না: ড. ইউনূস

ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি বন্ধু হিসেবে অভিহিত করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন, নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন ‘ব্যক্তিগতভাবে আমাকে অনেক কষ্ট দেয়’। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক যতটা সম্ভব শক্তিশালী হওয়া উচিত। আপনি (প্রতিবেদক) জানেন- বাংলাদেশের মানচিত্র না এঁকে আপনি ভারতের মানচিত্র আঁকতে পারবেন না। কেননা বাংলাদেশের স্থল সীমান্ত প্রায় পুরোটাই ভারতের সঙ্গে যুক্ত।

বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

হাসিনার সীমাহীন দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন না তোলায় বিশ্বকে দোষারোপ করেছেন তিনি। ড. ইউনূস বলেন, হাসিনা গোটা বিশ্বের জন্যই একটি ভালো শিক্ষা।

২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ শাসন করা হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, জোরপূর্বক গুম, দুর্নীতি এবং অর্থ পাচারের শক্ত অভিযোগ রয়েছে। যা তদন্ত করছে অন্তর্বর্তী সরকার।

ড. ইউনূস অভিযোগ করেন, কেউই হাসিনার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেনি; যা ভালো বিশ্ব ব্যবস্থার লক্ষণ নয়। এমনটা হওয়ার জন্য পুরো বিশ্বই দায়ী। তাই হাসিনা গোটা বিশ্বের জন্যই একটি ভালো শিক্ষা।

এই নোবেলজয়ী তিনি আরও বলেন, ‘প্রবৃদ্ধির জন্য আমরা সবাইকে ছাড়িয়ে গেছি, এ কথা পুরোটাই মিথ্যা।’

তবে তিনি এর ব্যাখ্যা দেননি। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন ড. ইউনূস।

২০২৫ সালের শেষ অথবা ২০২৬ সালের প্রথম দিকে নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী নন।

ড. ইউনূস বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি প্রবৃদ্ধির হার দ্বারা খুব বেশি প্রভাবিত নই। সমাজের প্রান্তিক মানুষের জীবনযাত্রার মান দ্বারা প্রভাবিত। তাই আমি এমন একটি অর্থনীতির কথা চিন্তা করি যেখানে সম্পদকে কেন্দ্রীকরণের ধারণা থেকে বের হওয়া যাবে।

ঢাকা-দিল্লির তিক্ততার মূল কারণ শুধু শেখ হাসিনাকেই সমর্থন দিয়ে গেছে ভারত। জুলাই অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগে হাসিনাকে ফেরত চেয়েছেন ড. ইউনূস। যাতে এখন সাড়া দেয়নি দিল্লি। যার ফলে দুই দেশের তিক্ততা বেড়েছে আরও কয়েক গুন।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছেড়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম সুপারিশ করেন ছাত্র নেতারা। এরপর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেন ড. ইউনূস। ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।

মূল্যস্ফীতির চাপে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিরতি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ৩:৩৫ অপরাহ্ণ
মূল্যস্ফীতির চাপে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিরতি

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকোচনশীল মুদ্রানীতির পাশাপাশি সরকারি ব্যয়ে কাটছাঁট করার কথা বলছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এ পরিস্থিতিতে এখনই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়াটা যৌক্তিক সময় নয়। তাছাড়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ও বিষয়টিতে সায় দিচ্ছে না।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন গণমাধ্যমকে বলেন, এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। তাছাড়া অন্য কোনো খাতের বেতন মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সংগতি রেখে বাড়েনি। এ পরিস্থিতিতে সরকারি চাকরিজীবীকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে তা মূল্যস্ফীতিকে আরও উস্কে দেবে।

তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করবে। অন্যদের প্রতি ন্যায্যতা হবে না। সার্বিকভাবে এ সময়ে সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত না নেওয়াই যুক্তিযুক্ত।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার পক্ষে অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এমন তো নয় যে সরকারি কর্মচারীরা খুব কম বেতনে চাকরি করছেন। ২০১৫ সালের পর থেকে সরকারি চাকরিজীবীর বেতন বেসরকারি খাতের চেয়ে বেশ ভালো অবস্থায় রয়েছে।

তিনি বলেন, উপসচিব হলেই বিনা সুদে গাড়ির ঋণ এবং সেই গাড়ি ব্যবস্থাপনার জন্য প্রতি মাসে বাড়তি ৫০ হাজার করে টাকাসহ অন্যান্য সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। তার পরও বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া থেকে সরে আসাটাই যৌক্তিক।

সূত্র জানায়, সাড়ে ১৪ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে মূল বেতনের সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার খসড়া প্রস্তুত করেছিল অর্থ বিভাগ।

তবে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় বিষয়টিতে সায় না দিয়ে মহার্ঘ ভাতার নথি ফেরত পাঠিয়েছে। তারা জানিয়েছে, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আপাতত এ ভাতা দেওয়া সমীচীন হবে না। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিষয়টি ফের বিবেচনা করা যেতে পারে।

ব্রেকিং নিউজ