খুঁজুন
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬ পৌষ, ১৪৩১

সংবিধান সংস্কারে যা যা থাকছে নাগরিক কমিটির প্রস্তাবে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭:০১ অপরাহ্ণ
সংবিধান সংস্কারে যা যা থাকছে নাগরিক কমিটির প্রস্তাবে

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার। এরপর থেকে একটি আলোচনা প্রায়ই ঘুরেফিরে আসছে। সেটি হচ্ছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে স্বৈরাচারী মনোভাব যাতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আর জেঁকে না বসে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে এবার অভ্যুত্থানকারী তরুণদের প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটি সংস্কারের পরিবর্তে নতুন করে সংবিধান পুনর্লিখনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনে সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে নিজেদের ৬৯ দফা লিখিত তুলে ধরে জাতীয় নাগরিক কমিটির ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

পরে নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিদ্যমান সংবিধান বাতিল হয়ে গেছে। তাছাড়া এই সংবিধান দেখলে মনে হয় এটা আওয়ামী লীগের দলিল। এ জন্য এই সংবিধান সংস্কার বা সংশোধন নয়, সম্পূর্ণ নতুন করে সংবিধান রচনা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, নতুন সংবিধানে কেউ স্বৈরাচারী বা ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে পারে, এমন কোনো সুযোগ রাখতে চাই না। এ ছাড়া সংবিধান রচনার পর গণপরিষদই রূপ নেবে আইনসভায়। সংবিধানে দুইবারের বেশি কোনো ব্যক্তির রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী না হওয়া এবং দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের কথাও বলা হয়েছে আমাদের ৬৯ দফা প্রস্তাবনায়।

আখতার হোসেন বলেন, সংবিধানে প্রত্যেক জাতিসত্তার স্বীকৃতি থাকতে হবে। বাংলাদেশের নাগরিকগণ ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে পরিচিত হবে। সংবিধানে গণভোটের বিধান থাকতে হবে। গণভোট ছাড়া কেবলমাত্র আইনসভার দুই-তৃতীয়াংশের জোরে সংবিধান সংশোধন করা যাবে না।

নাগরিক কমিটির এই সদস্যসচিব আরও বলেন, সাংবিধানিক পদে থাকা কাউকে অপসারণের ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে না রাখার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৭০ অনুচ্ছেদের কঠোরতা খর্ব করতে হবে। নির্বাহী বিভাগ পরিচালনা করবেন প্রধানমন্ত্রী, তবে নিয়োগের ক্ষমতা তার হাতে থাকবে না, এমন প্রস্তাবও আমরা রেখেছি।

জানা গেছে, জাতীয় নাগরিক কমিটি সংবিধানের পাঁচটি মূলনীতি প্রস্তাব করেছে। সেগুলো হলো—সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, নাগরিক অধিকার ও গণতন্ত্র।

এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নে নাগরিক কমিটির প্রস্তাব হলো— রাষ্ট্রকে সরকারের নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপের বাইরে আনা গেলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আর প্রয়োজন হবে না। তবে আগামী দুই নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে লিখিত প্রস্তাব জমাদানকালে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য সারোয়ার তুষার, মুকুল মুস্তাফিজ, জহিরুল ইসলাম, আতিক মুজাহিদ এবং সালেহ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এ সময় সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষে কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ, সদস্য ফিরোজ আহমেদ, মুস্তাইন জহির, সুমাইয়া খায়ের, মোহাম্মদ ইকরামুল হক, মইন আলম ফিরোজি ও ইমরান সিদ্দিকি উপস্থিত ছিলেন।

রাজধানীর মগবাজারে ট্রেনের ধাক্কাই এক যুবকের মৃত্যু

আব্দুল্লাহ আল মোত্তালিব, স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:৫১ অপরাহ্ণ
রাজধানীর মগবাজারে ট্রেনের ধাক্কাই এক যুবকের মৃত্যু

রাজধানীর মগবাজার রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মোঃ আপন (২২)নিহত হয়েছে। নিহত আপন কুড়িগ্রাম নাগেশ্বরী উপজেলার মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে। বর্তমানে মগবাজার এলাকায় ভাড়া থাকতো।

শনিবার(২১ ডিসেম্বর)সন্ধ্যা সোয়া ৫টা নাগাদ অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী সোহাগ বলেন, আজ বিকেলের দিকে মগবাজার রেল ক্রসিং পারাপারের সময় কমলাপুরগামী একটি ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয় ওই যুবকটি।পরে দ্রুততাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান ওই যুবকটি আর বেঁচে নেই।

তিনি আরও বলে,
আমরা ওই যুবকের পকেটে থাকা কাগজে লেখা মোবাইল নাম্বারে তার পরিবারের সাথে কথা বলে তার নাম পরিচয় জানতে পেরেছি। পরিবারের সদস্যরা ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোঃ ফারুক হোসেন, ওই যুবকের মরদেহ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। আমরা বিষয়টি ঢাকা রেলওয়ে থানা পুলিশকে জানিয়েছি।

আগে একদল সড়কে দুর্নীতি করত এখন করছে অন্যদল: উপদেষ্টা নাহিদ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:৫৩ অপরাহ্ণ
আগে একদল সড়কে দুর্নীতি করত এখন করছে অন্যদল: উপদেষ্টা নাহিদ

সড়ক ও পরিবহন খাতে দুর্নীতির সঙ্গে পলিটিক্যাল প্রভাব জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, সড়কের নৈরাজ্যের সাথে একটা পলিটিক্যাল প্রভাব জড়িত। সড়ক ও পরিবহণ খাতে আগে একদল দুর্নীতি করত এখন অন্যদল করছে। এটা খুব সহজে সমাধান হবে না। তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। দুর্নীতির সঙ্গে যেহেতু রাজনৈতিক কর্মী ও নেতারা জড়িত তাই সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা রাখতে হবে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সার্কিট হাউস সংলগ্ন প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত সড়ক পরিবহণ খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত সংস্কার বিষয়ে জাতীয় সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন। দিনব্যাপী এ সংলাপে সড়ক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও পরিবহণ সেক্টরের অংশীদারজনও উপস্থিত ছিলেন।

এ-সময় নাহিদ বলেন, বুয়েটের একজন মারা গেল। একটা ধারণা যে সমাজের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে যারা আছেন তাদের বিচার হয় না, জবাবদিহিতা হয় না। এখানে সাধারণ মানুষদের জীবনটাই আসলে যায়। এই চিত্র আমাদের সমাজে আছে। এটার পরিবর্তন দরকার। সবাইক বিচারের আওতায় আনা দরকার। এখানে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। উন্নয়ন নীতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, এখন রাস্তায় বের হয়ে মানুষ মারা গেলে সেটাকে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড বলা হচ্ছে। কারণ এটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার কারণে হচ্ছে। এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করে রাখা হয়েছে রাস্তায় মানুষ বের হলে মানুষ মারা যেতে পারে৷ এখানে ব্যবস্থাপনাতেই সমস্যা রয়েছে। যে ধরনের প্রতিষ্ঠান সড়কের নিরাপত্তা দিতে পারে সেটাই তৈরি হয়নি।

পরিবহণ সেক্টরের দুর্নীতি চলমান আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগের দল দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল আবার এখন আরেক দল রয়েছে। এই দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা প্রয়োজন। কারণ রাজনৈতিক কর্মীরাই এগুলোত জড়িত।

জাতীয় সংলাপে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা পরিবহণ সমন্বয়ক কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক আরমানা সাবিহা হকসহ অন্যান্যরা।

অবৈধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে দিল্লির সব স্কুলে নির্দেশনা জারি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:৪৯ অপরাহ্ণ
অবৈধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে দিল্লির সব স্কুলে নির্দেশনা জারি

কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েনের আঁচ এবার শিক্ষার্থীদের ওপরও লাগছে। অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী শিক্ষার্থীদের শনাক্তে ভারতের রাজধানী দিল্লির সব স্কুলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের পরিচয় যথাযথভাবে শনাক্তও যাচাইয়ের বিষয়টিও আছে নির্দেশনাতে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিল্লি মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের (এমসিডি) জারি করা ওই নির্দেশনাটি প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লি সরকারের প্রধান সচিবের (গৃহ বিভাগ) সভাপতিত্বে গত ১২ ডিসেম্বর এমসিডি একটি ভার্চুয়াল সভা আয়োজন করে। এতে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে স্কুলে তাদের শনাক্তকরণ ও তাদের জন্ম সনদ না দেওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এছাড়া কোনও অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীকে জন্ম সনদ না দেওয়ার ব্যাপারে দিল্লির জনস্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমসিডি তাদের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে এবং সঠিক পরিচয় ও যাচাইকরণ প্রক্রিয়া পরিচালনারও নির্দেশ দিয়েছে।

এমনকি যেসব জায়গায় এই অভিবাসীরা অন্যের জমি বা জায়গা দখল করে রেখেছে, সেগুলো খালি করে দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।

ভারতের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া কঠিন। কারণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও রাজ্য তাদের নিজস্ব রেকর্ড রাখে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বিত কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে অল ইন্ডিয়া সার্ভে ফর হায়ার এডুকেশনের ২০২১-২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে ২ হাজার ৬০৬ জন শিক্ষার্থী ভারতে উচ্চশিক্ষার জন্য গেছেন।

শিক্ষার্থীদের আগে নয়া দিল্লিতে থাকা অবৈধ বাংলাদেশিদের ধরতেও পুলিশ অভিযানে নেমেছিল।

বাংলাদেশে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর কয়েকদিন পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর থেকেই ঢাকা ও নয়া দিল্লির সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না।

এরপর তা আরও নাজুক হয়ে পড়ে গত নভেম্বরে হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় ব্রহ্মচারী গ্রেপ্তার হওয়ার পর। তার প্রতিবাদে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় এক বিক্ষোভ থেকে বাংলাদেশ মিশনে হামলা হয়। অন্যদিকে ভারতবিরোধী বিক্ষোভ বাংলাদেশেও চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন।