‘স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক সাহসী কণ্ঠ ছিলেন কবি হেলাল হাফিজ’
কবি হেলাল হাফিজের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কবি হেলাল হাফিজ ছিলেন তারুণ্যের শক্তি এবং স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক সাহসী কণ্ঠ। তার কালজয়ী কবিতার মতোই তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন মানুষের হৃদয়ে।
ওই শোক বার্তায় মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দ্রোহ ও প্রেমের কবি হেলাল হাফিজের মৃত্যু বাংলা ভাষা ও সাহিত্য অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
প্রধান উপদেষ্টা কবির পরকালীন জীবনের শান্তি কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
যে জলে আগুন জ্বলে’ কাব্যগ্রন্থ দিয়ে মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়া প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে মার যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
হেলাল হাফিজের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালে। কবিতাগুলো লেখা হয় ১৯৬৯ থেকে ১৯৮৫ সালের মধ্যে। তার কবিতায় লড়াই, সংগ্রাম, প্রেম-বিরহ, দ্রোহ দারুণভাবে ফুটে ওঠে। ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র মতো ‘অগ্ন্যুৎসব’ কবিতাও শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আগুন জ্বেলে দেয়।
২০১২ সালে ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ কাব্যগ্রন্থের কবিতার সঙ্গে আরও কিছু কবিতা যুক্ত করে প্রকাশ করা হয় হেলাল হাফিজের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’। সবশেষ ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় তৃতীয় কবিতার বই ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’।
১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন হেলাল হাফিজ। বেড়ে ওঠা সেখানেই। ১৯৬৭ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় ১৯৭২ সালে তিনি তৎকালীন জাতীয় সংবাদপত্র দৈনিক পূর্বদেশে সাংবাদিকতায় যোগ দেন।
১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন দৈনিক পূর্বদেশের সাহিত্য সম্পাদক। ১৯৭৬ সালের শেষ দিকে তিনি দৈনিক দেশ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক পদে যোগদান করেন । সর্বশেষ তিনি দৈনিক যুগান্তরে কর্মরত ছিলেন।
২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান হেলাল হাফিজ। এ ছাড়া যশোহর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, আবুল মনসুর আহমদ সাহিত্য পুরস্কার, নেত্রকোনা সাহিত্য সমাজ, কবি খালেদদাদ চৌধুরী সাহিত্য পদক সম্মাননাসহ আরও পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন