খুঁজুন
বুধবার, ২ এপ্রিল, ২০২৫, ১৯ চৈত্র, ১৪৩১

লাইলাতুল কদর চেনার যত আলামত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ
লাইলাতুল কদর চেনার যত আলামত

লাইলাতুল কদর হলো এক মহিমান্বিত রাত, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ রাতে পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে যা মানবজাতির জন্য এক মহা রহমত ও কল্যাণের উৎস। মহান আল্লাহ তা‍‍`য়ালা এই রাতকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন এবং কুরআনে সূরা আল-কদরে স্পষ্টভাবে এর গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। হাদিস অনুযায়ী এ রাতে সঠিকভাবে ইবাদত করলে হাজার মাসের ইবাদতের সওয়াব পাওয়া যায়। তাই প্রতিটি মুসলিমের উচিত এই রাতের গুরুত্ব উপলব্ধি করা এবং এর ফজিলত অর্জনের জন্য সচেষ্ট থাকা।

১. লাইলাতুল কদরের নির্দিষ্ট সময়
কুরআন ও হাদিসের আলোকে লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশকের কোনো এক বিজোড় রাতে হয়ে থাকে। বিশেষ করে ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯তম রাতে লাইলাতুল কদর পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান করো” (বুখারি ও মুসলিম)। অনেক ইসলামি বিশেষজ্ঞের মতে, ২৭তম রাতেই লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তবে নিশ্চিতভাবে কেউ তা বলতে পারে না। তাই আমাদের উচিত পুরো শেষ দশকে ইবাদতে মশগুল থাকা যেন লাইলাতুল কদরের ফজিলত লাভ করা যায়।

২. লাইলাতুল কদর চেনার বাহ্যিক আলামত
লাইলাতুল কদর চেনার কিছু বাহ্যিক লক্ষণ রয়েছে যা রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবিরা বর্ণনা করেছেন। এ রাতের কিছু দৃশ্যমান আলামত হলো:

আকাশের স্বচ্ছতা ও আবহাওয়ার শীতলতা: লাইলাতুল কদরের রাতে আকাশ অত্যন্ত পরিষ্কার ও স্বচ্ছ থাকে। এ রাতে কোনো ঝড়-বৃষ্টি বা মেঘাচ্ছন্ন অবস্থা থাকে না। বাতাস হালকা ও শান্তিময় অনুভূত হয়।

স্নিগ্ধ ও প্রশান্ত পরিবেশ: এই রাতটি অত্যন্ত প্রশান্তিময় হয়। কোনো অতিরিক্ত গরম বা প্রচণ্ড ঠান্ডা অনুভূত হয় না, বরং আবহাওয়া ভারসাম্যপূর্ণ ও আরামদায়ক থাকে।

সূর্যের কোমল আলো: লাইলাতুল কদর শেষে পরদিন সকালে সূর্য উদয় হয় অত্যন্ত কোমল আলো নিয়ে। সূর্যের আলো মৃদু ও অতিরিক্ত উজ্জ্বলতা ছাড়াই দেখা যায়।

অস্বাভাবিক নিরবতা ও সান্ত্বনা: এ রাতে চারপাশে একটি অদ্ভুত নিরবতা বিরাজ করে, যা অনুভবযোগ্য। পশুপাখিরা সাধারণের তুলনায় কম শব্দ করে এবং রাতটি অন্য সব রাতের চেয়ে শান্ত মনে হয়।

৩. লাইলাতুল কদর চেনার আধ্যাত্মিক আলামত
এটি এমন একটি রাত যখন একজন মুমিন নিজের অন্তরে এক বিশেষ অনুভূতি পেতে পারে। কিছু আধ্যাত্মিক আলামত হলো:

অতিরিক্ত আত্মিক প্রশান্তি অনুভূত হওয়া: লাইলাতুল কদরের রাতে ইবাদত করলে হৃদয়ে এক অপূর্ব প্রশান্তি নেমে আসে। মনে হয় যেন আল্লাহর রহমত প্রবাহিত হচ্ছে।

ইবাদতে অদ্ভুত এক আগ্রহ সৃষ্টি হওয়া: সাধারণ দিনের চেয়ে বেশি বেশি ইবাদতে মন বসে এবং অলসতা দূর হয়ে যায়। অনেক সময় দীর্ঘ সময় ইবাদত করার পরও ক্লান্তি অনুভূত হয় না।

দোয়া কবুল হওয়ার অনুভূতি: এ রাতে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে মনে হয় যেন দোয়া কবুল হয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় অশ্রুসজল হয়ে যায় এবং আত্মশুদ্ধির এক অনন্য অভিজ্ঞতা লাভ হয়।

গুনাহ থেকে মুক্তির প্রবল ইচ্ছা সৃষ্টি হওয়া: লাইলাতুল কদরের রাতে আত্মশুদ্ধির প্রবল ইচ্ছা জাগে। নিজের পাপ কাজের জন্য অনুতপ্ত হয়ে মানুষ কান্নাকাটি করে এবং আল্লাহর রহমত কামনা করে।

৪. লাইলাতুল কদর পরবর্তী সকাল
লাইলাতুল কদরের এক বিশেষ আলামত হলো এর পরদিন সকালে সূর্যের আলো অন্য দিনের চেয়ে কিছুটা ব্যতিক্রমী হয়।

সূর্যের আলো নরম ও কিরণহীন হয়: এদিন সূর্যের আলো খুব বেশি উজ্জ্বল হয় না বরং মিষ্টি ও কোমল থাকে যা সহজেই খালি চোখে দেখা যায়।

সকালটি অন্য দিনের তুলনায় শান্তিপূর্ণ হয়: সকাল বেলা পরিবেশে এক ধরনের প্রশান্তি বিরাজ করে। সাধারণত এই সময় বাতাস থাকে মৃদু এবং মনে হয় যেন প্রকৃতি আল্লাহর রহমতে পূর্ণ হয়ে আছে।

পশুপাখিদের স্বাভাবিক আচরণে পরিবর্তন: অনেক সময় লক্ষ্য করা যায় যে পাখিরা অন্যদিনের তুলনায় কম ডাকছে বা ভিন্ন আচরণ করছে। এই বিষয়গুলো সাহাবিরা পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং হাদিসে পাওয়া যায়।

৫. লাইলাতুল কদরের ইবাদত ও করণীয়
যেহেতু এই রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে বেশি সওয়াবের, তাই আমাদের উচিত এই রাতে সর্বোচ্চ ইবাদত করা। কিছু করণীয় বিষয় হলো:

নফল নামাজ পড়া: যত বেশি সম্ভব তাহাজ্জুদ ও অন্যান্য নফল নামাজ পড়া উচিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ইমানের সঙ্গে ও সওয়াবের আশায় ইবাদত করে তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়” (বুখারি ও মুসলিম)।

কুরআন তিলাওয়াত: এই রাতে বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা উচিত এবং কুরআনের আয়াত নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করা উচিত।

জিকির ও তাসবিহ: এই রাতে “সুবহানাল্লাহ”, “আলহামদুলিল্লাহ”, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”, “আল্লাহু আকবার” ইত্যাদি জিকির বেশি বেশি করা উচিত।

গুনাহ থেকে মুক্তির দোয়া করা: রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের শিখিয়েছেন, লাইলাতুল কদরে এই দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে:

اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা‍‍`ফু আন্নি।
অর্থ: “হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমা করতে ভালোবাসো, আমাকে ক্ষমা করে দাও।”

দরিদ্রদের সাহায্য করা: এ রাতে দান-সদকা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গরিব ও অসহায় মানুষদের সাহায্য করা লাইলাতুল কদরের অন্যতম বড় আমল।

লাইলাতুল কদর এক মহিমান্বিত রাত, যা আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়গুলোর একটি। এটি চিনে নেওয়া এবং যথাযথ ইবাদতের মাধ্যমে এর সওয়াব অর্জন করা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই রাতের বাহ্যিক ও আধ্যাত্মিক আলামত দেখে আমরা উপলব্ধি করতে পারি কখন এটি হতে পারে। তাই আমাদের উচিত শেষ দশকের প্রতিটি বিজোড় রাতে ইবাদতে মশগুল থাকা, যেন আমরা লাইলাতুল কদরের বরকত ও আল্লাহর রহমত অর্জন করতে পারি।

আসুন, আমরা সবাই এই রাতের মর্যাদা বুঝে ইবাদতে মনোযোগী হই। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং জান্নাত লাভের আশায় সারাটি রাত ইবাদতে কাটাই।

৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব, হামাসকে যে শর্ত দিল ইসরাইল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:৩৩ অপরাহ্ণ
৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব, হামাসকে যে শর্ত দিল ইসরাইল

৫০ দিনের নয়, দখলদার ইসরাইল গাজায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। যার মাধ্যমে ১১ জন জীবিত ইসরাইলি বন্দিকে মুক্ত করার পাশাপাশি ১৬টি মরদেহও ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছে নেতানিয়াহুর সরকার।

Advertisement

বিপরীতে ইসরাইলের কারাগার থেকে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি দেওয়া হবে।

সোমবার ইসরাইলি প্রভাবশালী দৈনিক হারেৎজ এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরাইল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের কাছে এই প্রস্তাব পাঠিয়েছে।

প্রস্তাবের প্রধান শর্তগুলো হলো:

৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি;
হামাসের কাছ থেকে ১১ জন জীবিত বন্দির মুক্তি ও ১৬টি মরদেহ ফেরত;
ইসরাইলের কারাগার থেকে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি;
যুদ্ধবিরতির ৫ম দিনে হামাসের কাছে বাকি বন্দিদের তথ্য চাওয়া;
১০ম দিনে ১৬ জনের মরদেহ হস্তান্তরের অনুরোধ।
পক্ষগুলোর প্রতিক্রিয়া

যদিও এই প্রতিবেদনের বিষয়ে ইসরাইল, হামাস বা মধ্যস্থতাকারীদের কেউই এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

বর্তমান পরিস্থিতি

নেতানিয়াহুর সরকার মনে করে যে, গাজায় হামাসের হাতে এখনো ৫৯ জন ইসরাইলি বন্দি রয়েছে। যাদের মধ্যে অন্তত ২৪ জন জীবিত।

অন্যদিকে, ইসরাইলি কারাগারে ৯,৫০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন। যাদের ওপর চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্যাতন ও চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগ রয়েছে।

ইসরাইল চলতি বছরের জানুয়ারিতে হওয়া একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন বিমান হামলা চালিয়েছে। গত ১৫ দিন ধরে অব্যাহতভাবে চালানো এই হামলায় ১,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২,৫০০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলের হামলায় সবমিলিয়ে ৬৩,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

আইসিসি (International Criminal Court) গত বছর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলমান।সূত্র: আনাদোলু

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটি ‘উদ্বেগজনক ও বিভ্রান্তিকর’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:৩১ অপরাহ্ণ
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটি ‘উদ্বেগজনক ও বিভ্রান্তিকর’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বাংলাদেশে ইসলামিস্টদের উত্থান নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটি উদ্বেগজনক এবং বিভ্রান্তিকর।

মঙ্গলবার সিএ প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধটি ইঙ্গিত দেয় যে বাংলাদেশে ধর্মীয় চরমপন্থা উত্থানের দ্বারপ্রান্তে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি বাংলাদেশের ভুল চিত্র তুলে ধরেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভ্রান্তিকর এ চিত্রায়ন কেবল দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক গতিশীলতাকে অতি সরলীকৃত করে না বরং ১৮ কোটি মানুষের একটি সমগ্র জাতিকে অন্যায়ভাবে কলঙ্কিত করার ঝুঁকিও তৈরি করে।

নিউইয়র্ক টাইমস প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ যখন নিজেকে পুনরুজ্জীবিত করছে, তখন কট্টরপন্থি ইসলামিস্টরা একটি সুযোগ দেখতে পাচ্ছে। তবে এ বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করে প্রেস উইং বলছে, নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধটি বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি উদ্বেগজনক এবং একপেশে দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে।

সিএ প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রকাশ করার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে উসকানিমূলক নিবন্ধের ওপর নির্ভর করার পরিবর্তে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে স্বীকৃতি দেওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বছর ধরে বাংলাদেশ যে অগ্রগতি করেছে সেটাকে এবং পরিস্থিতির জটিলতাকে স্বীকার করা উচিত।

আরও বলছে, যদিও নিবন্ধটি ধর্মীয় উত্তেজনা এবং রক্ষণশীল আন্দোলনের কিছু ঘটনা তুলে ধরেছে, তবে এটি অগ্রগতির বৃহত্তর প্রেক্ষাপটকে উপেক্ষা করেছে। বাংলাদেশ নারীদের অবস্থার উন্নতিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের সুরক্ষা এবং কল্যাণের জন্য বিশেষভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি এমন একটি সরকার যা নারীর অধিকার এবং সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। অথচ নিবন্ধে এর উলটোটা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের মতো একটি দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ধর্মীয় সহিংসতার মধ্যে পার্থক্য করা গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনার বিদায়ের পর এবং তার পর থেকে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘটিত অনেক সংঘর্ষকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসেবে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যদিও বাস্তবে এসব ঘটনা ঘটেছিল রাজনৈতিক কারণে। রাজনৈতিক দলগুলি প্রায়শই সমর্থন জোগাড় করার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে। যা বিষয়টিকে জটিল করে তোলে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতাকে ধর্মীয় নিপীড়নের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে। সুতরাং পুরো পরিস্থিতিকে সাম্প্রদায়িক সংঘাত হিসেবে উপস্থাপন করা বিভ্রান্তিকর। এটি প্রকৃত রাজনৈতিক এবং আর্থ-সামাজিক বিষয়গুলিকে উপেক্ষা করে।

প্রেস উইং জানিয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমস্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য তার প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করেছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সন্ত্রাসবাদ দমন প্রচেষ্টার সাথে তার চলমান কাজ এই প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরদার করে। সামাজিক সংস্কার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে চরমপন্থা মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টা ভুল তথ্যের বিস্তারের দ্বারা ম্লান হওয়া উচিত নয়।

চলছে ষড়যন্ত্র, মূল মাস্টারমাইন্ড চিহ্নিত

জয় বাংলা ব্রিগেড প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা !

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫, ১:০৮ পূর্বাহ্ণ
জয় বাংলা ব্রিগেড প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা !

গেল ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণআন্দোলনের মুখে পতন হয় স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের। তারপর থেকেই দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেকেই ভারতে পলাতক রয়েছে। আর সেই ভারত থেকেই চলছে বাংলাদেশকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও উঠে আসছে বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধের মহাষড়যন্ত্র চলছে। সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে এমন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা ও সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে। এরই মধ্যে শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগ আরও ঘনীভূত হয়েছে কলকাতায় আয়োজিত এক ইফতার পার্টিতে সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পরিকল্পনার তথ্য প্রকাশের পর।

একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কলকাতার রাজারহাটে এক ইফতার পার্টিতে অংশ নেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাহাঙ্গীর কবির নানক, নাসিম, মেয়র জাহাঙ্গীর, সম্রাটসহ শতাধিক আওয়ামী ঘনিষ্ঠ পলাতক নেতা। উপস্থিত ছিলেন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও তার স্ত্রী।

পরদিন একই স্থানে ছাত্রলীগের শতাধিক পলাতক নেতার আরেকটি ইফতার অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল স্পষ্টভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যে কোনো মূল্যে উৎখাতের নির্দেশ দেন এবং তথ্যসূত্রের দাবি অনুযায়ী, তিনি নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করেন যে অস্ত্র ও অর্থের অভাব হবে না।

২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর “জয়বাংলা ব্রিগেড” নামে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের বৈঠকে বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করা হয় বলে সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে।

সেখানে শেখ হাসিনা পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উৎখাতের রূপরেখা ও প্রয়োজনে গৃহযুদ্ধের ডাক দেন বলে অভিযোগ। ওই বৈঠকে দেশ-বিদেশের ৫৭৭ জন অংশ নেন।

এর মধ্যে ৭৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে, এবং বাকি ৫০০ জনকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও দুবাইতে পালিয়ে থাকা আওয়ামী ঘনিষ্ঠ নেতারাও একই এজেন্ডা বাস্তবায়নে সক্রিয়। কলকাতা, দিল্লি, আগরতলা ও মেঘালয়ের মাটিও নির্বিঘ্নে ব্যবহার করছেন তারা।

গঠিত হয়েছে বিভিন্ন গ্রুপ। গঠিত হয়েছে কোর গ্রুপ। মধ্য রমজান থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত পাঁচটি বৈঠকের তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে।

যদিও শেখ হাসিনা এখনও সরাসরি কোনো বিবৃতি দেননি, তবে সিআইডির দাবি অনুযায়ী, ষড়যন্ত্রের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে তাকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রদ্রোহিতার বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স” নীতি অনুসরণ করা হবে। দেশের ভেতর ও বাইরে সক্রিয় নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে অভিযুক্তদের।

সূত্র: https://www.facebook.com/watch/?v=625675083619141&rdid=ezVPoexOrUH9TrsP