খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫, ৫ আষাঢ়, ১৪৩২

‘অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে জুলাই সনদ প্রকাশ করবো’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ
‘অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে জুলাই সনদ প্রকাশ করবো’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আগামী মাসে ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে আমরা ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশ করবো।

মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার নতুন হাইকমিশনার সুসান রাইল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে এ কথা বলেন তিনি। সাক্ষাতে অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কার কার্যক্রম, নির্বাচন প্রস্তুতি, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হয়।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘অনেক বছর পর মানুষ, বিশেষ করে প্রথমবারের মতো ভোট দিতে যাওয়া তরুণরা, একটি বাস্তব ও মুক্ত ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবে। আমি বিশ্বাস করি এটি একটি উৎসবমুখর এবং আশাব্যঞ্জক উপলক্ষ হবে।’

অস্ট্রেলিয়ার ভিসা কার্যক্রম পুনরায় চালুর জন্য দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিসার আবেদন অনলাইনে জমা দেওয়া যাবে। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় ৬৫ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি বসবাস করছেন, যার মধ্যে ১৪ হাজার শিক্ষার্থী।

তার সরকারের সংস্কার উদ্যোগগুলো তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘একটি বিশৃঙ্খল সময়ের পর আমরা এখন ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মনোযোগ রয়েছে সাংবিধানিক, বিচারিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের ওপর— যা একটি শক্তিশালী বাংলাদেশের ভিত্তি গঠনে সহায়ক। আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি, যাতে একটি মসৃণ ও শান্তিপূর্ণ উত্তরণ সম্ভব হয়। আগামী মাসে ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে আমরা ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশ করবো।’

এসময় নির্বাচনী সহায়তা বিষয়ে হাইকমিশনার রাইল বলেন, অস্ট্রেলিয়া জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক, কারিগরি ও পরিচালনাগত সক্ষমতা বাড়াতে ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার অনুদান দেবে।

বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৫ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে পৌঁছেছে, যা গত পাঁচ বছরে গড়ে বার্ষিক ১৬ দশমিক ২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।’

হাইকমিশনার রাইল আরও বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও অভিবাসীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।’ তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস কর্মসূচির মাধ্যমে তৈরি হওয়া তিন হাজারের বেশি বাংলাদেশি অ্যালামনাই এখন দেশের অগ্রগতিতে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখছে।’

জবাবে অধ্যাপক ইউনূস অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আরও বেশি স্কলারশিপ দেওয়ার আহ্বান জানান।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূস অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশে বসবাসরত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য মানবিক সহায়তা আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান।

জবাবে হাইকমিশনার রাইল বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া সম্প্রতি আরও ৯ দশমিক ৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার মানবিক সহায়তা দিয়েছে বিভিন্ন অংশীদার সংস্থার মাধ্যমে। এর ফলে ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য অস্ট্রেলিয়ার মোট সহায়তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৫৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারে।’

তিনি বলেন, ‘যখন মিয়ানমারে পরিস্থিতি অনুকূলে আসবে, তখন রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে অস্ট্রেলিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।’

বাংলাদেশে নতুন দায়িত্ব নিয়ে হাইকমিশনার রাইল বলেন, ‘এখানে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের প্রাণবন্ত সংস্কৃতি ও গতিশীল রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি মুগ্ধ।’

সাক্ষাতে আরও উপস্থিত ছিলেন এসডিজি সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিক উইংয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ নূরে আলম।

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে হট্টগোল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ১০:৫৬ অপরাহ্ণ
ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে হট্টগোল

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে আজ (বুধবার)। বক্তব্য দিতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলে হট্টগোল করে সংলাপ থেকে বের হয়ে যান সিপিবি, গণফোরাম ও বাংলাদেশ এলডিপির নেতারা। পরে কমিশনের সদস্যদের হস্তক্ষেপে ফের সংলাপে যোগ দেন তারা।

বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল মাল্টিপাস হলে কমিশনের দ্বিতীয় দফা সংলাপের তৃতীয় দিনের আলোচনায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিন আলোচনায় অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াত ইসলামী, জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল। বিকাল পৌনে ৪টার দিকে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান হৈচৈ করে সংলাপ ‘বয়কট করে’ বের হয়ে যান।

সংলাপ থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের মিজানুর রহমান বলেন, ‘এখানে কিসের সংলাপ হচ্ছে, কার সঙ্গে সংলাপ করব। তারা যা ইচ্ছা তাই করছে। অন্তর্বর্তী সরকার যতদিন নিরপেক্ষ থাকবে না, ততদিনের জন্য আমরা বয়কট করেছি।’

হট্টগোল করে একইভাবে সংলাপ থেকে বের হয়ে যান সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

তিনি ‘ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বৈষম্য হচ্ছে’ অভিযোগ তুলে সাংবাদিকদের বলেন, ‘জামায়াত ইসলামীর তিনজনকে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। আরও অনেকে বক্তব্য রাখছেন, অথচ আমাদের কাউকে দেওয়া হচ্ছে না।’

সংলাপ ‘বয়কট করেন’ বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে ঐকমত্য কমিশন। সেই আলোচনা চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এরপর দুপুরের খাবারের বিরতির পর বেলা ৩টায় আবারও সংলাপ শুরু হয়। বিকাল পৌনে ৪টার দিকে তাদের কথা বলতে ‘দেওয়া হচ্ছে না বলে’ দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন সিপিবি গণফোরাম ও বাংলাদেশ এলডিপির নেতারা। একপর্যায়ে তারা সংলাপ থেকে বের হয়ে যান। তখন ভেতরে অন্যান্য দলের রাজনৈতিক নেতারা বসে ছিলেন। পরে কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার এবং উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার কথাবার্তা বলে তাদের সংলাপস্থলে ফিরিয়ে নিয়ে যান।

সংলাপে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এতে উপস্থিত রয়েছেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।

এর আগে গতকাল (মঙ্গলবার) দ্বিতীয় দিনের সংলাপ ‘বয়কট’ করেছিল জামায়াতে ইসলামী। তবে একদিন পর কমিশনের সংলাপে যোগ দিয়েছে দলটি।

নিরাপত্তা জোরদারে ঢাবিতে স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েনের সিদ্ধান্ত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ৪:৩৯ অপরাহ্ণ
নিরাপত্তা জোরদারে ঢাবিতে স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েনের সিদ্ধান্ত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৬টি প্রধান প্রবেশপথে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রক্টরিয়াল টিমের সঙ্গে আনসার ও সশস্ত্র পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ক্যাম্পাসে সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও আসন্ন ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার (১৮ জুন) ঢাবির জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এ বিষয়ে গতকাল (মঙ্গলবার) উপাচার্যের কার্যালয়ে এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারে স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে। ৬টি প্রধান প্রবেশদ্বারে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি অভিযান চালানো হবে, যাতে অংশ নেবেন প্রক্টরিয়াল টিম, আনসার এবং সশস্ত্র পুলিশ সদস্যরা।

বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে ভবঘুরে ব্যক্তিদের উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান চালাবে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল টিম। তাদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চেয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের আশপাশে সেনা টহল বৃদ্ধির জন্য সেনাবাহিনীকে চিঠি দেওয়া হবে।

ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে সভা করার মাধ্যমে নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতা ও সহযোগিতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পাসজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে, নষ্ট ক্যামেরাগুলো সংস্কার করা হয়েছে এবং রাতের আলোকসজ্জা আরও জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে পুলিশের তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।

এ ছাড়া সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে আইন মন্ত্রণালয়কে এবং তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের বিচার ত্বরান্বিত করতে পিবিআইকে পৃথকভাবে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সম্প্রতি ক্যাম্পাসে ককটেল উদ্ধারের ঘটনায় দায়িত্বরত নিরাপত্তারক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের মাঠপর্যায়ের কার্যক্রমও আরও জোরদার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশা প্রকাশ করেছে, এসব পদক্ষেপ কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আন্তরিক সহযোগিতা পাওয়া যাবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ, সিটি এসবির ডিআইজি মীর আশরাফ আলী, ডিজিএফআইয়ের প্রতিনিধি কর্নেল আব্দুল্লাহ, রমনা জোনের ডিসি মো. মাসুদ আলম, শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর, এনএসআই ও ডিবির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

শীর্ষে থাকা ১০টি ব্যাংক, বর্তমানে আমানত রাখা সবচেয়ে নিরাপদ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ২:৪০ অপরাহ্ণ
শীর্ষে থাকা ১০টি ব্যাংক, বর্তমানে আমানত রাখা সবচেয়ে নিরাপদ

অর্থনীতির তালগোলে দেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। ঋণ কেলেঙ্কারি, আর্থিক অনিয়ম ও তারল্য সংকটের কারণে অনেকেই এখন ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে টাকা সরিয়ে নিরাপদ প্রতিষ্ঠানে আমানত রাখতে চান। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে- কোন ব্যাংকে আমানত রাখলে তা সবচেয়ে নিরাপদ থাকবে?

বিশ্লেষকদের মতে, একটি আদর্শ ব্যাংক নির্ভরযোগ্য হয় তখনই, যখন সেটি গ্রাহকের অর্থ সুরক্ষিত রাখতে পারে, নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান করে, প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক সেবা দেয় এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা বজায় রাখে। এই বিবেচনায় ২০২৪ সালের পারফরম্যান্স অনুযায়ী বাংলাদেশের শীর্ষ ১০টি নিরাপদ ব্যাংকের তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো—

১. স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক:
৩৩০০ কোটি টাকা নিট মুনাফা এবং ৪১% প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিদেশি মালিকানাধীন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক দেশের অন্যতম নিরাপদ প্রতিষ্ঠান। শক্তিশালী মূলধন কাঠামো, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিশাল শাখা নেটওয়ার্কের জন্য গ্রাহকের আস্থা অর্জনে সফল হয়েছে।

২. ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড:
দেশের বৃহত্তম ডিজিটাল ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক পরিচালনাকারী এই ব্যাংকটি নিরাপদ লেনদেন, উন্নত গ্রাহকসেবা এবং উচ্চ মুনাফার কারণে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।

৩. ব্র্যাক ব্যাংক:
বিকাশের মতো মোবাইল সেবা এবং ৭৩% নিট মুনাফা বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক প্রযুক্তিনির্ভর ও দ্রুততম উন্নয়নশীল ব্যাংক হিসেবে তৃতীয় স্থান দখল করেছে।

৪. ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল):
২০২৪ সালে ৬৬০ কোটি টাকা নিট মুনাফা ও ৩৫% লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ইবিএল। রেমিটেন্স এবং বিনিয়োগ আয়ের ইতিবাচক ধারা ব্যাংকটিকে এগিয়ে রেখেছে।

৫. উত্তরার পুবালি ব্যাংক লিমিটেড:(উবা ব্যাংক)
খেলাপি ঋণ মাত্র ২.৬৭ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং রেমিটেন্স আহরণে সক্রিয় ভূমিকার জন্য এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গ্রাহকদের কাছে এখন নির্ভরতার প্রতীক।

৬. ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড:
বিভিন্ন বিতর্ক সত্ত্বেও দেশের সর্বোচ্চ রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক এটি। আন্তর্জাতিক লেনদেনের সক্ষমতা এবং অবকাঠামোগত শক্তি একে নিরাপদ ব্যাংকের তালিকায় রেখেছে।

৭. সোনালী ব্যাংক লিমিটেড:
রাষ্ট্রায়ত্ত হলেও ব্যাংকটি বর্তমানে তারল্য সংকটে থাকা অন্যান্য ব্যাংককে সহায়তা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মুনাফায় ফেরার প্রচেষ্টা চোখে পড়ার মতো।

৮. সিটি ব্যাংক পিএলসি:
আর্থিক স্থিতিশীলতা, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কারণে সিটি ব্যাংক বর্তমানে শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকের কাতারে স্থান পেয়েছে।

৯. প্রাইম ব্যাংক পিএলসি:
৭০০ কোটি টাকা নিট মুনাফা ও ২০% লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়ে প্রাইম ব্যাংক বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করেছে। এর মূলধন পর্যাপ্ততার হার (CAR) ১৮.২৬%, যা অন্যতম সর্বোচ্চ।

১০. উত্তরা ব্যাংক পিএলসি:
১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ব্যাংকটি দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীলতা ও সুনাম ধরে রেখেছে। ২০২৪ সালে ৪৭৮ কোটি টাকা মুনাফা এবং ৩০.৭৫% আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরাপদ ব্যাংকের তালিকায় জায়গা পেয়েছে।

যদিও দেশের ব্যাংক খাত চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তবুও এই ১০টি ব্যাংক স্বচ্ছতা, আর্থিক শৃঙ্খলা এবং গ্রাহকসেবার মান বজায় রেখে নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গা হিসেবে টিকে আছে। সঞ্চয় রাখতে আগ্রহী গ্রাহকদের জন্য এ তালিকাটি হতে পারে দিকনির্দেশক।