জানা গেলো ঢাকার ২০টি আসনে জামায়াতের প্রার্থীর তালিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের টাইমফ্রেম নিয়ে দ্বিমত থাকলেও প্রস্তুতিতে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সারাদেশে ৩০০ আসনে নির্বাচন করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি আরও আগে থেকেই শুরু করেছে দলটি। এরই অংশ হিসাবে অন্তত ২৯৬ আসনে প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রস্তুত করেছে দলটি।
প্রধান উপদেষ্টা ড.মোহাম্মদ ইউনুস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের সাম্প্রতিক বৈঠকের আউটকাম অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে সাংগঠনিকভাবে বেশ সুবিধা পাবে জামায়াত। কারণ তারা সংগঠন গুছিয়ে এনেছে। বিএনপি যেখানে নির্বাচনি প্রস্তুতিই শুরু করেনি। সেখানে জামায়াত তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। তারা জুলাই আগস্টের পর থেকে জনমুখী রাজনীতি করছে। মানুষদের কাছে টানছে।
আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। নিজ নিজ এলাকায় নানা কৌশলে গণসংযোগ করছেন সম্ভাব্য প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় নেতারা। বিভিন্ন ইস্যুতে করছেন সভা-সমাবেশও। ভোটারদের আস্থা অর্জনে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে কী কী উদ্যোগ নেবে সেটিও জানান দিচ্ছেন নেতারা। এছাড়া বিগত সরকারের আমলে দল ও দলটির নেতাকর্মীদের ওপর নানা দমন-পীড়নের বিষয়টিও জনগণের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।
এছাড়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসলামি দলগুলো নিয়ে জোট গঠনেরও প্রস্তুতি আছে জামায়াতের। সেক্ষেত্রে জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগিও হতে পারে। দলটির কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আসন সংখ্যাটি আমরা এখনো অফিশিয়ালি ঠিক করিনি। এটা (সম্ভাব্য আসন সংখ্যা) প্রাথমিক ঘোষণা। নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা বিষয়ে সমঝোতার বিষয় আছে। তাই এখনই এটা আমরা বলতে চাচ্ছি না। বিভিন্ন জায়গায় যারা আছেন, তারা কাজ করছেন। আমাদের যে কোনো সিদ্ধান্ত, যে কোনো সময় আমাদের প্রার্থীরা মানবেন, ইনশাআল্লাহ।
নির্বাচনি প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, জামায়াত নির্বাচনমুখী দল হিসাবে আমরা সব সময় প্রস্তুত। জাতীয় নির্বাচনসহ যে কোনো নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি আছে।
সূত্র জানায়, জামায়াত এককভাবেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। সে হিসাবে ৩০০ আসনেই প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। প্রাথমিকভাবে ২৯৬ জনের একটা তালিকা প্রস্তুত করেছে। কোনো কোনো আসনে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নামও রয়েছে। এই তালিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। নির্বাচনের জন্য তারা মাঠ প্রস্তুত করছেন। কোথাও কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে কি না সেটিও দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, ’২৪-র গণ-অভ্যুত্থানের পরপরই জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্ব ও কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ নিজ এলাকায় সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেন। নির্বাচনি রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা উঠলে প্রস্তুতি শুরু করেন নেতাকর্মীরা।
জামায়াতের দায়িত্বশীল একাধিক নেতা অভিন্ন তথ্য দিয়ে বলেন, এখন পর্যন্ত সম্ভাব্য প্রার্থীর যে তালিকাটা প্রস্তুত করা হয়েছে, সেটি পুরোপুরি চূড়ান্ত নয়। এই সময়ে মাঠের পরিস্থিতি ও অন্য দলের অবস্থান বুঝে আগস্ট-অক্টোবরের দিকে প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।
এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকায় ২৯৬ জনের নাম কিছু গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। ৪টি নির্বাচনি আসনে এখনো সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা করা হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে রাজশাহী-২, মানিকগঞ্জ-২, ঢাকা-৯ ও কুমিল্লা-৭। বলা যায়, বাকি আসনগুলো তারা গুছিয়ে নিয়েছেন।
ঢাকার ২০টি আসনে প্রার্থী তালিকা ঠিক করেছে জামায়াত। সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় যারা রয়েছেন, তারা হলেন-
১.ঢাকা-১ ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম,
২.ঢাকা-২ ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক হাসান,
৩.ঢাকা-৩ অধ্যক্ষ শাহিনুল ইসলাম,
৪.ঢাকা-৪ সৈয়দ জয়নুল আবেদীন,
৫.ঢাকা-৫ মোহাম্মদ কামাল হোসেন,
৬.ঢাকা-৬ ড. আব্দুল মান্নান,
৭.ঢাকা-৭ হাজি হাফেজ মো. এনায়েতুল্লাহ,
৮.ঢাকা-৮ ড. অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন,
৯.ঢাকা-১০ অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার,
১০.ঢাকা-১১ অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান,
১১.ঢাকা-১২ সাইফুল আলম খান মিলন,
১২.ঢাকা-১৩ ডা. মুহাম্মদ মোবারক হোসাইন,
১৩.ঢাকা-১৪ ব্যারিস্টার আরমান,
১৪.ঢাকা-১৫ ডা. শফিকুর রহমান (কেন্দ্রীয় আমির),
১৫.ঢাকা-১৬ আব্দুল বাতেন,
১৬.ঢাকা-১৭ ডা. এসএম খালিদুজ্জামান,
১৭.ঢাকা-১৮ অধ্যক্ষ আশরাফুল হক,
১৮.ঢাকা-১৯ আফজাল হোসাইন,
১৯.ঢাকা-২০ মাওলানা আব্দুর রউফ।
আপনার মতামত লিখুন