পোল্যান্ডের সেই রাষ্ট্রদূতের নিয়োগ বাতিল
পেশাদার কূটনীতিক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর গত ২৫ সেপ্টেম্বর পোল্যান্ডে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। নিয়োগের ১০ দিন পর তার সেই নিয়োগ বাতিল করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আজ রোববার (৬ অক্টোবর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক তৌফিক হাসান বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের উপহাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীরের পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিয়োগের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করা হলো।
তবে বিসিএস ২০তম ব্যাচের (পররাষ্ট্র ক্যাডার) কর্মকর্তার নিয়োগ ১০ দিনের মাথায় কেন সরকার বাতিল করেছে, সে ব্যাপারে জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক কোনো ব্যাখ্যা দেননি।
২০২১ সালের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বিতীয় কোনো কূটনীতিককে নিয়োগ দিয়ে তা বাতিল করল। ওই বছর পেশাদার কূটনীতিক সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকারকে ব্রাজিলে রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। পরে মাসুদ মাহমুদ খন্দকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরু হলে তার সেই নিয়োগ বাতিল হয়েছিল।
অবশ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুলাই–আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সহমর্মিতা জানিয়ে মিছিল ও সমাবেশ করেছিলেন।
এরই অংশ হিসেবে গত ১৯ জুলাই বাংলাদেশের ছাত্র–জনতার আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুরে একটি সমাবেশ করেছিলেন দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা। তারা মালয়েশিয়ার নাগরিকদের সহযোগিতাও কামনা করেন।
ওই সমাবেশের পর কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন ছাত্র-শিক্ষকদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে কাজাং থানায় রিপোর্ট করে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকেরা নানামুখী হেনস্তার শিকার হন। কাজাং থানায় অভিযোগ দাখিলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি অংশ অভিযোগ করেন।
তিনি বাংলাদেশে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে যুক্ত লোকজনকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। পররাষ্ট্র ক্যাডারদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএসএ) হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের ফাঁস হওয়া চ্যাটে দেখা যায়, খোরশেদ আলম খাস্তগীর মালয়েশিয়াপ্রবাসী যারা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছিলেন, তাদের পাসপোর্ট বাতিলের সুপারিশ করেছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন