আকস্মিকভাবে রেল স্টাফদের কর্মবিরতি
সারাদেশে বন্ধ রেল চলাচল, যাত্রী সেবায় বিআরটিসি বাস
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারা দেশে বন্ধ রয়েছে রেল যোগাযোগে। তাই রেলের বিকল্প হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ রেল রুটগুলোতে যাত্রী পরিবহনের জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী। সেই মোতাবেক আজ কমলাপুর রেল স্টেশনে উপস্থিত ছিল অসংখ্য বিআরটিসি বাস এবং যাত্রী নিয়ে স্টেশন ছাড়তেও দেখা গেছে।
এর আগে ওই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির পরিপ্রেক্ষিতে আজ থেকে সারা দেশে রেল যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে রেলের বিকল্প হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ রেল রুটগুলোতে যাত্রী পরিবহনের জন্য বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া ও ময়মনসিংহগামী যাত্রীরা তাদের কেনা রেল টিকিটে বিআরটিসি বাস সার্ভিসের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পারবেন জানিয়ে তিনি বলেন, এ সব স্থান থেকে ঢাকাতে এই সার্ভিসের মাধ্যমে গন্তব্যে যেতে পারবেন।
তাছাড়া পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এই বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু থাকবে বলেও জানিয়েছেন রেজাউল করিম সিদ্দিকী।
এদিকে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। আর এতেই বন্ধ রয়েছে সারা দেশের ট্রেন চলাচল। যার কারণে যাত্রী ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে। ব্যস্ত টিকিট কাউন্টারগুলোতেও একবারে নিরবতা। খোলেনি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কাউন্টারগুলোও। আগে থেকে টিকিট কাটা যাত্রী বসে আছেন চুপচাপ। কারণ এই কর্মবিরতি কখন শেষ হবে তা কেউ জানেনা।
কমলাপুর রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাত্রার উদ্দেশ্যে হাজির হয়েছে শত শত যাত্রী। কেউ যাবেন ময়মনসিংহ, কেউ নেত্রকোনা আবার কেউবা রাজশাহী কিংবা কক্সবাজার। ভোরের আলো ফোটার আগেই যাদের বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রা, কমলাপুর রেলস্টেশনে আজ তাদের অপেক্ষার প্রহর। কারণ স্টেশনে পৌঁছানোর পর তারা জানতে পারে এই কর্মবিরতির কথা।
তবে ভোগান্তির মাত্রা কিছুটা কমিয়েছে বিআরটিসি বাস সার্ভিস। কমলাপুর রেল স্টেশনে সকাল থেকেই উপস্থিত ছিলো বিআরটিসি বাস। একে একে কমলাপুর থেকে ১০ টি এবং এয়ারপোর্ট থেকে ১১টি বাসে যাত্রীদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাত্রা করে বিআরটিসি।
এদিকে রেল স্টেশনে এমন আকস্মিক কর্মবিরতিতে বেশ স্থবিরতা তৈরি হয়। ঘটনা পর্যবপক্ষন করতে সরেজমিনে আসেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। সেই সাথে বিআরটিসির চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম, বিআরটিএ চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াসীনও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
কমলাপুর রেল স্টেশনে বিআরটিসির চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলামকে বিআরটিসি স্টাফদের দিকনির্দেশনা দিতে দেখা যায়। যাত্রী ভোগান্তি কমাতে রেলের টিকিট দেখিয়ে সারাদেশে যাত্রী সেবায় নিয়োজিত রয়েছে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ।
কর্মবিরতি দেয়া স্টাফদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন দেয়া এবং আনুসাঙ্গিক সুবিধা দেয়ার দাবি পূরণ না হওয়ায় সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাত ১২টার পর থেকে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি।
আপনার মতামত লিখুন