খুঁজুন
শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৭ মাঘ, ১৪৩১

হাসপাতালের বেডে শুয়ে প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার সংবাদ পান ড. ইউনূস

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫, ৩:১৬ অপরাহ্ণ
হাসপাতালের বেডে শুয়ে প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার সংবাদ পান ড. ইউনূস

দেশ তখন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস তখন অবস্থান করছেন ফ্রান্সে। প্যারিস অলিম্পিক আয়োজনের সঙ্গে জড়িত থেকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ। তখনও নিশ্চিত নয় আন্দোলনের ফল। কিংবা ড. ইউনূসের সরকার প্রধান হওয়া।

প্যারিস অলিম্পিকের ফাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতে হয় তাকে। সেখানে গিয়ে অস্ত্রোপচারও করাতে হয়। আর এদিকে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। ছাত্রদের পক্ষ থেকে প্যারিসের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ড. ইউনূসকে ফোন করা হয়। জানানো হয় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে তাকেই। সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় ৬ মাস পর প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন সরকার গঠনের সেই সময়ের গল্প। জানিয়েছেন, হাসপাতালের বেডে শুয়ে প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার সংবাদ জানতে পেরেছিলেন তিনি।

সম্প্রতি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে সুইজারল্যান্ডের দাভোস সফর করেন প্রধান উপদেষ্টা। সে সময় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের বৈদেশিকবিষয়ক প্রধান ভাষ্যকার গিডেয়েন রাখমানের উপস্থাপনায় একটি পডকাস্টে কথা বলেন তিনি।

‘রাখমান রিভিউ’ নামের ওই পডকাস্ট অনুষ্ঠানে কথোপকথন লিখিত আকারে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেই সরকার গঠনের প্রক্রিয়া ও ছাত্রদের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাব নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন ড. ইউনূস।

ইউনূস বলেন, ‘আমি যখন প্রথম ফোনকল পাই, তখন আমি প্যারিসের হাসপাতালে ছিলাম। আমার ছোট্ট একটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তখন তারা (ছাত্রনেতারা) ফোন দিল। যদিও আমি বাংলাদেশে কী ঘটছে, সেসব খবর প্রতিদিন মুঠোফোনে দেখতাম। তখন তারা বলল, “তিনি (শেখ হাসিনা) চলে গেছেন। এখন আমাদের সরকার গঠন করতে হবে। দয়া করে, আমাদের জন্য সরকার গঠন করুন।” আমি বলেছিলাম, না, আমি সেই ব্যক্তি নই। আমি এর কিছুই জানি না। আমি এর সঙ্গে যুক্ত হতেও চাই না।’

কারা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল—এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা। আমি তাদের কাউকেই চিনতাম না। কখনো তাদের সম্পর্কে শুনিনি। কাজেই আমি তাদের বিকল্প কাউকে খোঁজার বিষয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম। তাদের বলেছিলাম, বাংলাদেশে অনেক ভালো নেতা আছেন। তোমরা তাদের খুঁজে নাও। তারা বলছিল, “না, না, না, আপনাকেই থাকতে হবে। আমরা কাউকে পাইনি।” আমি বলেছিলাম, জোরালো চেষ্টা করো। তারা বলল, “আমাদের হাতে পর্যাপ্ত সময় নেই।” তখন বলেছিলাম, অন্তত একটা দিন চেষ্টা করো। না পেলে ২৪ ঘণ্টা পর আমাকে আবার ফোন করো।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তারা (ছাত্রনেতারা) আমাকে আবারও ফোন করল। বলল, “আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু সম্ভব হয়নি। আপনাকে অবশ্যই দেশে ফিরতে হবে।” শেষ পর্যন্ত আমি বললাম, দেখো, তোমরা রাজপথে জীবন দিয়েছো। প্রচুর রক্তক্ষয় হয়েছে। তোমরা সম্মুখসারিতে আছো। যেহেতু তোমরা এসব করতে পেরেছ, এখন ইচ্ছা না থাকলেও তোমাদের জন্য আমারও কিছু করা উচিত। আর এটাই সেই সময়। সরকারের সংস্কার করতে হবে। আমি রাজি। তোমরা কি একমত? তারা আর কোনো কথা বলেনি।’

সেই দিনের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ঘণ্টা দুয়েক পর হাসপাতালের একজন নার্স এলেন। তিনি আমাকে একটি ফুলের তোড়া উপহার দিলেন। আমি বললাম, এটা কেন? তখন ওই নার্স বললেন, “আপনি বাংলাদেশের ‘প্রধানমন্ত্রী’, আমরা এটা জানতাম না।” আমি বললাম, এটা আপনি কোথা থেকে জানলেন? তখন তিনি বললেন, “সব গণমাধ্যমে, সব টেলিভিশনে সংবাদ প্রচার হচ্ছে, আপনি বাংলাদেশের ‘প্রধানমন্ত্রী’।” আমি বললাম, আমি আপনার কাছ থেকেই এটা জানলাম।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এরও ঘণ্টা দুয়েক পর ওই বোর্ড সদস্যরাদসহ হাসপাতালের প্রধান আসেন। তারা ফুলের তোড়া দিয়ে নতুন ‘প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে আমাকে শুভেচ্ছা জানান। সঙ্গে এটাও বলেন যে বিকেলের আগে আমাকে হাসপাতাল ছাড়ার বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হবে না।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমি পরিচালককে বলি, ওরা আমাকে চাইছে। দেশে যেতে বলছে। ভ্রমণের জন্য আপনি কি আমাকে প্রস্তুত করে দিতে পারেন? তিনি বললেন, “অবশ্যই, আপনার কথা আমাদের মানতে হবে। আপনি একজন প্রধানমন্ত্রী। আপনার নিরাপদ যাত্রার জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে দেব। প্রয়োজনীয় ওষুধসহ সবকিছু দেব। সার্বক্ষণিক যোগাযোগে থাকব।”’

এর কয়েক ঘণ্টা পর, সকালে ফরাসি সেনাবাহিনীর বড় একটি দল আমাকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে আসে—এমনটাই বলছিলেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, ‘এটাই ছিল দেশে ফেরার আগের ঘটনাবলী। পুরো জাতি আমার ফেরার উড়োজাহাজের অপেক্ষায় ছিল। বাণিজ্যিক উড়োজাহাজে যাত্রা করেছিলাম। তখন তারা (ছাত্রনেতারা) নতুন সরকারের রূপরেখা দাঁড় করিয়ে ফেলেছে। আমি বিমানবন্দর থেকেই জাতির সামনে ভাষণ দিলাম। সবাইকে ধৈর্য, শান্তি, একতা বজায় রাখতে বললাম। এটাই ছিল পুরো ঘটনার শুরু।’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫, ৭:৪২ অপরাহ্ণ
১

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

রেজাউল করিম স্টাফ রিপোর্টার,সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫, ৫:৪১ অপরাহ্ণ
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

জেলার বেলকুচিতে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ১০ টার দিকে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন হাজী জুলহাস উদ্দিন খান।

সংবাদ সম্মেলনে ভূমি ক্রয়কৃত মালিক জুলহাস উদ্দিন খান লিখিত বক্তব্যে বলেন, মুকুন্দগাঁতী আমার নিজ বসত বাড়ীতে ভবন নির্মাণ করিতেছি। ভবনের ১ম তলার ছাদ সম্পন্ন হওয়ার পর মুকুন্দগাঁতী বাজারের চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, তার পেটুয়া বাহিনী দ্বারা নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি। আমাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি হুমকী প্রদান করিয়া আসিতেছে। এমতবস্থায় আমি ও আমার পরিবারের জান মালের নিরাপত্তার স্বার্থে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রায় ৩০ বছর হলো এই ভূমি ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছি, তারা যদি জমি পায় তাহলে আদালতের মাধ্যমে রায় নিয়ে আসুক জমি দিতে আমাদের কোন আপত্তি নাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছেলে, আরিফ খাঁন, ফয়সাল আহম্মেদ, আব্দুর রউফ।

উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১ ঘটিকায় বেলকুচি প্রেসক্লাবে ভুক্তভোগী বাক প্রতিবন্ধী মনিরুল ইসলামের ভূমি দখলের অভিযোগে হাজী জুলহাস উদ্দিন খান এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন তার বড় ভাই মোজাম্মেল হক। এরই প্রতিবাদে ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে হাজী জুলহাস উদ্দিন খান একই স্থানে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে তিতুমীর শিক্ষার্থীদের অনশন

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫, ৫:২৯ অপরাহ্ণ
বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে তিতুমীর শিক্ষার্থীদের অনশন

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অনশন কর্মসূচি পালন করছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। অবশ্য এরই মধ্যে তারা কলেজের সামনের সড়কের অবরোধ তুলে নিয়েছেন। এতে করে মহাখালী থেকে গুলশান লিংক রোডের যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে কলেজের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করছেন তারা। আজকের জুমার নামাজ সেখানেই আদায় করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) কলেজটির শিক্ষার্থীদের সংগঠন তিতুমীর ঐক্যের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, আমাদের অনশন কর্মসূচি শুরুর ২৪ ঘণ্টা পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একজন প্রতিনিধি এসেছিলেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কারো মুখের কথা আমরা বিশ্বাস করতে চাইনা। যতক্ষণ পর্যন্ত তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়া না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। রাতে সড়ক অবরোধ ছাড়লেও ফের অবরোধ করা হবে। রাতে রাজধানীতে কাঁচামালবাহী বিভিন্ন সবজির গাড়ি প্রবেশ করে। তাই সড়ক ছেড়ে দিয়েছিলাম। যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়।

তারা বলেন, অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে তিতুমীর কলেজের ৭ জন শিক্ষার্থী সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া বাংলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রানা আহমেদ ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিতুমীর ঐক্যের দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে থেকে অনশন শুরু হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অনশন চলবে। আমরা ৭ দফা দাবি জানিয়েছি। সেগুলো হচ্ছে —

১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।

২. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

৩. শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে।

৪. ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুইটি বিষয় ‘আইন’ এবং ‘জার্নালিজম’ বিষয় সংযোজন করতে হবে।

৫. অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।

৬. শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে।

৭. আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি তাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এরমধ্যে একটি কলেজ হচ্ছে সরকারি তিতুমীর কলেজ। অধিভুক্তির পর থেকে এখন পর্যন্ত এই কলেজের অ্যাকাডেমিক সব কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে। এর আগে সরকারি তিতুমীর কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল।