রাজধানীতে পৃথকভাবে ৫টি ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ
![রাজধানীতে পৃথকভাবে ৫টি ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ](https://bdnews999.com/wp-content/uploads/2025/02/images-7.jpeg)
রাজধানীর ভাটারা, হাজারীবাগ, চকবাজার ও কামরাঙ্গীরচর থেকে পৃথক ঘটনায় শিশুসহ পাঁচ জনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৩ ফেব্রুঃ) দিবাগত রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পাঁচজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এদের মধ্যে চকবাজার থেকে ওয়ার্কশপ শ্রমিক মোঃ রাকিব(১৯)ও ফটোগ্রাফার সাজ্জাদ আলী নয়ন(২৪),কামরাঙ্গীরচর থেকে শিক্ষার্থী সারিকা হোসেন নাবিলা (১৩),ভাটারা থেকে রিক্সাচালক ইউনুস আলী (৫৭),এবং হাজারীবাগ থেকে গৃহবধু রুপা আক্তার (২৬)।
চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই)জিল্লুর রহমান বলেন,
নিহতের পরিবার ও তার আত্মীয়-স্বজনের সাথে কথা বলে জানা যায়,নিহত রাকিব বিগত কয়েকদিন যাবত মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত ছিল।প্রায় সময়ই সে আনমনা হয়ে চলাফেরা করতো।তার কি হয়েছে এ বিষয়ে পরিবারের কেউ জিজ্ঞেস করলে সে কোন কিছুই উত্তর দিত না।গতরাতে সে নিজের ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে পড়ে।পরে পরিবার স্বজনরা বিষয়টি দেখতে পেয়ে আমাদের খবর দিলে আমরা রাকিবের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠাই।এবং সে একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতে বলে পরিবারের স্বজনরা জানিয়েছে।
অপরদিকে চকবাজার থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মোঃ কাউছার বলেন,
আমরা খবর পেয়ে হোসনি দালান রোডের ছয়তলা ভবনের একটি কক্ষ থেকে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করি।পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠাই।প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারি,সে নাটক সিনেমা ফটোগ্রাফির কাজ করতো। ঘটনাস্থলের অফিসটিতে তার ভিডিও এডিটিং এর কাজ করতো। তবে কি কারণে সে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে এ বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলেও জানান এসআই কাউছার।সে বংশাল এলাকায় পরিবারের সাথে থাকতো বলে জানতে পেরেছি।
অপর ঘটনায় হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন,
গৃহবধূ রুপা নিজের ঘরে ভিতর থেকে দরজা লক করে ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে থাকে। পরে তার শাশুড়ি দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান রুপার বেঁচে নেই। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। তবুও মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
কামরাঙ্গীরচর থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) ইমরান হোসেন বলেন,
কার নাকি চরের খালপাড় অটো স্ট্যান্ড এলাকার একটি বাসার দ্বিতীয় তলার কক্ষ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় সারিকা হোসেন লাবিবার মরদেহ উদ্ধার করি।পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠাই।প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি সে একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করত। এখানে তার লেখাপড়া ভালো লাগতো না।এ কারণে তার বাবা তাকে রাগারাগি করে।পরে অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে জানতে পারি।
অপর ঘটনায় ভাটারা থানার উপপরিদর্শক(এসআই)মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন,
আমরা খবর পেয়ে ভাটারার নূরের চারা এলাকার নাসির উদ্দিনের টিনশেডের বাসা থেকে রিক্সা চালক ইউনুস আলীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করি। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই অনেক সিগারেট খেয়ে আশেপাশে ফেলে রেখেছে।তার স্ত্রী বাসা বাড়িতে কাজ করে। প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি কোনো কারণে সে হতাশাগ্রস্ত ছিল। হয়তোবা এ কারণেই সে এ ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারে।নিহতের স্ত্রীও এ বিষয়ে কোন কিছু বলতে পারেনা।ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান এসআই আসাদুজ্জামান।
আপনার মতামত লিখুন