খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৩০ মাঘ, ১৪৩১

বাড়বে সেবার মান, সাশ্রয়ী হবে অর্থ-সময়

বিআরটিসি’র নিজস্ব সক্ষমতায় মাসে তৈরি হবে ১০টি বাস

মোঃ হাসানুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:০৮ অপরাহ্ণ
বিআরটিসি’র নিজস্ব সক্ষমতায় মাসে তৈরি হবে ১০টি বাস

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন সরকারের একটি বৃহৎ সেবামূলক খাত। অথচ ২০২১ সালের পূর্বেও সরকারি অন্যান্য সেবাখাত গুলোর মতোই বিআরটিসি ছিলো একটি তলাবিহীন ঝুড়ি। তবে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব মোঃ তাজুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে চেহারা পাল্টে গিয়েছে বিআরটিসির। যার সবশেষ নমুনা হতে চলেছে বিআরটিসির সম্পূর্ণ নিজস্ব সক্ষমতায় তৈরি হবে বাস। অর্থাৎ যে বিআরটিসি একসময় ছিলো বদনামে স্বয়ংসম্পূর্ণ, বেতনের দাবিতে স্টাফরা ঝাড়ু ও হাঁড়ি-পাতিল মিছিল করতো, সেই বিআরটিসি এখন সম্পূর্ণ নিজস্ব সক্ষমতায় মাসে ১০টি বাস তৈরি করবে।

মূলত বিদেশ থেকে যাত্রীবাহী বাস ক্রয় করতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন হয়। তার চেয়েও বড় কথা আমদানি প্রক্রিয়ায় অন্তত তিন থেকে চার বছর সময় লাগে। এসব জটিলতা এড়িয়ে তুলনামূলক সাশ্রয়ে যাত্রীসেবা দিতে দেশেই বাস তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)। যার স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রধান কারিগর জনাব তাজুল ইসলাম।

শুরুর পর্যায়:
জানা যায়, প্রাথমিকভাবে ডিজেলচালিত একতলা বাস তৈরি করবে সংস্থাটি। এরই মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বিআরটিসি সূত্রে জানা যায়, উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে চেসিস সংগ্রহ করে বাস তৈরি করা হবে। এ জন্য সরবরাহকারীদের কাছে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চেসিস সংগ্রহ করে বাস তৈরির বাকি কাজ করবে কর্পোরেশনের টেকনিশিয়ানরা। এতে অনেকাংশেই সময় ও অর্থের সাশ্রয় হবে একথা বলাই যায়।

চেয়ারম্যানের বক্তব্য:
এ বিষয়ে বিআরটিসির চেয়ারম্যান জনাব তাজুল ইসলাম বলেন, নিজস্ব সক্ষমতা ও ব্যবস্থাপনায় বাস তৈরির উদ্যোগটি এখন বাস্তবে পরিণত হতে যাচ্ছে। প্রতি মাসে অন্তত ১০টি বাস তৈরির টার্গেট রয়েছে। বিআরটিসির দক্ষ প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানরা মিলে এসব বাস তৈরি করবেন। অবশ্যই যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক বিবেচনা করে এগুলো তৈরি করা হবে। এতে সময়, অর্থ উভয়ই সাশ্রয় হবে। আগামী মাস থেকেই বাস তৈরির কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মত:
পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকার উদ্যোগী হলেই বেসরকারি পরিবহন খাতের একটি চক্র অপতৎপরতা চালায়। যত্রতত্র বাস থামানোর দাবিতে আন্দোলনেরও নজির আছে। সড়কপথে সাধারণ যাত্রীদের কৌশলে জিম্মি করে ফায়দা হাসিল করে প্রাইভেট কোম্পানি গুলো। এ ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধে রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি যাত্রীসেবায় বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে বাস ক্রয় ও মেরামতের নামে নানান অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে। তবে সেই দূরাবস্থা বর্তমানে অনেকটাই কেটেছে। এবার শুধু চেসিস আমদানির পর নিজস্ব কারখানায় বাস তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বিআরটিসি। এক্ষেত্রে যেমন সময়-অর্থ সাশ্রয় হবে, তেমনি অব্যবস্থাপনাও লাঘব হবে। যার অবদান অবশ্যই বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের।

বলতে বাধা নেই, স্বাধীনতার পূর্বে ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত বিআরটিসি স্বাধীনতার পর থেকেই লোকসান গুনে চলেছে। দীর্ঘ লোকসান যাত্রার ইতি টেনে ২০২১ সালের পর থেকে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে বিআরটিসি। তার পূর্বে যন্ত্রাংশ কেনাকাটা, রক্ষণাবেক্ষণে অনিয়ম, হিসাবে গরমিল, সার্বিক অব্যবস্থাপনা ও গাফিলতিতে বহু লোকসান গুনতে হয়েছে বিআরটিসিকে। ফলে সাশ্রয়ের বিষয়টি মাথায় রেখেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে নিজস্ব কারিগর দিয়ে বাস তৈরির। আর এই সার্বিক কার্যক্রম চলবে গাজীপুর ও তেজগাঁও কারখানায়। সেই লক্ষ্যে বিআরটিসি কারিগরদের প্রশিক্ষণ চলছে দীর্ঘদিন ধরে।

তুলনামূলক সুবিধা:
সাধারণত নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পের মাধ্যমে গাড়ি আমদানি করতে হলে ডিপিপি অনুমোদন, চুক্তিসই ও সরবরাহ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ন্যূনতম ৩ বছর সময় লাগে। আর প্রকল্পের মাধ্যমে অনেক গাড়ি একসাথে আনা গেলেও বৈদেশিক সুদ পরিশোধ করতে হয়, আমদানি খরচও বেশি। বর্তমানে শুধুমাত্র চেসিস আমদানি করে বিআরটিসি দেশেই গাড়ি তৈরি করবে। এতে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। সেই সাথে হয়রানি ও ঝামেলা থেকেও মিলবে মুক্তি।

আমদানি জটিলতা হ্রাস:
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদেশ থেকে একটি সাধারণ বাস আমদানি করতে হলে গড়ে খরচ হয় ১ কোটি ১২ লাখ ৬০০ টাকা। এর মধ্যে ইউনিট মূল্য ৬৬ হাজার ডলার। রয়েছে ৩৫ শতাংশ সিডি/ভ্যাট ও ১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি। সবমিলিয়ে ৯৫ হাজার ৭০০ ডলার। সেই হিসেবে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। আর নিজস্ব ওয়ার্কশপে বাস প্রস্তুত করলে খরচ হবে অনেক কম।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, হিনো ওয়ান জে বাসের ইঞ্জিনসহ চেসিস মূল্য ৫৩ লাখ টাকা। বাসের সম্পূর্ণ বডি তৈরি ও অন্যান্য মালামাল বাবদ খরচ ৪০ লাখ টাকা। সবমিলিয়ে ৯৩ লাখ টাকা।

অশোক লিল্যান্ড বাসের ইঞ্জিনসহ চেসিসের দাম ৪৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর বাসের সম্পূর্ণ বডি তৈরি ও অন্যান্য মালামাল বাবদ খরচ ৮৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

এসি বাসের খরচ আরও বেশি:
বিদেশ থেকে আমদানিকৃত একটি অত্যাধুনিক এসি বাসের ক্রয়মূল্য ২ কোটি ৩৯ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে ইউনিট মূল্য ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার, ৩৫ শতাংশ সিডি/ভ্যাট-৪৯ হাজার ও ১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ১৪ হাজার ডলার। আর এ ধরনের বাস বিআরটিসির নিজস্ব ওয়ার্কশপে খরচ হবে ৯৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এরমধ্যে এসি বাসের ইঞ্জিনসহ চেসিসের মূল্য ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বাসের সম্পূর্ণ বডি তৈরি ও অন্যান্য মালামাল বাবদ খরচ ৪৮ লাখ টাকা।

বিআরটিসির প্রস্তুতি:
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিআরটিসিতে গাজীপুরের সমন্বিত কেন্দ্রীয় মেরামত কারখানা (আইসিডব্লিউএস) এবং কেন্দ্রীয় মেরামত কারখানায় (সিডব্লিউএস) বড় ওয়ার্কশপ শেড আছে। সেখানে ইঞ্জিন ওভারহলিং, মেশিনশপ এবং গাড়ির বডি তৈরির কাজ করা সম্ভব। কর্পোরেশনের ওয়ার্কশপগুলোয় ডেন্টিং, পেইন্টিংসহ ওয়ার্কশপ সংশ্লিষ্ট সকল কাজের অত্যাধুনিক সরঞ্জাম আছে। রয়েছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার ও কারিগর।

বিআরটিসির পর্যবেক্ষণ:
বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, সাধারণত ৪৫ আসনের একটি গাড়ির ক্রয়মূল্য ১ কোটি টাকা। ঢাকা-কুমিল্লা রুটে বাসটি চলাচল করে দেড় ট্রিপ দেয় প্রতিদিন। যেখানে মাসিক আয় ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৮০০ টাকা। সেই অনুযায়ী বছরে আয় ৯৫ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ টাকা। আর আনুমানিক মাসিক গড় ব্যয় ৫ লাখ ৮৩ হাজার ৪৩০ টাকা। এর মধ্যে জ্বালানি, লুব্রিকেন্ট, যন্ত্রাংশ, টায়ার, ভারী মেরামত, টোল/ফেরি, বেতন-ভাতা যুক্ত। আর বার্ষিক আয়-ব্যয় ৭০ লাখ ১ হাজার ১৬৭ টাকা। এক বছরের নিট লাভ হিসাব করলে আয় ৯৫ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ টাকা। আর ব্যয় ৭০ লাখ ১ হাজার ১৬৭ টাকা। অর্থাৎ এক বছর পর নিট লাভ হবে ২৫ লাখ ২৪ হাজার ৪৩২ টাকা। আর ১ কোটি টাকা নিট লাভ করতে লাগবে চার বছর। সবমিলিয়ে আয়-ব্যয়ের সমীকরণে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।

বিআরটিসির বর্তমান সক্ষমতা:
তথ্য বলছে- বিআরটিসি এ পর্যন্ত অনেক বাস ক্রয় করেছে। তবে সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তার অনেকগুলোই নষ্ট ও অকার্যকর হয়ে গেছে। বিগত সময়ে অব্যবস্থা থাকলেও ২০২১ সালে মোঃ তাজুল ইসলাম বিআরটিসির চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদানের পর থেকেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিআরটিসি। আগেকার পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ বাসগুলোর মেরামত শেষে বেশ কিছু বাস বিআরটিসির বহরে যুক্ত করা হয়। সবমিলিয়ে সারাদেশে বিআরটিসির ২০৩ টি রুটে প্রায় ১৩’শ বাস চলাচল করছে। এরই মধ্যে নতুন বাস তৈরি করে বহরকে আরও সমৃদ্ধ করার সক্ষমতা অর্জন করেছে বিআরটিসি। যার একমাত্র মহানায়ক প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম। ইতিপূর্বে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত থেকে বাস ক্রয় করলেও এবারই প্রথম বিআরটিসি নিয়েছে ভিন্ন পদক্ষেপ। নিজস্ব সক্ষমতা, নিজস্ব কারিগর ও সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিআরটিসির কারখানায় তৈরি হতে চলেছে দেশের সম্পদ বিআরটিসি বাস। যা অবশ্যই সম্মানের ও গৌরবের। বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ আশাবাদী যে, প্রতিমাসে ১০ টি করে বাস তৈরির উদ্যোগ অবশ্যই সফল হবে এবং বিআরটিসিতে যুক্ত হবে সমৃদ্ধ বহর।

সিরাজগঞ্জে মোজাম্মেল হক্ (রঃ) ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃত্তি ও সম্মাননা সনদ প্রদান

রেজাউল করিম স্টাফ রিপোর্টা,সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৬:৩৯ অপরাহ্ণ
সিরাজগঞ্জে মোজাম্মেল হক্ (রঃ) ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃত্তি ও সম্মাননা সনদ প্রদান

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে খাজা মোজাম্মেল হক্ (রঃ) ফাউন্ডেশন আয়োজনে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি ও সম্মাননা সনদ প্রদান করা হয়েছে।

বুধবার (১২ফেব্রুয়ারী), সকাল ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খাজা টিপু সুলতান। 

জেলার ১৩৪টি বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণীর ৭৪৭জন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি ও সম্মাননা সনদ দেওয়া হয়। 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাজা টিপু সুলতান বলেন, ভাল মানুষ হতে হলে শুধুমাত্র ভালো ফলাফলই যথেষ্ট নয়, সত্যিকারের সৎ জীবনযাপন জরুরি। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সততা এবং দায়িত্ববোধের সাথে চলতে হবে। ব্যবসায়ী হলে সততার সাথে কাজ করা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, তবে এটি করা আবশ্যক। চাকরি বা অন্য কোনও দায়িত্ব পালনেও ঈমানদার হতে হবে। ছোট বয়স থেকেই দায়িত্বশীলতা এবং হিসাবযোগ্যতা শেখা গুরুত্বপূর্ণ।

এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা শিক্ষা অফিসারের প্রতিনিধিসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবকবৃন্দ গণমান্য ব্যক্তিবর্গ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন। 

এছাড়াও অনুষ্ঠানের উপস্থিত  ছিলেন ফাউন্ডেশনের বৃহত্তর উত্তর অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী ছায়েদুল ইসলাম ভুঞা রোমেল। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ সোহেল হোসেন ইবনে বতুতা, বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী প্রকৌশলী খুরশীদ আহম্মদ, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী মোঃ শাহজাহান, বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী মেজবাউল আলম রিপন, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য মোঃ শামছুল আলমসহ ফাউন্ডেশনের অন্যান্য উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্যবৃন্দ।

জাতিসংঘের প্রতিবেদন

ছাত্র আন্দোলনে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৫:২৯ অপরাহ্ণ
ছাত্র আন্দোলনে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে

বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন।

এতে বলা হয়েছে, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। এদের অধিকাংশই বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনীগুলোর দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ শিশু ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে যে তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রতিবেদনটি অনুযায়ী, বাংলাদেশের সাবেক সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংস উপাদানগুলোর পাশাপাশি, গত বছরের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর সাথে জড়িত ছিল।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য এবং অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে একটি সরকারি নীতি উঠে এসেছে যা সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের এবং সমর্থকদের আক্রমণ ও সহিংসভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো উদ্বেগ উত্থাপনকারী এবং জরুরিভাবে আরও ফৌজদারি তদন্তের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্তে জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠনের নজির থাকলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটিই প্রথম।

বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত মৃত্যুর তথ্যের ভিত্তিতে, প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছে যে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন এবং এদের অধিকাংশই বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনীগুলোর দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। প্রতিবেদনটি নির্দেশ করেছে যে নিহতদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে যে তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।

বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনকারী উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত থেকে। কিন্তু এর পেছনে ছিল ধ্বংসাত্মক ও দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি এবং প্রশাসন থেকে সৃষ্ট বিস্তৃত ক্ষোভ, যা অর্থনৈতিক বৈষম্যের সৃষ্টি করেছিল। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্ষমতায় থাকার জন্য সাবেক সরকার ক্রমাগত সহিংস পন্থা ব্যবহার করে এই বিক্ষোভগুলো দমনে পদ্ধতিগতভাবে চেষ্টা করেছিল।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, “এই নৃশংস প্রতিক্রিয়া ছিল সাবেক সরকারের একটি পরিকল্পিত এবং সমন্বিত কৌশল, যা জনতার বিরোধিতার মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চেয়েছিল।”

“বিক্ষোভ দমন করার কৌশলের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে, তাদের সমন্বয় ও নির্দেশনায় শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ব্যাপক নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক এবং নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।”

বিশ্বনেতাদের সামনে মোদিকে পাত্তাই দিলেন না ম্যাক্রোঁ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৫:১৫ অপরাহ্ণ
বিশ্বনেতাদের সামনে মোদিকে পাত্তাই দিলেন না ম্যাক্রোঁ

বিশ্বনেতাদের সঙ্গে করমর্দনের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উপেক্ষা করতে দেখা গেছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে।মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) শীর্ষ সম্মেলনে এই দৃশ্য দেখা গেছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, মোদি করমর্দনের জন্য ম্যাক্রোঁর দিকে হাত বাড়াচ্ছেন। তবে ম্যাক্রোঁ সেখানে উপস্থিত অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে করমর্দন করলেও মোদির দিকে হাত বাড়াননি।

বার্তাসংস্থা আনাদোলু বলছে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে অন্যান্য নেতাদের মধ্যে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনের সঙ্গে আনন্দ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা গেছে।

মোদির হাত বাড়ানোর পরও তার সঙ্গে করমর্দন না করার এই ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে, কেউ কেউ এটিকে কূটনৈতিক অসম্মান হিসেবেও ব্যাখ্যা করেছেন। আবার অন্যরা মনে করছেন, এটি অনিচ্ছাকৃতও হতে পারে।

তবে ফরাসি বা ভারত সরকার এই বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে দুই দিনের এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রায় ১০০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী এবং বিজ্ঞানীরা অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স। দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তার প্রথম বিদেশ সফর।

ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ঘোষণা করা আন্তর্জাতিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সনদে ফ্রান্স, চীন ও ভারতসহ ৬০টি দেশ স্বাক্ষর করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এতে সই করেনি। বিশ্বজুড়ে এআইকে নিরাপদ করার লক্ষ্যে এ চুক্তি করা হয়েছে।