সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছে ৯ জেলে
![সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছে ৯ জেলে](https://bdnews999.com/wp-content/uploads/2025/02/download-10.jpeg)
অপহরণের ১৭ দিন পর মাথা পিছু দুই লাখ ৮৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯ জন জেলে। গত ২৬ জানুয়ারী দুবলার চর এলাকার বাহির সমুদ্র থেকে মুক্তি পাওয়া ৯ জন সহ ১৫ জেলেকে অপহরণ করা হয়। মুক্তিপণ নিয়ে জেলেদের চোখ বেধে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ এলাকায় জঙ্গল থেকে উপরে উঠিয়ে দিয়ে যায় বনদস্যু দয়াল বাহিনীর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার ভোর রাত ৩টার দিকে তারা বাড়িতে পৌঁছায়।
জানা যায়, মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা জেলেদের মধ্যে ৭ জনের বাড়ি আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নে। একজনের বাড়ি শ্যামনগরে ও আরেকজনের বাড়ি খুলনায়।
ফিরে আসা জেলেরা হলেন, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রাকাটি গ্রামের মোঃ দাউদ আলী সানার ছেলে অজাহারুল ইসলাম, রুইয়ারবিল গ্রামের জুলফিকার সরদারের ছেলে আলমগীর হোসেন, একই গ্রামের শহর আলী গাজীর ছেলে হাফিজুর রহমান, আব্দুল হক সানার ছেলে মোঃ শাহীনুর আলম, দিঘালারাইট গ্রামের মোঃ আবু দাউদ জদ্দারের ছেলে মোঃ রাসেল, শ্রীপুর গ্রামের মোঃ রুহুল আমিন ঢালির ছেলে মোঃ শাহাজান ঢালী ও দৃষ্টিনন্দন গ্রামের মোঃ আনিচ সরদারের ছেলে নুরে আলম এবং শ্যামনগর উপজেলার বন্যতলা গ্রামের আবু তালেব এর ছেলে শাহ্ আলমসহ ৯জন।
ফিরে আসা জেলেরা জানান, মুক্তিপণের টাকা দিতে না পারায় বাকি ৬ জনকে এখনো আটক রেখেছে ডাকাতরা। এদের মধ্যে সাতক্ষীরার আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা গ্রামের মোঃ মহিজুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, একই গ্রামের মোঃ নুরমান আলী সরদারের ছেলে অরাফাত হোসেন ও শামছুর রহমান গাজীর ছেলে শাহাজান গাজী।
অপহৃত চাকলা গ্রামের শাহাজান গাজীর স্ত্রী নাজমা খাতুন জানান, স্বামী বাড়ি আসছে খবর পেয়ে গতকাল রাত ৩টা পর্যন্ত জেগে বেড়িবাঁধের উপর বসে ছিলাম। কিন্তু প্রতাপনগরের সাতজন আসলেও আমার স্বামীসহ আমাদের চাকলা গ্রামের তিন জন ফিরে আসেনি। এত টাকা আমার পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব না। তিনি স্বামীকে মুক্ত করে আনার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।প্রতাপনগর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম রসুল জানান, মাথাপিছু ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে অপহৃত ১৫ জেলের মধ্যে ৯ জনকে মুক্তি দিয়েছে ডাকাতরা। বাকি ৬ জনের মধ্যে আমার গ্রামের তিনজন রয়েছে। মুক্তিপণের টাকা দিতে না পারায় তাদেরকে এখনো জিম্মি করে রেখেছে ডাকাতরা।
প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালী তার ইউনিয়নের সাতজন জেলে ফিরে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাকিদের কাছে নৌকা থাকায় এবং মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ না হওয়ায় ডাকাতরা তাদেরকে ছাড়েনি।
প্রসঙ্গতঃ গত ২৭ জানুয়ারি সকাল আনুমানিক ভোর ৬টার দকে সুন্দরবনের ডাকাত দয়াল বাহিনী সদস্যরা সুন্দরবনের দুবলার চরের নিরীহ জেলেদের উপর আক্রমণ করে। এসময় দুঃসাহসী জেলেরা নিজেদের আত্মরক্ষার্থে ডাকাতদেরকে প্রতিহতের চেষ্টা করে এবং একই সাথে দুবলার চরের কোস্টগার্ড স্টেশনে সাহায্য চেয়ে ফোন করে। ডাকাতদের সাথে জেলেদের হাতাহাতির একপর্যায়ে জেলেরা তিন ডাকাতকে জাল দিয়ে ধরে ফেলে। কিন্তু এসময় ডাকাতরা সেখান থেকে ১৫ জেলেকে ধরে নিয়ে যায়।
আপনার মতামত লিখুন