খুঁজুন
রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ২৮ বৈশাখ, ১৪৩২

স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫

‘সরকার জীবিত অবস্থায় জাতীয় পুরস্কার দিতে চায়’

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫, ১:৫৮ অপরাহ্ণ
‘সরকার জীবিত অবস্থায় জাতীয় পুরস্কার দিতে চায়’

আগামীতে জীবিত অবস্থায় জাতীয় পুরস্কার দেওয়ার নিয়ম চালু করতে অন্তর্বর্তী সরকারের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জীবদ্দশায় পুরস্কার পেলে দেশ, ব্যক্তি ও পরিবারের জন্য যে আনন্দ তা মরণোত্তর পুরস্কারে পাওয়া যায় না। আমরা যেন আগামীতে একটা নিয়ম করতে পারি, মরণোত্তরদের পালা শেষ করে দিয়ে জীবিত অবস্থায় যারা আছেন তাদের পুরস্কার দেই। তাদের প্রতি সম্মানটা দেই।

বাবার পদক প্রাপ্তির আনন্দের কথা উল্লেখ করে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খানের (মরণোত্তর) সন্তান অরণী খান বলেন, বাবা জীবিত অবস্থায় এ সম্মাননা পেলে আমাদের আনন্দ অনেক বাড়ত। তাই সরকারের কাছে অনুরোধ যে সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং অন্যান্য বরেণ্য ব্যক্তি জীবিত আছেন, জীবিত অবস্থায় তাদের যেন যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দেওয়া হয়।

পরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ নিয়ে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, আজকের (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠান আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে মরণোত্তর পুরস্কার দেওয়ার চাইতে জীবদ্দশায় পুরস্কারটা পেলে যে আনন্দ দেশের জন্য, পরিবারের জন্য, ব্যক্তির জন্য, তা মরণোত্তর পুরস্কারে পাওয়া যায় না। যাকে আমরা সম্মান দেখাচ্ছি তিনি আমাদের সঙ্গে নেই।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ যারা স্বাধীনতা পদক পেলেন, তারা জীবদ্দশায় এই সম্মান দেখতে পাননি, যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তবে জাতি তাদের অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছে।

পুরস্কারপ্রাপ্তদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের কাজ যুগ যুগ ধরে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে তরুণদের মধ্যে অনুপ্রেরণা ছড়িয়ে দেবে।

বরেণ্য ব্যক্তিদের পুরস্কার দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, তারা আমাদের জাতিকে মহান উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। পুরস্কার দিয়ে শুধু তাদের সম্মানিত করছি না বরং জাতি হিসেবে নিজেদের সম্মান তাদের মাধ্যমে পাচ্ছি। তারা প্রত্যেকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহুল পরিচিত। তারা জাতির জন্য অনেক কিছু দিয়ে গেছেন। তাদের কথা জীবদ্দশায় স্মরণ করতে না পারলে অকৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যাব। যাদেরকে এ সম্মান দিতে চাই, যথা সময়ে সেটা যেন দেই।

প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্যে ২৫ মার্চের কালরাত এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করে বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে আইনের শাসন থাকবে, মানুষের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত হবে এবং একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে এখনো ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। দীর্ঘদিন ধরে এদেশের মানুষকে তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। দুর্নীতি, লুটপাটতন্ত্র ও গুম-খুনের রাজত্ব চালিয়ে দেশে একটি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তাদের কারণে আমরা একটি ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার স্বপ্ন দেখার সুযোগ পেয়েছি। এ সুযোগ আমরা কোনোক্রমেই বৃথা যেতে দেব না।

এ সময় পুরস্কার প্রাপ্তদের কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা।

লেখক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমরকে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদান করতে পেরে গর্বিত উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাঁর সম্মাননা স্মারক আমাদের পরের প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত থাকবে।

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যে জেন-জি প্রজন্ম, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের অনুপ্রেরণার নাম বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ন্যায়বিচারের জন্য, বাকস্বাধীনতার জন্য জোরালো প্রতিবাদ করে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত তিনি হয়েছিলেন। তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানাতে পেরে আমরা গর্বিত।

এবার পুরস্কার প্রাপ্ত সাতজনের মধ্যে ছয়জনই মরণোত্তর সম্মাননা পেয়েছেন। কেবল শিক্ষা ও গবেষণা ক্যাটাগরিতে বদরুদ্দীন উমর জীবদ্দশায় এ পুরস্কার পান। তবে আগেই এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন তিনি এ পুরস্কার গ্রহণ করবেন না। তার পদকের রেপ্লিকা জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষণ করবে সরকার।

বাকি পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।

এছাড়া সরকার জানিয়েছে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের জেড-ফোর্সের কমান্ডার, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ২০০৩ সালে দেওয়া স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর) বহাল রাখা হচ্ছে।

পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৬ সালে বীর উত্তম জিয়াউর রহমানকে দেওয়া এ পুরস্কার বাতিল করেছিল।

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। এটি দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশিদ।

১৯৭৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩২৪কে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

যুদ্ধবিরতিতে পাকিস্তানে আনন্দ-উল্লাস, জয় হয়েছে বলছেন দেশটির মানুষ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ
যুদ্ধবিরতিতে পাকিস্তানে আনন্দ-উল্লাস, জয় হয়েছে বলছেন দেশটির মানুষ

ভারতের সঙ্গে কয়েকদিনের উত্তেজনার পর যুদ্ধবিরতিতে গেছে পাকিস্তান। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। ‘বিজয় হয়েছে’ দাবি করে তারা বিভিন্ন জায়গায় আনন্দ উল্লাস করছেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি।

বিজ্ঞাপন

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন শহরে ‘পাকিস্তান দীর্ঘজীবী হোক’ স্লোগান দিতে শোনা গেছে। তারা বলছেন, এই যুদ্ধবিরতি পাকিস্তানের জন্য গৌরবের। একইসঙ্গে উত্তেজনা কমায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন তারা।

শনিবার (১০ মে) দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। যা ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশ নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

মোহাম্মদ ফাতেহ নামে লাহোরের এ যুবক এপিকে বলেছেন, “এটি পাকিস্তানের জন্য একটি বড় দিন। আমাদের সেনারা শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এতে ভারতের কাছে কোনো উপায় ছিল না। তারা যুদ্ধবিরতি করতে বাধ্য হয়েছে।”

ইসলামাবাদে জুবাইদা বিবি নামে ৪৫ বছরের এক নারী বলেন, “যুদ্ধ দুর্ভোগ ছাড়া আর কিছু আনে না। আমরা খুশি শান্তি ফিরে আসছে। বিষয়টি আমার কাছে ঈদের মতো লাগছে। আমরা জিতেছি।”

বিজ্ঞাপন

যুদ্ধবিরতির খবরে মুলতানে একে অপরকে মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন পাকিস্তানিরা।
আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী পেশোয়ারের কাছের উপজাতি এলাকায় কিছু মানুষকে আকাশে গুলি ছুড়ে যুদ্ধবিরতি উদযাপন করতে দেখা গেছে।

অপরদিকে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরের রাজধানী মুজাফফরাবাদের সাধারণ মানুষ এ যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা বলছেন, বারবার সংঘাতে জড়ানো এই অঞ্চলটিতে বহুল প্রতীক্ষিত শান্তি ফিরবে বলে আশা তাদের। সেখানকার জুলফিকার আলী নামে এক ব্যক্তি বলেন, “আমাদের জন্য শান্তির অর্থ হলো বেঁচে থাকা। আমরা অনেক দুর্ভোগ সহ্য করেছি। আমি খুশি ভারত ও পাকিস্তান ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

সূত্র: এপি

ভীতিকর গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে মোদিকে যুদ্ধ বন্ধে চাপ দেয় যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ
ভীতিকর গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে মোদিকে যুদ্ধ বন্ধে চাপ দেয় যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছে। দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টা ধরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রচেষ্টায় এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বিজ্ঞাপন

তবে পরমাণু অস্ত্রধারী এই দুই দেশের যুদ্ধবিরতির নিয়ে সামনে এসেছে নতুন তথ্য। মূলত ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ভীতিকর তথা উদ্বেগজনক গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরুর আহ্বান জানান—এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

সিএনএন জানায়, মার্কিন প্রশাসনের একটি কেন্দ্রীয় দল — ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস — ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাত ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের মধ্যেই শুক্রবার সকালে যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু গোয়েন্দা তথ্য পায় যা পরিস্থিতিকে বিপজ্জনক বলে ইঙ্গিত দেয়।

প্রভাবশালী এই মার্কিন সংবাদমাধ্যম বলছে, ওই তথ্যের ভিত্তিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পুরো পরিকল্পনার ব্যাপারে অবহিত করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে তিনি (জেডি ভ্যান্স) সরাসরি নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন।

বিজ্ঞাপন

মার্কিন এই ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্পষ্ট করে বলেন, হোয়াইট হাউসের মতে, এই সংঘাত আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে এবং সপ্তাহান্তে বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে। ভ্যান্স এসময় মোদিকে উৎসাহ দেন যেন ভারত সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং উত্তেজনা কমানোর বিভিন্ন পথ বিবেচনা করে।

ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা ছিল, দুই দেশের মধ্যে কোনও ধরনের কূটনৈতিক আলোচনা চলছে না। তাই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল দুই পক্ষকে আবারও আলোচনায় ফিরিয়ে আনা। সূত্র জানায়, ভ্যান্স এসময় মোদিকে এমন একটি শান্তিপূর্ণ বিকল্প পথের কথাও জানান, যেটি পাকিস্তান গ্রহণ করতে পারে বলে আমেরিকার ধারণা ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই তথ্যের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো না হলেও, তা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, এই তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বিষয়টিতে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সক্রিয় হবার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে সাহায্য করে।

সিএনএন বলছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে আলাপের পরেই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা— যার মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওও ছিলেন— ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাতভর যোগাযোগ চালিয়ে যান।

যদিও মার্কিন প্রশাসন যুদ্ধবিরতির খসড়া তৈরি বা আলোচনায় সরাসরি যুক্ত হয়নি, তবে তারা বিষয়টিকে আলোচনার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার অংশ হিসেবে দেখেছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, মোদির সঙ্গে ভ্যান্সের ফোনালাপ ছিল যুদ্ধবিরতির এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।

সিএনএন বলছে, ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ফোনালাপ সম্পর্কে জানেন এমন একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা দ্রুত বাড়ছিল, তখন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিষয়টি শান্ত করার জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালানো হচ্ছিল।

ওই কর্মকর্তা বলেন, “তখন স্পষ্ট ছিল যে, দুই দেশের মধ্যে কোনও সরাসরি কথা বলা হচ্ছিল না। তাই আমাদের লক্ষ্য ছিল—আমাদের ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাদের কথা বলায় উৎসাহ দেওয়া এবং যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে উত্তেজনা কমানোর পথ খুঁজে বের করা।”

তিনি আরও জানান, এই আলোচনার ধারাবাহিকতায় মার্কিন কর্মকর্তারা বুঝতে পারেন, উভয় পক্ষের জন্য উত্তেজনা কমানোর ‘সম্ভাব্য পথ’ কী হতে পারে। এরপর তারা সেই বার্তা দুই পক্ষের মধ্যে পৌঁছে দিতে সাহায্য করেন এবং কিছুটা হলেও যোগাযোগের ঘাটতি দূর করতে সহায়ক হন। এর ফলে ভারত ও পাকিস্তান সরাসরি আলোচনায় বসার সুযোগ পায়, যার ফলাফল এখন দেখা যাচ্ছে।

মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধবিরতির কোনও চুক্তি খসড়ায় যুক্ত ছিল না। তাদের ভূমিকা ছিল কেবল দুই পক্ষকে আলোচনায় ফিরিয়ে আনা।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে করা ফোনটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। প্রশাসনের আরও এক সূত্র জানায়, ভ্যান্স গত মাসে ভারত সফরে গিয়ে মোদির সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করেছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের বিশ্বাস ছিল, ভ্যান্স ও মোদির ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে ফোনালাপটি আরও কার্যকর হবে।

টিএম

যুদ্ধবিরতির পর ভারতের অমৃতসরে লাল সতর্কতা জারি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ১০:১২ পূর্বাহ্ণ
যুদ্ধবিরতির পর ভারতের অমৃতসরে লাল সতর্কতা জারি

যুদ্ধবিরতির পরও ভারতের ভূখণ্ডে পাকিস্তান হামলা অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ নয়াদিল্লির। এ অভিযোগকে আরও দৃঢ় করেছে ভারতের পাঞ্জাবের কেন্দ্রীয় শহর অমৃতসরের ঘটনা। শহরটিতে লাল সতর্কতা জারি করেছেন জেলা প্রশাসক।

বিজ্ঞাপন

গতকাল রাতে অমৃতসর শহরে কয়েক দফা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এরপরই নগরপ্রশাসন পুরো শহরের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ (ব্ল্যাকআউট) করে দেয়। পরে ভোর পৌনে ৫টা থেকে শহরের বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হওয়া শুরু করে।

রোববার সকালে এক বিবৃতিতে শহর ও জেলার বাসিন্দাদের উদ্দেশে অমৃতসরের জেলা প্রশাসক বলেন, “আপনাদের অসুবিধার বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ ফের স্বাভাবিক করছি। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে বিপদ এখনও কাটেনি। অমৃতসর শহর ও জেলা জুড়ে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নগরবাসীর উদ্দেশে বলছি, আপনা খুব জরুরি প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে বের হবেন না। ঘরের ভেতর থাকবেন এবং অবশ্যই জানালার কাছে যাবেন না। ঝুঁকি কেটে যাওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা সবুজ সংকেত জারি করব। ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এবং দয়া করে ভয় পাবেন না।”

বিজ্ঞাপন

ভারতের জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে হামলাকে ঘিরে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে উত্তেজনা চলার পর সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তান। এই সংঘাতের জেরে গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়ে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা।

টানা কয়েক দিনের সংঘাত-সহিংসতা চলার পর যুক্তরাষ্টের মধ্যস্থতায় শনিবার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত ও পাকিস্তান। তবে ভারতের অভিযোগ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পরও ভারতের ভূখণ্ডে হামলা অব্যাহত রেখেছে পাকিস্তান। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী।

বিজ্ঞাপন

তবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সূত্র : এএনআই

এসএমডব্লিউ