খুঁজুন
সোমবার, ২ জুন, ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

সিআইডি পুলিশের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

‘ক্রসফায়ারের ভয়’ দেখিয়ে ৪ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫, ৩:৫১ অপরাহ্ণ
‘ক্রসফায়ারের ভয়’ দেখিয়ে ৪ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ

সময়টা ২০২৩ সালের ২ আগস্ট। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর শান্তিনগর চামেলীবাগের গ্রিন পিস অ্যাপার্টমেন্টের একটি ফ্ল্যাটে তৎকালীন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমার নেতৃত্বে ৭/৮ জন পুলিশ প্রবেশ করেন। ঘুমন্ত অবস্থায় ওই বাসা থেকে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় মেডিকেল ভর্তি কোচিং প্রতিষ্ঠান ‘মেডিকো’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. মো: জোবায়দুর রহমান জনিকে তুলে নিয়ে যায় সিআইডির সদস্যরা। সেসময় জনির বিরুদ্ধে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ আনে সিআইডি।

এখানেই শেষ নয়, ডা. মো: জোবায়দুর রহমান জনিকে সিআইডি হেডকোয়ার্টারে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমার নেতৃত্বে বেধড়ক পেটানো হয়। আটকের ২৯ ঘণ্টা পর আদালতে সোপর্দ করা হয় জনিকে। এরপর রিমান্ডের নামে জনির স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করে তার স্বামীকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে সিআইডির কর্মকর্তারা হাতিয়ে নেয় ৪ কোটি টাকা। টাকা পরিশোধ করতে ভুক্তভোগীর পরিবারকে গাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি বিক্রি করতে বাধ্য করেছিলেন সিআইডির কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটিতে (ডিআরইউ) নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ‘মেডিকো’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. মো: জোবায়দুর রহমান জনি।

সংবাদ সম্মেলনে জনাব জনিকে পুলিশ কর্তৃক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা, শারীরিক নির্যাতন করে মিথ্যা স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ধারণ ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়ার মতো ভয়াবহ অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ডা:জোবায়দুর রহমান বলেন, “২০২৩ সালের ২ আগস্ট আমার ফ্ল্যাটে সাদা পোশাকে সিআইডি কর্মকর্তা জুয়েল চাকমার সঙ্গে আরও ৭/৮ জন পুলিশ প্রবেশ করেন। এ সময় তারা আমার বাসার বিভিন্ন মালামাল লুণ্ঠন করে এবং আমাকে তুলে নিয়ে যায়। গ্রেফতারের সময় আমার স্ত্রী ও শিশু সন্তান ছিলেন ঘরেই। আমি বলেছিলাম একটু সময় দেন, আমার স্ত্রী হিজাব পরবে কিন্তু কোনো কথা না শুনেই পুলিশ জোর করে রুমে ঢুকে পড়ে। সিআইডির কর্মকর্তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানির জন্য বেআইনিভাবে বাসা থেকে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে যায় আমাকে। তুলে নিয়ে যাওয়ার ২৯ ঘণ্টা আমার পরিবারকে জানায়নি আমি কোথায় আছি।”

জোবায়দুর রহমান জনি বলেন, “সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে দুই চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে এলোপাতাড়ি পেটানোর ছবি আমার স্ত্রী ও পরিবারকে পাঠানো হয়। যা তৎকালীন সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়ার নির্দেশে করা হয় এবং পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়, অন্যথায় ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আমার পরিবার গাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি বিক্রি করে সিআইডির এসআই মেহেদি হাসানের গাড়িচালক সবুজের কাছে দফায় দফায় ৪ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয় এবং এসআই আতিকুর রহমান টাকা দেওয়ার স্থান ও সময় জানিয়ে তদারকি করত।”

পুলিশের নির্যাতনের বর্ণনায় তিনি আরও বলেন, “রিমান্ড চলাকালীন পুলিশি নির্যাতনে আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কারাবাসের সময় ৪৩দিন কারা হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে, ঠিকভাবে হাঁটতে পারতাম না। রিমান্ডে থাকা অবস্থায়, কারাগারে থাকা অবস্থায় এবং পরে কারামুক্তির এক পর্যায়ে সিআইডির পুলিশ কর্মকর্তারা আরও মামলার ভয় দেখিয়ে ও তার স্ত্রীকে মানিলন্ডারিংয়ে মামলায় সম্পৃক্ত করার ভয় দেখিয়ে পরিবারের কাছ থেকে ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট ৫০ লাখ টাকা, ১৬ আগস্ট ১ কোটি টাকা, ২৩ আগস্ট ৮০ লাখ টাকা, ২৮ আগস্ট ৭০ লাখ টাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর ৫০ লাখ এবং ২০২৪ সালের ১৮ অক্টোবর ৫০ লাখ টাকাসহ মোট ৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে। সিআইডির কর্মকর্তাদের অবৈধ দাবি মেটাতে ব্যক্তিগত গাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি বিক্রি করতে হয়েছে। টাকা নেওয়া সংক্রান্ত একাধিক অডিও রেকর্ড আমার কাছে আছে। আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ রাখা হয়েছে ৬ মাসের বেশি।”

মেডিকেল প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “সম্পূর্ণ ভুল তথ্যে আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতারের আগে সিআইডি আমাকে বলে- ২০০৬ সাল থেকে মেডিকো ফুলে ফেঁপে উঠেছে, অথচ মেডিকো শুরু হয় ২০১১-১২ সাল থেকে। আমার পরিবারকে ভয় দেখানোর জন্য অস্ত্রসহ অভিযানের নাটক করেছিল সিআইডি।”

টাকা লেনদেনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “স্কাই সিটি হোটেল ও আগারগাঁওয়ের রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই আপনারা বুঝবেন। এছাড়া ছয় দফায় যে চার কোটি টাকা দেওয়া হয় তার রেকর্ডও রয়েছে।”

ডা: জোবায়দুর রহমান বলেন, “জীবনের ঝুঁকি বিবেচনায় এতদিন অভিযুক্ত সিআইডির সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারিনি। ১৫ এপ্রিল আদালতে বিভিন্ন অভিযোগে সিআইডির তৎকালীন কর্মকর্তা বর্তমানে র‍্যাব-১৪ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা, সাবেক সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া, তৎকালীন সিআইডিতে কর্মরত বর্তমানে বরিশাল মেট্রোপলিটনের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মেহেদি হাসান এবং সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমানসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।”

বেলকুচিতে পূবালী ব্যাংকের ২৩২ তম উপশাখার উদ্বোধন

রেজাউল করিম স্টাফ রিপোর্টার,সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১০:৫৬ অপরাহ্ণ
বেলকুচিতে পূবালী ব্যাংকের ২৩২ তম উপশাখার উদ্বোধন

গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করতে এবং সর্বস্তরের মানুষের দোরগোড়ায় আধুনিক ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে পূবালী ব্যাংক পিএলসি-এর ২৩২ তম উপশাখার শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।

রবিবার (১ জুন) সকালে উপজেলার চালা ওয়াবদা বাঁধ সংলগ্ন আলহাজ্ব আবুল হাসেম সরকার মার্কেটের ২য় তলায় অবস্থিত নতুন উপ-শাখা প্রাঙ্গণে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পূবালী ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও বগুড়া অঞ্চলের অঞ্চল প্রধান এ এস এম রায়হান শামীম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবু জাফর মো: রকিবুল্লাহ, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পূবালী ব্যাংক পিএলসি খামারগ্রাম শাখার ব্যবস্থাপক মো: মাহবুব আলম, সঞ্চালনা করেন বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তা মো: শওকত রহমান।

পূবালী ব্যাংকের নতুন এই উপশাখাটি খামারগ্রাম শাখার অধীনে পরিচালিত হবে। এর মাধ্যমে বেলকুচিসহ আশেপাশের অঞ্চলের সাধারণ জনগণ, ব্যবসায়ী, কৃষক ও চাকরিজীবীরা সহজে ও দ্রুত আধুনিক ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এতে স্থানীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বেলকুচি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো: রেজাউল করিম, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তাঁদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে ব্যাংকের সংযোগকে আরও দৃঢ় করে তোলে। পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, নতুন এই উপশাখার মাধ্যমে এখন থেকে সঞ্চয় ও চলতি হিসাব, ক্ষুদ্রঋণ, মোবাইল ও কার্ড ব্যাংকিং, এবং এটিএমসহ অন্যান্য আধুনিক সেবা সহজে পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে পুবালী ব্যাংকের ৫০৮টি শাখা এবং ৬১৪টি এটিএম সার্ভিস রয়েছে, যা সারা দেশে একটি বিস্তৃত ও গতিশীল আর্থিক সেবাব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। এই উপশাখা চালুর মাধ্যমে পূবালী ব্যাংক আবারও প্রমাণ করল যে, এটি কেবল একটি ব্যাংক নয় বরং দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি ও উন্নয়নের একটি নির্ভরযোগ্য সঙ্গী।

নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই: জোনায়েদ সাকি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১০:১৬ অপরাহ্ণ
নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই: জোনায়েদ সাকি

নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। রবিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, বিচারের বিষয়ে মানুষ দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায়। সংস্কার, নির্বাচন এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এগুলো পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন- এগুলো এক সূত্রে গাথা।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংস্কারগুলো দূরত্ব ও অনাস্থা দেশকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে। নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই। যদি ডিসেম্বরে নির্বাচন না হয় তাহলে সেটার ব্যাখ্যা জনগণের সামনে হাজির করতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ না দিলে সংস্কারের অনেক বিষয় সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। সংস্কারের অনেকগুলো বিষয়ে ঐক্যমত্য আছে আবার কিছু বিষয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে ঐক্যমত তৈরি করা এবং নানা বিষয় সংস্কারও সম্ভব। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকার নিজেও নানা পক্ষপাত দেখাচ্ছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও জরুরি।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, যারা শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে সাহায্য করেছিলেন, এখন তারা নতুন বন্দোবস্ত করে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ফ্যাসিজমের থেকে যাওয়া শিকড়ে পানি ঢেলে তারা আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাচ্ছেন।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্যে ফাটল ধরেছে। কোনো অভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতারা এতটা বিতর্কিত হননি, যতটা এখন হচ্ছেন। তরুণরা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজে জড়িত হয়ে পড়েছেন, যা লজ্জাজনক।

এবি পার্টির সভাপতি মজিবর রহমান মঞ্জু বলেন, বিএনপিকে বলেছিলাম জাতীয় অধিকারের প্রশ্নে আপনারা ঐক্য গড়ে তুলুন। সরকার আমাদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে নাই, রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে পারে নাই। আমাদের ঐতিহাসিক সুযোগ আমরা যেন নষ্ট না করি।

আদালতের নির্দেশনা পেলে জামায়াতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: ইসি সচিব

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ণ
আদালতের নির্দেশনা পেলে জামায়াতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: ইসি সচিব

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, আদালতের নির্দেশনা কমিশনে পৌঁছালে জামায়াতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আজ রবিবার রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।

পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, আদালতের নির্দেশনা ইসিতে পৌঁছালে জামায়াতের নিবন্ধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে সাময়িক নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরের বছর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন।

রিটে জামায়াতের তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নির্বাচন কমিশনসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়। তারা জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের আর্জি জানান।

এ রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক (পরে প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. আবদুল হাইয়ের (বর্তমানে অবসর) হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রুল জারি করেন। নিবন্ধন নিয়ে রুল জারির পর ওই বছরের ডিসেম্বরে একবার, ২০১০ সালের জুলাই ও নভেম্বরে দু’বার এবং ২০১২ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দু’বার তারা গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয় জামায়াত। এসব সংশোধনীতে দলের নাম ‘জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয়।

২০১৩ সালের ১২ জুন ওই রুলের শুনানি শেষ হয়। একই বছরের ১ আগস্ট জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন (বর্তমানে অবসর), বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম (পরে আপিল বিভাগের বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন) ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের (১৯ নভেম্বর পদত্যাগ করেন) সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ।

সে সময় সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বলেন, এ নিবন্ধন দেওয়া আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত। একইসঙ্গে আদালত জামায়াতে ইসলামীকে আপিল করারও অনুমোদন দিয়ে দেন।

তবে এ রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন একই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। পরে একই বছরের ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।

এরপর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে টানা চতুর্থ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। তবে গত বছর জুলাই মাস থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে ছাত্র-জনতা সরকার পতনের দাবি তোলে। এর মধ্যে ১ আগস্ট সরকার অঙ্গসংগঠনসহ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের আবেদন বাতিলের উদ্যোগ নেয়।