লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযান শুরু
তিব্র প্রতিবাদ ও সমালোচনার মধ্যেই লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করেছে দখলদার, বর্বর ইসরায়েল। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সীমান্তবর্তী এলাকার গ্রামগুলোতে হিজবুল্লাহর ঘাঁটি লক্ষ্য করে ‘সীমিত’ পরিসরে হামলা চালাচ্ছে তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বিবৃতিতে সামরিক বাহিনী আরও জানিয়েছে, ‘সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট এলাকায়, সীমিত পরিসরে’ স্থল অভিযান পরিচালনা শুরু হয়েছে। অভিযানে কেবল ‘উত্তর ইসরায়েলের জনগণের প্রতি তাৎক্ষণিক হুমকি’ প্রতিরোধে তাদের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ লেবাননের গ্রামগুলোয় হিজবুল্লাহর ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তাদের বিমান ও আর্টিলারি বাহিনী ‘সুনির্দিষ্ট হামলা’ পরিচালনায় সহায়তা করছে।
লেবাননের সীমান্তবর্তী শহর আইতা আল-শাবের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা ভারী বোমাবর্ষণসহ হেলিকপ্টার ও ড্রোনের আওয়াজ পাচ্ছেন। সীমান্তবর্তী আরেক শহর রেমেইশের দিকে ক্রমাগত বিস্ফোরক নিক্ষেপের কথাও জানা গেছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট সোমবার উত্তর ইসরায়েলের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তিনি দাবি করেছেন, লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে যুদ্ধের পরবর্তী ধাপ শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণে হিজবুল্লাহর আগ্রাসনে পালিয়ে যাওয়া ইসরায়েলিরা ঘরে ফেরার সুযোগ পাবেন।
ইসরায়েল ও ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এরইমধ্যে অস্থিতিশীল মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠলো। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার মধ্য দিয়ে আজকের পরিস্থিতির সূত্রপাত।
দুই ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্যালেস্টিনিয়ান ফাতাহ মুভমেন্টের সামরিক শাখা আল আকসা মারটাইরস ব্রিগেড লেবানন শাখার কমান্ডার মৌনির মাকদাহ ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছেন। অবশ্য তার পরিণতি এখনও অজানা।
ওই ব্যক্তিরা আরও জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় সিদন শহরের নিকটবর্তী ঘনবসতিপূর্ণ ‘আইন আল হিলওয়ে’ ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরের একটি ভবনে হামলা হয়েছে। প্রায় বছরখানেক ধরে চলা ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর দ্বন্দ্বে এই প্রথম লেবাননের বৃহত্তম ফিলিস্তিনি শিবিরে হামলা হলো।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় অন্তত ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। প্রায় ২৫০ জনকে হামাস জিম্মি করে নিয়ে যায় বলে দাবি করে আসছে তেল আবিব। এর জবাবে ফিলিস্তিনে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪১ হাজার ৩০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অন্তত ২৩ লাখ মানুষ। ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলে নিয়মিতই রকেট হামলা চালিয়ে আসছিল লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
আপনার মতামত লিখুন