খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

এবার নিষিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে আ’লীগসহ ১৪ দল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
এবার নিষিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে আ’লীগসহ ১৪ দল

নানা অপরাধের দায়ে নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রলীগের পর এখন নিষিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ। শুধু আওয়ামী লীগই নয়, নিষিদ্ধ হতে পারে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো ও সহযোগী জাতীয় পার্টি।

আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনামলে এই দলগুলির কয়েকটি সরাসরি সরকারের মন্ত্রিসভায় অংশ নিয়েছে। আবার কোনো কোনোটি নির্বাচনী সহযোগী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে ও জোটের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দলটিকে নিষিদ্ধের দাবি ওঠে এবং তা অব্যাহত রয়েছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পাশাপাশি দলটির অঙ্গসংগঠনগুলি এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট ও সহযোগী দলগুলোকে নিষিদ্ধেরও দাবি উঠেছে।

আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের স্বৈরশাসন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এবং এই দলগুলো সেই কাজে আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে আওয়ামীলীগ সহ এই দলগুলোকে নিষিদ্ধ করার দাবি সম্প্রতি আরও জোরালো হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষপটে বুধবা (২৩ অক্টোবর) সরকার নিষিদ্ধি করেছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে।

ওই দিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবারের (২৪ অক্টোবর) মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের আল্টিমেটাম দেয়। এর পর রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে।

আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেও এ ধরনের চাপ আসতে পারে, এমন ধারণাও করা হচ্ছে। কারণ ইতোমধ্যে বিভিন্ন দিক থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জোরালো হয়ে এসেছে।

গত ২৩ অক্টোবর দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ছাত্র অধিকার পরিষদ এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ ও তার অঙ্গসংগঠনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধের দাবি জানায়। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ অক্টোবরর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ব্যানারে ঢাবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তারা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল। গত ১৯ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে।

এদিকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন, ১৪ দল ও অঙ্গসংগঠন এবং জাতীয় পার্টিকে ফ্যাসিবাদী দল আখ্যা দিয়ে সাংবিধানিকভাবে এসব দল নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। গত ২৩ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এই সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়। গত ১৪ আগস্ট ঢাকা কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়।

এ ছাড়া বিভিন্ন সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি থেকে এবং অন্যান্য্য দুই একটি সংগঠন ও ফোরাম থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি তোলা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় এ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও আদালতে দাবি জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গত ১৪ আগস্ট শেখ হাসিনাসহ অন্য্যান্য আসামিদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও তার অঙ্গসংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে এবং তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

গত ২ অক্টোবর দল হিসেবে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ বিচার চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগটি করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে এ অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগে ‘গণহত্যার সরাসরি হুকুমদাতা’ হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং জাসদ (ইনু), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মেনন), তরিকত ফেডারেশন, জাতীয় পার্টি-জেপি, সাম্যবাদী দলসহ ১৪ দলের শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে ‘দল হিসেবে’ গণহত্যার অভিযোগ তদন্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। এই প্রেক্ষাপটে সরকারি প্রজ্ঞাপন অথবা আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগও এর জোট সঙ্গী দলগুলোও নিষিদ্ধের ঝুঁকিতে রয়েছে।

বেলকুচিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আহত যোদ্ধাদের মাঝে চেক বিতরণ

রেজাউল করিম স্টাফ রিপোর্টার,সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ৮:৫৫ অপরাহ্ণ
বেলকুচিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আহত যোদ্ধাদের মাঝে চেক বিতরণ

বেলকুচিতে জুলাই-২০২৪ গণ-অভ্যুত্থানে আহত গ ক্যাটাগির যোদ্ধাদের মাঝে চেক বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকালে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় হতে প্রেরিত বেলকুচি, এনায়েতপুর এলাকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আহত যোদ্ধাদের মধ্য থেকে “গ ক্যাটাগরির ২৮ জন আহত যোদ্ধাদের প্রত্যেককে এক লক্ষ টাকা করে চেক বিতরণ করা হয়।

বেলকুচি উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উক্ত চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া সুলতানা কেয়া।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার বেলকুচি সার্কেল মোঃ হুমায়ুন কবির।

এ-সময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা দেবাশীষ ঘোষ, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আশফিয়া সুলতানা, প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম, প্যানেল চেয়ারম্যান হাসমত আলী হাসু, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বেলকুচির আহবায়ক মুসা হাশেমী প্রমুখ।

ছাত্রশিবিরের কোরআন কুইজে বিজয়ী হিন্দু শিক্ষার্থী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ১:১৩ অপরাহ্ণ
ছাত্রশিবিরের কোরআন কুইজে বিজয়ী হিন্দু শিক্ষার্থী

ছাত্রশিবিরের আয়োজনে অনুষ্ঠিত পবিত্র কোরআনের ওপরে অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছেন গৌরব সরকার নামের এক হিন্দু শিক্ষার্থী। সোমবার (১২ মে) বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে এই কোরআন কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে কলেজ চত্বরে কুইজে বিজয়ী শিক্ষার্থী গৌরবসহ ৫০ শিক্ষার্থীর হাতে আল কোরআনের বাংলা অনুবাদ তুলে দেন ছাত্রশিবিরের নেতারা।

পরে সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতিবছর ১১ মে ছাত্রশিবির পবিত্র কোরআন দিবস পালন করে।

এ উপলক্ষ্যে পবিত্র কোরআন ও আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাস সম্পর্কিত প্রশ্নের ভিত্তিতে অনলাইনে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়৷

কুইজ প্রতিযোগিতায় ৪০০ অংশগ্রহণকারীর মধ্য থেকে ৫০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে গৌরব সরকার ৪০ নম্বরের পরীক্ষায় ৩৬ নম্বর পেয়ে প্রথম হন।

এ প্রসঙ্গে বিজয়ী গৌরব সরকার বলেন, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে ধর্মগ্রন্থগুলো সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে বেশ ভালো লাগে। সেই হিসেবে কোরআন নিয়েও পড়াশোনা করি। ছাত্রশিবিরের কুইজে অংশ নিয়ে বিজয়ী হতে পেরেছি এজন্য দারুণ লাগছে বলেও জানান তিনি।

বিষয়টি নিশ্চত করে সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শিক্ষার্থীদের পবিত্র কোরআন পাঠে আগ্রহী করতে কুইজের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে গৌরবের বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারটি দারুণ। তাকে পুরস্কৃত করতে পেরে আমাদের ভালো লেগেছে।

এছাড়াও সবারই জ্ঞান অর্জনের জন্য ধর্মের ঊর্ধ্বে এসে ধর্ম গ্রন্থগুলো পাঠ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সাম্য হত্যায় ঢাবি ভিসির ওপর দায় চাপানো সত্যকে আড়াল করার পাঁয়তারা: সারজিস

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ১:০৬ অপরাহ্ণ
সাম্য হত্যায় ঢাবি ভিসির ওপর দায় চাপানো সত্যকে আড়াল করার পাঁয়তারা: সারজিস

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাম্য হত্যাকাণ্ডে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং প্রক্টর স্যারের সঙ্গে অসভ্য আচরণের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

বুধবার (১৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় সামাজিক মাধ্যমে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি অভিযোগ তুলেছেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের ভাই সাম্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং প্রক্টর স্যারের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে এবং তাদের ওপরে দায় চাপানোর যে চেষ্টা করা হয়েছে সেটা স্রেফ অপচেষ্টা এবং সত্যকে আড়াল করার পাঁয়তারা।’

তিনি বলেন, ‘প্রথমত, ঘটনা ঘটেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শৃঙ্খলার দায়িত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের না। দ্বিতীয়ত, এই উদ্যানের মাদক সেবন, হেনস্থা, চাঁদাবাজি সহ যাবতীয় অপকর্ম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নয় বরং ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা কিংবা প্রভাব খাটানো বিভিন্ন সংগঠন এবং তাদের ছত্রছায়ায় থাকা বিভিন্ন সিন্ডিকেট করে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘উদ্যানের গেট এবং উদ্যানের ভিতরের অংশে ভাসমান দোকান দিয়ে বস্তি বানানো, মন্দিরের গেটের আশপাশে এবং পুরো ক্যাম্পাসে শতাধিক ভাসমান দোকান ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্টের অন্যতম কারণ। এই দোকানগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বসায়নি বরং ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা কোনো না কোনো সংগঠনের কিছু চাঁদাবাজ নেতাকর্মীরা বসিয়েছে। তারা এর ভাগ নেয় এবং প্রটেকশন দেয়।’

সারজিস বলেন, ‘এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেকেই সিন্ডিকেটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এসব অপকর্মে প্রশ্রয় দেয় এবং নিজের ভাগ বুঝে নেয়। কেউ ভালো উদ্দেশ্যে কাজ করতে চাইলে তাকে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা বিভিন্ন নেতাকর্মীর দ্বারা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।’

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এগুলো উচ্ছেদ করতে যায় তখন তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়, ক্ষমতার দাপট দেখানো হয়। উদ্যানের গেট যখন বন্ধ করা হলো তখন এই গেট খুলে যারা গেটের ভিতরে ও বাইরে পঞ্চাশের অধিক দোকান বসিয়েছে তারা এই হত্যার পরিবেশ সৃষ্টির পিছনে অন্যতম দায়ী।’

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল স্টেশন এবং শহিদ মিনারকে ব্যবহার করে যারা সেখানে শতাধিক ভাসমান দোকান বসিয়ে, চাঁদাবাজি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করছে তারা এমন হত্যাকাণ্ডের পরিবেশ সৃষ্টির পেছনে দায়ী।

যারা উদ্যানের ভিতরে মাদকের সিন্ডিকেট চালায়, মাদক সাপ্লাই দেয়, মাদক সেবনের পরিবেশ তৈরি করে এবং সেখান থেকে চাঁদাবাজি করে তারা এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে পরোক্ষভাবে দায়ী।’

‘একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি কখনো একটা শহরের মানুষের চা, পান, সিগারেট খাওয়ার, আড্ডা দেওয়ার কিংবা অবাধ মেলামেশার জায়গা হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য টিএসসির ভিতরের ক্যাফেটেরিয়ায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য যাবতীয় চা, কফি, নাস্তা কিংবা দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা থাকবে‌। কিন্তু সেই ক্যাফেটেরিয়াকে অকার্যকর করে টিএসসিতে প্রায় ৩০টা চা দোকানের আসর বসানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এগুলো বন্ধ করতে যাক, দেখবেন একদল ভণ্ড এবং সো-কল্ড লিবারেল সুশীল শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের বদহজম শুরু হয়েছে। তাদের চেতনা থেকে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের মতো লাভার নির্গমন শুরু হয়েছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে অনেকটাই অপ্রয়োজনীয় এই চা দোকানগুলোতে প্রতিদিন পুরো ঢাকা শহর থেকে হাজার হাজার ছেলে মেয়ে আসে। সঙ্গে কিছু বখাটে মাদকসেবীও আসে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করে। যারা টিএসসির এই দোকানগুলো রাখতে বাধ্য করেছে এবং যারা চাঁদাবাজি করছে তারাও এই হত্যাকাণ্ডের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য দায়ী।’

‘দোয়েল চত্বরের একপাশে প্রায় ৩০টার মতো বিভিন্ন কারুকার্যখচিত পণ্যের দোকান এবং অপরপাশে প্রায় ২০টা গাছের দোকান বসানো হয়েছে। দেখতে সুন্দর লাগলেও এখানেও প্রতিদিন হাজার হাজার খদ্দের ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে আসে এবং পুরো ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আনাগোনা বৃদ্ধি করে। যানজট সৃষ্টি করে। অবৈধভাবে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতি মাসে কারা এখান থেকে চাঁদাবাজি করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করে তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে হবে। তারাও এই হত্যাকাণ্ডের পরিবেশ সৃষ্টিতে পরোক্ষ ভাবে দায়ী ।’

‘আমার যে কোনো একজন ভাইয়ের হত্যা হওয়া তো দূরের কথা, তার গায়ে অনাকাঙ্ক্ষিত একটা আঘাত আমরা প্রত্যাশা করিনা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাদের কাজগুলো করতে দিব না, নিজেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য অবৈধ দোকান বসাবো, মাদকের ব্যবসা চালাবো, চাঁদাবাজি করব, বহিরাগত নিয়ে আসার যাবতীয় আয়োজন করব আর কোনো একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টরের পদত্যাগ চাইবো; এইসব দ্বিচারিতা বন্ধ করতে হবে।’

‘একটা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমি আমার মন মতো স্বাধীনতা চাইব, যা খুশি তাই করতে চাইব, ক্ষমতার অপব্যবহার করব আবার শৃঙ্খলাও প্রত্যাশা করব; এই দুইটা একসঙ্গে সম্ভব না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করবো- ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরের সকল ভাসমান দোকানকে উচ্ছেদ করতে হবে। টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুলভ মূল্যে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন মাফিক খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। কার্জন হল, মোকারম ভবন এবং মোতাহার ভবনে ক্যাফেটেরিয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। টিএসসিকে চা দোকানের আখড়া থেকে মুক্ত করতে হবে। ক্যাম্পাসে অবাধে সকল প্রকার যান চলাচল এবং বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’

সর্বশেষে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভাই সাম্যের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। সাম্যের মতো আর কোন ভাইকে যেন হারাতে না হয় কিংবা কারো গায়ে আঘাত না লাগে তার যথাযথ ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে অনতিবিলম্বে কার্যকর দেখতে চাই।’