বিদেশে বসেই চলছে দেশ বিরোধী চক্রান্ত
আ’লীগের নৈরাজ্য ঠেকাতে বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের কঠোর অবস্থান
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন হলেও থেমে নেই তাদের দেশ বিরোধী প্রপাগাণ্ডা। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিগ্রে দিতে রোববার (১০ নভেম্বর) কথিত কর্মসূচির ঘোষণা দেয় আ’লীগ। তাই বহুল বিতর্কিত আওয়ামী লীগ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দায়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রুখে দিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে রাজধানীর সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বাঙলা কলেজ ছাত্রদল সভাপতি ইব্রাহিম বিপ্লব ও সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন সোহাগের নেতৃত্বে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
শত শত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সক্রিয় উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে ওঠে রাজধানীর রাজপথ। এ-সময় ছাত্রদল নেতা ইব্রাহিম বিপ্লব ও বেলাল হোসেন সোহাগকে সম্মুখে রেখে বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকে নেতাকর্মীরা।
মূলত বাঙলা কলেজের সামনে থেকেই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। সেখান থেকে পাইকপাড়া, মিরপুর-১ গোল চত্ত্বর হয়ে আনসার ক্যাম্প, টেকনিক্যাল সহ আশপাশের এলাকাগুলোতে প্রদক্ষিণ করে ছাত্রদল। সবশেষে তারা টেকনিক্যাল মোড়ে অবস্থান নেয়। তখন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও আ’লীগ সহ বিতর্কিত সকলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকে ছাত্রদল। তারা টিম করে মিরপুর, গাবতলী, টেকনিক্যাল, কল্যানপুর সহ আশেপাশের সব যায়গায় পাহারারত অবস্থান গ্রহণ করে।
বস্তুত দীর্ঘদিনের স্বৈরাচারী শাসনামলে জর্জরিত বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি জনপদ। অবশেষে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে যুগান্তকারী আন্দোলন শুরু করে এদেশের ছাত্র-জনতা। এই আন্দোলনে তুমুল বিতর্কিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন হয় ইতিহাসের সর্বোচ্চ লজ্জাজনকভাবে। লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যায় শেখ হাসিনা। তবুও ভারতে বসেই একশ্রেণির চাটুকার, আবেগী আ’লীগকে বলির পাঠা হিসেবে ব্যবহার করছে শেখ হাসিনা। যারই ফলশ্রুতিতে আজকের কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ।
অবস্থা কর্মসূচিতে বাঙলা কলেজ ছাত্রদল সভাপতি ইব্রাহিম বিপ্লব বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে রচিত আছে এদেশের জনগণ সবসময়ই আ’লীগ নামক সন্ত্রাসী সংগঠনকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। স্বৈরাচার, গণহত্যাকারী পলাতক শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসরদের আরো একবার বাংলাদেশের জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে জুলাই-আগস্টের ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। তবে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার হাসিনা পালিয়ে গেলেও ভারতে অবস্থান করে হাসিনা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার পায়তারা করছে। তার রাজনীতি হচ্ছে লাশের রাজনীতি। তাকে বাংলাদেশের মাটিতে লাশের রাজনীতি আর করতে দিবে না জাতীয়তাবাদী শক্তি। সেই লক্ষ্যেই আমাদের আজকের অবস্থান।”
এ-সময় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন সোহাগ বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের একমাত্র আওয়ামী লীগই ঘৃণিত রাজনৈতিক দল। বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নৈরাজ্য চালিয়েছে সারাদেশব্যপী। বর্তমানে তাদের মাদার অব মাফিয়া ভারতে অবস্থান করেও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নৈরাজ্য করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাই আগামীর রাষ্ট্রনায়ক জননেতা তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায় আমরা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বদা রাজপথে আছি। প্রিয় মাতৃভূমিকে নিয়ে যত ষড়যন্ত্রই করা হোক না কেনো, আমরা তা প্রতিহত করবো ইনশাআল্লাহ।”
এদিকে বাঙলা কলেজের আবুল কাসেম হল সভাপতি কে এম ইব্রাহিম খলিল বলেন, “আওয়ামিলীগের দীর্ঘদিনের শোষণ, নিপীড়নে দেশের সাধারণ মানুষ তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। আ’লীগের লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী যেন সড়কে নেমে নৈরাজ্য বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্যই আজ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বাঙলা কলেজ ছাত্রদল। আগামীতে আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বা তাদের যেকোন সংগঠনের ব্যানারে যদি কেউ সড়কে নেমে কোনো প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করে, তাহলে ছাত্রদল তা কঠোরভাবে প্রতিহত করবে। কারণ এদেশে নতুন করে আর কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উৎপাত সহ্য করা হবে না।”
এদিনের বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচিতে শাখাটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি সিনিয়র সহ সভাপতি, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, হল সভাপতি-সেক্রেটারি, সহ-সভাপতি সহ অসংখ্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন