স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতন: বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া
সিরিয়ার বিদ্রোহী যোদ্ধাদের রাজধানী দামেস্ক দখলের মুখে দীর্ঘ স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়ে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আজ রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দেশ ছাড়েন তিনি।
বাশার আল-আসাদ টানা ২৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। এর আগে তার বাবা হাফিজ আল-আসাদ টানা ২৯ বছর সিরিয়া শাসন করেন। বাশার আল-আসাদের পালানোর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় ৫৩ বছরের আল-আসাদ পরিবারের শাসনের অবসান হলো। স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতন ঘিরে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। বিশ্বনেতাদের কেউ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন, কেউ উদ্বিগ্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে ক্ষমতা চলে যাওয়ার আশঙ্কায়।
সিরিয়ার চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি ও তার দল সিরিয়ার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন সামাজিকমাধ্যমে। এ বিষয়ে আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন বলে জানান তিনি।
ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান ব্রেনডান বয়েল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি পোস্টে আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, আসাদ সরকারকে উৎখাতের বিষয়টি সিরিয়ার মানুষের জন্য নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের বড় সুযোগ।
সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে যাওয়ায় উচ্ছ্বসিত আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থনের কথাও জানিয়েছে তারা। তালেবান সরকারের মতো সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোও দেশটিতে শরিয়া আইন জারি করবে বলে প্রত্যাশা তালেবানের এক সিনিয়র নেতার।
এদিকে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বাশার আল-আসাদ রাশিয়ার সমর্থন হারিয়ে তার দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, ‘আসাদ চলে গেছেন। তার রক্ষক, রাশিয়া, ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে তাকে আর রক্ষা করতে আগ্রহী ছিল না।’
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন আজ। স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের সাম্রাজ্য ভেঙে গেছে।
এদিকে ইরাক সরকারের মুখপাত্র বাসেম আল-আওয়াদি বলেছেন, তারা সিরিয়ার বিষয়টি বেশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে। তারা সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কাউকে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানান।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিকলি বলেন, ‘সিরিয়ার অধিকাংশ অঞ্চল এখন আল-কায়েদা এবং আইএসআইএল এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেছেন, ‘আমি শুরু থেকেই সিরিয়া পরিস্থিতির বিবর্তন অনুসরণ করছি। আমি দামেস্কে আমাদের দূতাবাস এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।’
ফিলিপাইনের পররাষ্ট্র বিভাগ জানায়, ‘আমরা সিরিয়ায় আমাদের ফিলিপিনোদের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং তাদের প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং দামেস্কে ফিলিপাইন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পরামর্শ দিচ্ছি।’
আপনার মতামত লিখুন