জাতিসংঘের আগারগাঁওস্থ কার্যালয় ঘেরাও, পাহাড়ে সেনা হত্যার বিচার ও সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি
ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম নাগারিকদের উপর উগ্র সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদ
সম্প্রতি কট্টর হিন্দুত্ববাদী, উগ্রপন্থী ভারতীয় সনাতনী নাগরিকেরা নির্লজ্জ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর। যা নিয়ে ভারত, বাংলাদেশ সহ বিশ্বব্যাপী চলছে তুমুল সমালোচনা। এমন ন্যাক্কারজনক হামলা, জুলুম, নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ অবস্থিত জাতিসংঘের কার্যালয় ঘেরাও করে সমাবেশ করেছে উর্দুভাষী বিহারীদের জাতীয় সংগঠন “বাংলাদেশী বিহারী পুনর্বাসন সংসদ (বিবিআরএ)।”
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে রাজধানী মিরপুর-১০, গোলচক্করের এমআরটি (মেট্রো রেল) ষ্টেশন হতে ভারতের নিপীড়িত মুসলমানদের রক্ষার দাবীতে পদযাত্রা কর্মসূচী পালন করেছে উর্দুভাষী সংগঠনটি।
পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশের শুরুতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেদেশ (ন্যাপ বাংলাদেশ) এর মহাসচিব জননেতা নেয়াজ আহমেদ খান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মওলানা মোঃ ফজলুল করিম কাসেমী। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিবিআরএ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ কাওসার পারভেজ ভুলু।
সকলের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী বলেন, “অবিলম্বে বাংলাদেশে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রয়ের কার্যক্রম নিষেদ্ধের দাবী জানান ও চট্টগ্রামের এডভোকেট আলিফ হত্যার উপযুক্ত শাস্তি দাবী করেন। হেফাজত নেতা ভারতের মুসলমানদেরকে উদ্দেশ্যে করে বলেন যে, আপনারা ভয় পাবেন না বাংলাদেশের জনগণ আপনাদের সাথে আছে।”
কর্মসূচীতে আরও বক্তব্য রাখেন বিহারী নেতা মোঃ জাহিদ, মোঃ শাহবান, কুতুবউদ্দিন শাহ, রাবেয়া বেগম, মোঃ মজিব, শেখ ইয়াসির পাপ্পু, টিটু ইসলাম, কোরবান আলী, মাহতাব ভাসানী, আসলাম বকশী, মোঃ সাব্বির, মোঃ ফয়সাল, আনিছুর রহমান বেচু, আসমা খাতুন প্রমুখ।
সভায় বক্তাগণ বলেন, “গত প্রায় তিন (০৩) দশক যাবৎ ইন্ডিয়ার নাগরিক সংখ্যা লঘু মুসলমানদের উপর সে দেশে উগ্রবাদি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর ক্রমাগত হামলা, অত্যাচার ও নিপীড়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। রাষ্ট্রিয় পৃষ্ট পোষকতায় মুসলমানদেরকে নিজ দেশেই বিদেশি বানাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছায়াতলে থেকেই প্রতিদিন বিভিন্ন অজুহাতে নিরিহ মুসলমানদেরকে নির্মম ভাবে হত্যা করছে চরমপন্থি আরএএসএস এর অনুশারী ও ভক্তরা।”
ভারতের পাশাপাশি চিনে নির্যাতিত মুসলিমদের কথা স্মরণ করে বক্তারা আরও বলেন, “চিন নিরবে উইঘুর মুসলমানদের বংশবিলিন করছে ও ইন্ডিয়া এক আল্লাহ বিশ্বাসে বিপরিতে মুসলমানদেরকে “জয় শ্রীরাম” বলতে বাধ্য করছে। আমেরিকার পৃষ্ট-পোষকতায় ইসরাইল ফিলিস্থিন মুসলমানদের বেঁচে থাকার অধিকার কেরে নিয়ে গাজায় ধ্বংসযোগ্য চালাচ্ছে। সর্বত্রই আজ মানবাধিকার ভুলণ্ঠিত। বাংলাদেশের সিমান্ত ও পাহাড়ী জেলাগুলো ইন্ডিয়ান থাবায় গত তিপান্ন বছর যাবৎ রক্তাত হচ্ছে।”
এদিকে সমাবেশে ইন্ডিয়ান মুসলমানদের রক্ষায় ভারতে জাতিসংঘ শান্তিবাহিনী মোতায়েনের দাবী জানিয়েছেন ন্যাপ বাংলাদেশের মহাসচিব নেয়াজ আহমদ খান। বাংলাদেশের সীমান্তেও পাহাড়ী এলাকায় সেনা সদস্য হত্যায় ইন্ডিয়াকে দায়ী করে ন্যাপ নেতা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়েরের দাবী জানান।
সভায় বক্তাগণ অভিযোগ করে বলেন, “বাংলাদেশে শান্তি প্রিয় জনগণ ঐ সকল নির্মম ও মর্মান্তিক ঘটনায় ব্যথিত ও উদ্ভিন্ন। দেশে দেশে প্রকাশ্যে ও গোপনে মুসলমান ও তাদের প্রার্থনা কেন্দ্র মসজিদ ধ্বংসের উন্মাদোনা দেখে সুস্থ্য চিন্তার মানুষেরা বিচলিত। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ও আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার দিবষ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশী বিহারী পূণর্বাসন সংসদ (বিবিআরএ) ইন্ডিয়ায় মুসলিম নির্যাতন বন্ধে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকাস্থ মিরপুর-১০ গোলচক্কর প্রধান সড়ক হতে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রার মাধ্যমে বিহারীরা জাতিসংঘ কার্যালয় ঘেরাও করে।”
আপনার মতামত লিখুন