খুঁজুন
সোমবার, ২ জুন, ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ক্ষমায় রেকর্ড গড়লেন বাইডেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:৫৬ অপরাহ্ণ
ক্ষমায় রেকর্ড গড়লেন বাইডেন

নিজের ছেলেকে নিঃশর্ত ক্ষমা করেই ক্ষ্যান্ত দিলেন না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ২০ জানুয়ারি ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তিনি আরও অনেক অপরাধীর সাজা মওকুফ করলেন। আর এসব ক্ষমা ঘোষণা করে তিনি সৃষ্টি করেছেন নতুন রেকর্ড।তার আগে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কোনও প্রেসিডেন্ট এক দিনে এতো সংখ্যক অপরাধীর সাজা মওকুফ করেননি।

বিবিসি জানিয়েছে, বাইডেন বৃহস্পতিবার অহিংস অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ৩৯ জনের সাজা মওকুফ করেছেন। এছাড়া দেড় হাজার অপরাধীর সাজার মেয়াদ কমিয়ে দিয়েছেন।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো প্রেসিডেন্টের একদিনে এতোজনের সাজা মওকুফের ঘটনা এটাই প্রথম।

এর আগে গত ১ ডিসেম্বর বাইডেন তার ছেলে হান্টার বাইডেনকে নিঃশর্ত ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন।

গত জুনে অবৈধ অস্ত্র রাখা ও আয়কর ফাঁকির মামলায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন হান্টার বাইডেন। এরপর সেপ্টেম্বরে তার সাজা ঘোষণা করা হয়।

ছেলেকে ক্ষমার জন্য বাইডেনের সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলের নেতারা। কারণ, বাইডেন বরাবরই বলেছিলেন, তিনি তার ছেলেকে ক্ষমা করবেন না।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করে তিনি হান্টারকে ক্ষমা করেন। যাকে তিনি তার ‘মন পরিবর্তন’ করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন।

হান্টারের সাজার ঘটনাকে তিনি সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে আদালতের ব্যর্থতা বলেও মন্তব্য করেন।

এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, “হান্টারের মামলার তথ্য যাচাই করলে যে কেউ বুঝতে পারবেন, শুধু আমার ছেলে হওয়ার কারণে তাকে টার্গেট করা হয়েছে। আর এটা ঠিক হয়নি।”

দুটি ফৌজদারি অপরাধে হান্টার বাইডেনের কারাদণ্ড হয়। গত সেপ্টেম্বরে কর ফাঁকির মামলায় হান্টার বাইডেনের ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়। এ ছাড়া অবৈধ অস্ত্র সংক্রান্ত আরেক মামলায় তার ২৫ বছরের কারাদণ্ড হয়।

বৃহস্পতিবার অপরাধীদের ক্ষমার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার সময় বাইডেন বলেন, যাদের ক্ষমা করা হয়েছে তারা “সফল পুনর্বাসনের প্রমাণ দেখিয়েছেন এবং সমাজকে আরও শক্তিশালী ও নিরাপদ করার প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছেন।”

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টের “যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য শাস্তি মওকুফ ও ক্ষমার ক্ষমতা” রয়েছে। তবে তা অভিশংসনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

হোয়াইট হাউস ৩৯ জনের একটি ক্ষমার তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, এরা “অ-হিংস অপরাধ” বা “অ-হিংস মাদক অপরাধ” করেছেন। তবে তাদের নির্দিষ্ট অপরাধের বিবরণ উল্লেখ করা হয়নি।

যাদের ক্ষমা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আগে থেকেই কারাগার থেকে মুক্ত ছিলেন। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন সাবেক সেনাসদস্য। কেউ কেউ তাদের সমাজের নেতা বা সামাজিক আন্দোলনের কর্মী হিসাবেও পরিচিতি লাভ করেছেন।

যে দেড় হাজারের সাজা কমানো হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই কোভিড-১৯ মহামারীর সময় থেকে গৃহবন্দিত্বে ছিলেন। এছাড়া পুরোনো আইন অনুযায়ী যাদের বেশি দীর্ঘ সাজা দেওয়া হয়েছিল, এমন অনেকের সাজাও কামানো হয়েছে।

বাইডেন বলেন, “বর্তমানের আইন, নীতি ও চর্চার অধীন যদি এসব ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হতো, তবে তারা আরও কম শাস্তি পেতেন।”

বাইডেন আরও বলেন, “যাদের সাজা কমানো হয়েছে, তারা নিজেদের দ্বিতীয় সুযোগ পাওয়ার যোগ্য হিসাবে প্রমাণ করেছেন। আসন্ন সপ্তাহগুলোতে আরও ক্ষমার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

তার ছেলে হান্টারকে ক্ষমা ঘোষণার পর গত সপ্তাহে সাজা পাওয়া বহু অপরাধী বাইডেনের কাছে এ ধরনের ক্ষমা পাওয়ার দাবি জানান। হোয়াইট হাউস তাদের দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে।

বাইডেন জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণকারী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিশোধ থেকে রক্ষা করতে তার বিশিষ্ট সমালোচকদের জন্য অগ্রিম ক্ষমা ঘোষণার বিষয়টিও বিবেচনা করেছেন।

তবে এর আগের আর কোনও প্রেসিডেন্টের এমন ক্ষমার নজির নেই বলে বাইডেন এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন বলে জানা গেছে। এই ধরনের ক্ষমা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সম্পূর্ন নতুন এক নজির সৃষ্টি করবে।

আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণ করবেন।

ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করার প্রথম দিনেই ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল দাঙ্গায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ক্ষমা করে দেবেন।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের মতে, ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ২৩৭টি ক্ষমার আদেশ জারি করেছিলেন। এর মধ্যে ১৪৩টি ছিল পূর্ণ ক্ষমা এবং ৯৪টি সাজা কমানোর আদেশ।

ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার আগমুহূর্তে অনেক ক্ষমার আদেশ জারি করা হয়।

বেলকুচিতে পূবালী ব্যাংকের ২৩২ তম উপশাখার উদ্বোধন

রেজাউল করিম স্টাফ রিপোর্টার,সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১০:৫৬ অপরাহ্ণ
বেলকুচিতে পূবালী ব্যাংকের ২৩২ তম উপশাখার উদ্বোধন

গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করতে এবং সর্বস্তরের মানুষের দোরগোড়ায় আধুনিক ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে পূবালী ব্যাংক পিএলসি-এর ২৩২ তম উপশাখার শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।

রবিবার (১ জুন) সকালে উপজেলার চালা ওয়াবদা বাঁধ সংলগ্ন আলহাজ্ব আবুল হাসেম সরকার মার্কেটের ২য় তলায় অবস্থিত নতুন উপ-শাখা প্রাঙ্গণে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পূবালী ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও বগুড়া অঞ্চলের অঞ্চল প্রধান এ এস এম রায়হান শামীম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবু জাফর মো: রকিবুল্লাহ, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পূবালী ব্যাংক পিএলসি খামারগ্রাম শাখার ব্যবস্থাপক মো: মাহবুব আলম, সঞ্চালনা করেন বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তা মো: শওকত রহমান।

পূবালী ব্যাংকের নতুন এই উপশাখাটি খামারগ্রাম শাখার অধীনে পরিচালিত হবে। এর মাধ্যমে বেলকুচিসহ আশেপাশের অঞ্চলের সাধারণ জনগণ, ব্যবসায়ী, কৃষক ও চাকরিজীবীরা সহজে ও দ্রুত আধুনিক ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এতে স্থানীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বেলকুচি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো: রেজাউল করিম, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তাঁদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে ব্যাংকের সংযোগকে আরও দৃঢ় করে তোলে। পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, নতুন এই উপশাখার মাধ্যমে এখন থেকে সঞ্চয় ও চলতি হিসাব, ক্ষুদ্রঋণ, মোবাইল ও কার্ড ব্যাংকিং, এবং এটিএমসহ অন্যান্য আধুনিক সেবা সহজে পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে পুবালী ব্যাংকের ৫০৮টি শাখা এবং ৬১৪টি এটিএম সার্ভিস রয়েছে, যা সারা দেশে একটি বিস্তৃত ও গতিশীল আর্থিক সেবাব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। এই উপশাখা চালুর মাধ্যমে পূবালী ব্যাংক আবারও প্রমাণ করল যে, এটি কেবল একটি ব্যাংক নয় বরং দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি ও উন্নয়নের একটি নির্ভরযোগ্য সঙ্গী।

নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই: জোনায়েদ সাকি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১০:১৬ অপরাহ্ণ
নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই: জোনায়েদ সাকি

নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। রবিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, বিচারের বিষয়ে মানুষ দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায়। সংস্কার, নির্বাচন এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এগুলো পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন- এগুলো এক সূত্রে গাথা।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংস্কারগুলো দূরত্ব ও অনাস্থা দেশকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে। নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই। যদি ডিসেম্বরে নির্বাচন না হয় তাহলে সেটার ব্যাখ্যা জনগণের সামনে হাজির করতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ না দিলে সংস্কারের অনেক বিষয় সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। সংস্কারের অনেকগুলো বিষয়ে ঐক্যমত্য আছে আবার কিছু বিষয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে ঐক্যমত তৈরি করা এবং নানা বিষয় সংস্কারও সম্ভব। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকার নিজেও নানা পক্ষপাত দেখাচ্ছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও জরুরি।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, যারা শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে সাহায্য করেছিলেন, এখন তারা নতুন বন্দোবস্ত করে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ফ্যাসিজমের থেকে যাওয়া শিকড়ে পানি ঢেলে তারা আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাচ্ছেন।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্যে ফাটল ধরেছে। কোনো অভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতারা এতটা বিতর্কিত হননি, যতটা এখন হচ্ছেন। তরুণরা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজে জড়িত হয়ে পড়েছেন, যা লজ্জাজনক।

এবি পার্টির সভাপতি মজিবর রহমান মঞ্জু বলেন, বিএনপিকে বলেছিলাম জাতীয় অধিকারের প্রশ্নে আপনারা ঐক্য গড়ে তুলুন। সরকার আমাদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারে নাই, রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে পারে নাই। আমাদের ঐতিহাসিক সুযোগ আমরা যেন নষ্ট না করি।

আদালতের নির্দেশনা পেলে জামায়াতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: ইসি সচিব

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ণ
আদালতের নির্দেশনা পেলে জামায়াতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: ইসি সচিব

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, আদালতের নির্দেশনা কমিশনে পৌঁছালে জামায়াতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আজ রবিবার রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।

পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, আদালতের নির্দেশনা ইসিতে পৌঁছালে জামায়াতের নিবন্ধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে সাময়িক নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরের বছর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন।

রিটে জামায়াতের তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নির্বাচন কমিশনসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়। তারা জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের আর্জি জানান।

এ রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক (পরে প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. আবদুল হাইয়ের (বর্তমানে অবসর) হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রুল জারি করেন। নিবন্ধন নিয়ে রুল জারির পর ওই বছরের ডিসেম্বরে একবার, ২০১০ সালের জুলাই ও নভেম্বরে দু’বার এবং ২০১২ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দু’বার তারা গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয় জামায়াত। এসব সংশোধনীতে দলের নাম ‘জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয়।

২০১৩ সালের ১২ জুন ওই রুলের শুনানি শেষ হয়। একই বছরের ১ আগস্ট জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন (বর্তমানে অবসর), বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম (পরে আপিল বিভাগের বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন) ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের (১৯ নভেম্বর পদত্যাগ করেন) সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ।

সে সময় সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বলেন, এ নিবন্ধন দেওয়া আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত। একইসঙ্গে আদালত জামায়াতে ইসলামীকে আপিল করারও অনুমোদন দিয়ে দেন।

তবে এ রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন একই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। পরে একই বছরের ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।

এরপর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে টানা চতুর্থ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। তবে গত বছর জুলাই মাস থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে ছাত্র-জনতা সরকার পতনের দাবি তোলে। এর মধ্যে ১ আগস্ট সরকার অঙ্গসংগঠনসহ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের আবেদন বাতিলের উদ্যোগ নেয়।